The Dhaka Times Desk গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়ে কবর দেওয়ার এক বছর পর বাড়ির দরজায় এসে হাজির হলেন ৬২ বছর বয়সি ওয়ালুয়ো।
এই বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোনেশিয়াতে। দেশটির জোগিয়াকার্তার সুরোপুত্রান পানেমবাহান গ্রামের বাসিন্দা ওয়ালুয়ো। তিনি এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান এক বছর আগে। এদিকে তাকে জীবিত দেখতে পেয়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েন তার পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনাটি গত বছরের। রাস্তায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন ওয়ালুয়ো। প্রতিদিনের মতো সেদিনও কাজে বের হয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ করে তার স্ত্রী আলিম এস্কাতিনার নিকটে পুলিশের ফোন আসে যে, গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ওয়ালুয়ো। তাকে আহত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য এবং ওয়ালুয়োর কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন ছুটে যান হাসপাতালে। মারাত্মক আহত হওয়ায় কিছুদিন পরেই মৃত্যু হয় ওয়ালুয়োর।
ইন্দোনেশিয়ার দেতিক পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়ালুয়োর মেয়ে আন্তি রিসতান্তি বলেছেন, ‘হাসপাতালে তার বাবা কোমাতে ছিলেন। আত্মীয় স্বজনরা তাকে দেখতেও গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ৫ মে তিনি মারা যান। তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অনেক লোকজনও এসেছিল। আত্মীয়স্বজনরাও সেদিন এসেছিলেন।’
তার মৃত্যুর পর সবকিছুই আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে ঠিকঠাকই চলছিলো। তবে বিপত্তি ঘটলো কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করে বাড়িতে এসে হাজির হলেন এক বছর আগে মৃত্যুবরণ করা ওয়ালুয়ো! তাকে দেখে পরিবারের সদস্যদের সত্যিই খুশি হওয়ার কথা থাকলেও উল্টো সবাই ভয়ে অস্থির হয়ে পড়লেন। এক বছর আগে যাকে কবর দেওয়া হলো, সেই ব্যক্তি আবার ফিরলেন কীভাবে? এই প্রশ্ন পরিবারের সবার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাদের সন্দেহ হয় তিনিই আসলে ওয়ালুয়ো নাকি অন্য কেও?
ওয়ালুয়োকে নিশ্চিত করার জন্য কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো সব পরীক্ষাতেই তিনি উতরে যান! তার শরীরে একটি দাগ ছিল সেটিও দেখা যায়। এমনকি আত্মীয় স্বজন সবার নামই তিনি ঠিকঠাক বলছেন। তার কয়েকটি দাঁত ছিল না সেটিও হুবহু মিলে গেছে!
ওয়ালুয়ো জানিয়েছেন, তিনি এতোদিন সেমারাং নামক স্থানে ছিলেন। মোবাইল ফোন না থাকার কারণে তিনি পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেননি। এছাড়া তাকে ভেবে ভুল করে অন্যজনকে কবর দেওয়ার বিষয়টিও তার জানা ছিলো না।
ওয়ালুয়ো ফিরে আসার কারণে তার পরিবার খুশি হয়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তার সঙ্গে সঙ্গে উঠেছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন। কবর দেওয়ার আগে পরিবারের লোকজন হতে শুরু করে আত্মীয়স্বজন কেওই কেনো বুঝতে পারলেন না যে এটি ওয়ালুয়ো নয়? এছাড়া পুলিশ কেনো ওয়ালুয়োর বাড়িতেই ফোন করলো? উত্তরগুলো এখনও রহস্যময় রয়ে গেছে।
ওয়ালুয়ো ফেরার পর তার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তে আসে পুলিশ। যাওয়ার সময় তারা ওয়ালুয়োর ডেথ সার্টিফিকেটটি ফিরিয়ে নিয়ে যান। তবে তার আগে সেটির সঙ্গে ছবি তোলে ওয়ালুয়ো।
ফিরে আসার পর এখন ওয়ালুয়োকে তার পরিবারের সঙ্গে থাকতে হলে বেশ কয়েকটি কাজ নতুন করে করতে হবে। যেমন তাকে নতুন করে দেশের নাগরিক হিসেবে ডাটাবেজে নাম উঠাতে হবে। তাকে নতুন আইডি কার্ডের জন্যও আবেদন করতে হবে। যদিও তার এই ঘটনার কারণে সরকার তার আনুসাঙ্গিক সকল ফি মওকুফ করেছে।