দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘদিন ধরে যে বিষয়টি নিয়ে জট পাকিয়ে আছে, সেই বিষয়টির এবার জট খুলতে চলেছে। সেই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল রহস্যের জট এবার সত্যিই খুলতে চলেছে!
আমরা সকলেই জানি বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে কম রহস্য সৃষ্টি হয়নি। এক রহস্যময় মৃত্যুপুরীর নাম হলো এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। ৭৫টি বিমান ও প্রায় ১০০টির কাছাকাছি জাহাজ বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে প্রবেশের পর পরই নিরুদ্দেশ হয়েছে অর্থাৎ তার কোনো সন্ধান মেলেনি। এই রহস্যের মৃত্যুপুরী ‘ডেভিলস ট্রায়াঙ্গল’ নামে অধিক পরিচিত। এই রহস্য জন্ম দিয়েছে বহু প্রশ্নের। সেইসঙ্গে আশঙ্কা, ভয় ও চক্রান্তেরও।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এমন একটি রহস্য যা নিয়ে ভাবতে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ হতে চিন্তাশীল ব্যক্তিদেরও। তবে সমাধান সূত্রে পৌঁছাতে পারেননি কেওই। অবশেষে সেই রহস্যেরই জট খুললো বলে মনে করছেন অনেকেই।
বারমুডা আটলান্টিক মহাসাগরের উপর ৫ লক্ষ কিলোমিটার বর্গক্ষেত্রের একটি এলাকা যা ফ্লোরিডা, পুয়ের্তো রিকো ও বারমুডার মধ্যে অবস্থিত। জানা গেছে, এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ১০০ বছরে ১০০০ জন মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে।
বর্তমানে ‘চ্যানেল ৫’ তাদের ‘দ্যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এনিগমা’ তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে সম্ভবত এই রহস্যজনকভাবে বিমান বা জাহাজ উধাও হয়ে যাওয়ার পিছনে রয়েছে ১০০ ফুট উচ্চতার ‘রাফ ওয়েভ’ কিংবা ভয়ঙ্কর ঢেউ। তবে কী এই ‘রাফ ওয়েভটি’?
বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয়, অত্যন্ত ঝোড়ো ঢেউ এটি। এই ঢেউগুলি মূলত ১০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উপরে উঠতে পারে। ১৯৯৭ সালে প্রথম একটি স্যাটেলাইটের সাহায্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সমুদ্র উপকুলে এই ভয়ঙ্কর ঢেউ লক্ষ্য করা গেছে। এই ঢেউগুলি সম্পর্কে পূর্বে থেকে কোনও আভাসও পাওয়া যায় না।
জানা যায়, চ্যানেল ৫-এর তথ্যচিত্রে বিজ্ঞানীরা আভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের সাহায্যে কৃত্রিম উপায়ে একটি ভয়ঙ্কর ঢেউ তৈরি করেন।
জানা গেছে, সাদাম্পটনের বিজ্ঞানীরা ‘ইউএসএস সাইক্লোপস’ নামে একটি জাহাজ তৈরি করেন যা ১৯১৮ সালে ৩০০ জনকে নিয়ে উধাও হয়। জাহাজটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জ্বালানি সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা হয়। ১৯১৮ সালে বাহিয়া থেকে বাল্টিমোর যাওয়ার সময় এই জাহাজটি উধাও হয়ে যায় । এই জাহাজটির ভগ্নাবশেষ কিংবা ৩০৬ জনের কোনও চিহ্নই পাওয়া যায়নি।
সংবাদ মাধ্যমকে সমুদ্র বিজ্ঞানী সাইমন বক্সবল বলেছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর ৩টি ভিন্ন জায়গা হতে ৩টি ভয়ঙ্কর ঝড় আশার কারণে ওইসময় ভয়ঙ্কর ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। এইরকম ঢেউই জাহাজটিকে টুকরো টুকরো করেও দিয়ে থাকতে পারে।
বিজ্ঞানী ড. ক্রসজেলনেইকি বলেছেন, এমন নয় যে, শুধুমাত্র বারমুডা ট্রায়াঙ্গলেই এই রকম ঘটনা ঘটেছে। পৃথিবীর বহু জায়গাতেই এই রকম ঘটনার ইতিহাস পাওয়া যায়। তবে তাদের ক্ষেত্রে উত্তর মিললেও বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্যের সমাধান হয়নি কোনো দিন।
দ্যা ন্যাশনাল ওসিয়ানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিজ্ঞানী ড. ক্রসজেলনেইকির সঙ্গে একমত হয়ে জানিয়েছেন, এই ট্রায়াঙ্গলের সঙ্গে অন্যান্য জায়গার কোনও রকম তফাৎ নেই। একই ধরনের বাতাস এবং সমুদ্রের অবস্থান রয়েছে এইসব স্থানে।