দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুদ্ধ মানুষকে বদলে দেয়। মানুষের ঠিকানা বদলে দেয়। যেমন ঘটেছিল কোরিয়ার এক পরিবারের ক্ষেত্রে। যুদ্ধের কারণে ৬৮ বছর পর দেখা হলো মা-ছেলের!
কোরিয়ার যুদ্ধ দেশটির পাশাপাশি পৃথক করে দিয়েছিল এক মা-ছেলেকেও। লি কেউম সেওমের ক্ষেত্রেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। ছেলের সঙ্গে তাঁর শেষ দেখা হয়েছিলো ৬৮ বছর আগে। ছেলে সাং চোলে তখন মাত্র চার বছরের শিশু। দুই কোরিয়া ভাগ হয়ে যাওয়ার পর পরিবার নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় স্বামী এবং ছেলেকে হারিয়ে ফেলেন লি। তারও একটা করুণ গল্প রয়েছে। ছোট্ট মেয়েটি দুধ খেতে চাইলে লি তাকে নিয়ে আড়ালে চলে যান। সেই যে আড়াল এরপর হতে ছেলে ও স্বামীর মুখ দেখেন নি তিনি। দু’জন দুই দেশে চলে যান। ৬৮ বছর পর সেই ছেলের মুখ দেখলেন মা।
সময় তো একেবারে কম নয়, ৬৮ বছর পর তাদের দেখা। ৪ বছরের ছেলে এখন বাহাত্তুর বছরের বৃদ্ধ। তার চুলে পাক ধরেছে। কুঁচকেছে চামড়াও। একে অপরকে জড়িয়ে ধরলেন মা ও ছেলে। বাঁধ ভাঙলো যেনো চোখের জল।
জানা গেছে, কোরীয় যুদ্ধে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এই পরিবারটি। স্বামী-ছেলেকে নিয়ে দেশের অন্য প্রান্তে পাড়ি দেন লি কেউম সেওম। মাঝপথেই স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান। মেয়েকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়া চলে যান লি। অপরদিকে ছেলেকে নিয়ে উত্তরেই থেকে যান তার স্বামী। এতো বছর পর আবারও মুখোমুখি মা-ছেলে। লি এই প্রথম মুখ দেখলেন পুত্রবধূর।
দু’দেশের মধ্যে বেসামরিক ক্ষেত্রে একটি হোটেলে এমনই একটি আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয় সম্প্রতি। রেডক্রস ও সরকারি সংবাদমাধ্যম কেবিএস-এর উদ্যোগে মিলিত হয়েছিল কোরীয় যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ৮৯টি পরিবার। আবেদন জমা পড়েছিল প্রায় ৫৭ হাজার। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন-জায়ে-ইন এবং উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন-এর ছাড়পত্রে পুনর্মিলনের সুযোগ পেয়েছেন একশোরও কম পরিবার। এদের বেশির ভাগই এখন আশির কোঠায়।
জানা গেছে, মায়ের জন্য বাবার একটি ছবি এনেছিলেন স্যাং চোল। বিচ্ছেদের পর আর দেখা হয়নি দু’জনের মধ্যে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছেলের কাছেই ছিলেন লি-এর স্বামী। বৃদ্ধা বলেছেন, ‘যুদ্ধে পরিবারের আর কেও বাঁচেনি। রোজ প্রার্থনা করতাম, ছেলেটা যেনো দীর্ঘজীবী হয়। ওকে একবার দেখার জন্যই বোধহয় বেঁচেছিলাম এতোদিন।’
দেখা করার পূর্বে লি ভেবে পাচ্ছিলেন না, কী বলবেন তার ছেলেকে। কোথা থেকে শুরু করবেন, কোথায় শেষ করবেন। ‘কতো কথা জমে রয়েছে। সব তো বলাই হলো না,’ বলে চলেন বৃদ্ধা, ‘শেষে ওর বাবার কথায় জিজ্ঞাসা করলাম। পুরনো বাড়ির কথাও…।’
দু’দেশের সরকারের পক্ষ হতেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল যে, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে যেনো কথা না হয়। সীমান্তে পৌঁছানোর পরে সবার স্বাস্থ্যও পরীক্ষা হয়। তার পরে ওই হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। কারও দেখা হলো স্বামী, স্ত্রী-র সঙ্গে, আবার কেও ছুঁতে পেলেন ভাইবোনকে। সাক্ষাৎ শেষে সবার এক সঙ্গে ছবি তোলা হয়।
আন সেউং চুন দাদার সঙ্গে দেখা করার জন্য আর্জি জানান। আবেদন মঞ্জুর হলো কিন্তু জানতে পারলেন দাদা বেঁচে নেই। কান্নাভেজা গলায় আন সেউং বলেছেন, ‘ভাইপোর সঙ্গে দেখা হলো। অন্তত পরিবারের একটা সলতে তো বেঁচে রয়েছে!’
This post was last modified on আগস্ট ২৪, ২০১৮ 1:02 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…