দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পরে না, কিন্তু যখন ধরা পরে তখন নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কঠিন হয়ে পরে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে কয়েকটি পদ্ধতিতে তা নিরাময় করা সম্ভব। আজ আমরা জানবো ক্যান্সারের কারণ এবং তা নিরাময়ের পদ্ধতিগুলো কি কি। সাধারণত ২০০ প্রকারেরও বেশি ক্যান্সার রয়েছে। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং এদের চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা।
কেন ক্যান্সার হয় সেটা এখনও সুনিশ্চিত ভাবে আবিষ্কার হয়নি। তবে সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় যত মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের শতকরা প্রায় ৭০ ভাগই ৬০ বছরের ওপরে। সাধারণত বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে। কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
খাবার এবং অভ্যাসের সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে গবেষকরা। যেমন, ধুমপান বা মদ্যপানের সাথে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালীর এবং যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ রয়েছে। তেমনই ভাবে পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সাথেও ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। যারা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম কম করে তাদের মধ্যেও ক্যান্সারের প্রবণতাটা বেশি।
ক্যান্সারের সাথে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কারণে পরিবারের কারো যদি ক্যান্সার হওয়ার ঘটনা থাকে তাহলে অন্যদের বা পরবর্তী প্রজন্মের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। যেমন ব্লাড ক্যান্সার।
রোদে বেশিক্ষণ থাকার কারণে ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। রোদের ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়তার কারণেও বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হোয়ার ঝুঁকি থাকে। আবার স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বিভিন্ন জীবাণু থাকে তাই সেই পরিবেশেও ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এছাড়া ক্যান্সারের অনেক বড় একটা সম্পর্ক রয়েছে পেশাগত বা বসবাসকৃত পরিবেশের সাথে। যেমন, মেসোথেলিওমিয়া-তে (এক ধরনের দূর্লভ ক্যান্সার যা ফুসফুসের চারপাশ এবং পেটের দিকের কোষগুলো আক্রান্ত করে) আক্রান্তদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই এসবেস্টস ধাতুর সংস্পর্শে আসার কারণে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। সাধারণত জাহাজ তৈরির শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের এই ধাতুর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাটা বেশি থাকে। এই কারণেই অনেক দেশে এই ধাতুর ব্যবহার নিষিদ্ধ। রঙের কারখানা, রাবার বা গ্যাসের কাজে যারা নিয়োজিত তারা এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে মুত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। পরবর্তীতে অনেক দেশে এসব রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অস্ত্রোপচার অর্থাৎ কেটে ফেলা। যে জায়গাটি ক্যান্সার আক্রান্ত হয় সেই ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো এবং তার আশেপাশের কোষগুলোকে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে কেটে সরিয়ে ফেলা হয়। ক্যান্সার যদি অল্প একটু জায়গা জুড়ে থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে এ ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে ব্যাপক হারে ক্যান্সার ছড়িয়ে পরলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় না।
সাধারনত নিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অংশবিশেষে অর্থাৎ যেখানে ক্যান্সারের কোষ আক্রামণ করেছে সেখানে তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে সেই জায়গার কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
সাধারণত ক্যান্সারের মাত্রা বেশি হলে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই ব্যবস্থায় ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে অ্যান্টি-ক্যান্সার (সাইটোটক্সিক) ড্রাগস বা ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ৫০টিরও বেশি ধরনের কেমিওথেরাপি ওষুধ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল হিসেবে খেতে হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ওষুধগুলোকে স্যালাইনের সাথে বা অন্য কোনভাবে সরাসরি রক্তে পুশ করে দেয়া হয়। রক্তের সাথে মিশে এই ওষুধগুলো শরীরের ক্যান্সারের কোষগুলোকে আক্রমণ করে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
শরীরের বৃদ্ধির সাথে হরমোনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। শরীরের কিছু হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করার মাধ্যমে এই চিকিৎসা করা হয়। কোন কোন ক্যান্সার এই হরমোনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে হরমোন থেরাপি ব্যবহৃত হয়।
ক্যান্সারের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের মানসিক চিকিৎসার ব্যাপারে এখন জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সাধারণত ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পরেন। এই কারণে তাদের অবস্থা আরোও বেশি গুরুতর হয়ে যায়। ফলে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সেবা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠন কাজও করে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্তদের একটি গ্রুপ গঠন করা। যেখানে বিভিন্ন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে পারেন। এর পাশাপাশি মানসিক স্বস্তির জন্য কেউ যদি ধর্মীয় বা সামাজিক কোন কাজে নিয়োজিত হতে চান সে ব্যাপারেও তাদেরকে উৎসাহ দেয়া হয়।
This post was last modified on জুন ৮, ২০২৩ 4:36 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই প্রথমবারের মতো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করতে চলেছেন মামনুন ইমন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি সংস্থায় কাজ করতে হলে কর্মীদের মেনে চলতে হয় বিদ্ঘুটে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি শরীরচর্চা করলে শরীর ফিট থাকে। ওজনও তখন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের বাজারে ফিলিপস, ট্রান্সফরমার, মনস্টার এবং এয়ারমার্স ব্র্যান্ডের এআইওটি (আর্টিফিশিয়াল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৩ সালে ‘গদর’-এর সিক্যুয়েল দিয়ে বক্স অফিসে ঝড়ো ইনিংস শুরু…