গবেষণা রিপোর্ট: স্মার্টফোনের কারণে মানসিকভাবে ভঙ্গুর প্রজন্ম গড়ে উঠছে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময় স্মার্টফোনের ব্যবহার একদিকে মানুষের যেমন নানা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করেছে, অপরদিকে স্মার্টফোনের কারণে মানসিকভাবে ভঙ্গুর প্রজন্ম গড়ে উঠছে!

বর্তমানে স্মার্টফোন অনেকের কাছেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন প্রায় সবার কাছেই খুবই প্রয়োজনীয়। অনেক উপকারেও আসে এই স্মার্টফোন। তবে নতুন প্রজন্মের ওপর এর প্রভাব খুব একটা ইতিবাচক নয় বলে মনে করা হচ্ছে। বরং এটি নেতিবাচক। সান ডিয়াগো স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জ্যাঁ টুয়েঞ্জ মনে করেন যে, স্মার্টফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অসুখী, অসন্তুষ্ট এক ‘আইজেনারেশন’ তৈরি করতে ভূমিকা রাখছে।

আইজেনারেশন বলতে সংক্ষেপে তিনি তাদের আইজেন বলছেন। তারা কারা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই মনোবিজ্ঞানী বলেছেন যে, ১৯৯৫ সাল ও এর পরে জন্ম নেওয়া প্রজন্মকে বলা যায় আইজেন প্রজন্ম। এই প্রজন্ম তাদের কিশোর বয়সের অধিকাংশ সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করে কাটাচ্ছে। তারা প্রচুর সময় অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে ফেলছে। এসব মাধ্যমে নানা ধরনের গেম খেলেও তারা অনেক সময় পার করছে। তবে স্ক্রীনের বাইরে বই পড়া, ঘুমানো কিংবা তাদের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করার কাজে অনেক কম সময় ব্যয় করে তারা।

Related Post

ওই মনোবিজ্ঞানী বলেছেন, এইসব শিশুদের বিকাশের গতি খুবই মন্থর। ১৮ বছর বয়সে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া, চাকরিতে যোগদান করা, মদ্যপান কিংবা অভিভাবক ছাড়া বাইরে বের হওয়ার মতো যথেষ্ট যোগ্যতা রয়েছে বলে তাদের মনে হয় না। এক্ষেত্রে আগের জেনারেশনের কিশোর-কিশোরীদের তুলনায় তাদের কম যোগ্য বলেই মনে হয়।

বর্তমান কিশোর-কিশোরীর আচরণ ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে এই মনোবিজ্ঞানী তার গবেষণার পর আরও বলেন, ২০১১ ও ২০১২ সালের দিকে কিশোর বয়সের শিশুদের মধ্যে খুব দ্রুত আমি একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে নিঃসঙ্গতাবোধ ক্রমেই বাড়তে দেখা যাচ্ছে। তারা কোনো কিছুই সঠিকভাবে করতে পারে না। তারা ভাবছে তাদের জীবনটা একটা অর্থহীন। এ সবই হতাশার মূল লক্ষণ বলেই মনে হচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে ওই মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ হলো, সুখ ও মানসিক স্বাস্থ্য মূলত আমাদের চিন্তা-চেতনার ওপর নির্ভর করে। এই বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। জন্মগতভাবে শরীরে আমরা যে জিন বহন করে চলেছি তা কখনও পাল্টানো সম্ভব নয়, যেমন রাতারাতি দারিদ্র্য দূর করার কোনো সমাধান আমাদের হাতে নেই। তবে আমরা আমাদের অবসর সময় কিভাবে ব্যয় করবো সেটি ইচ্ছা করলেই আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। এই কাজে আমরা আমাদের শিশুদেরকে সহায়তাও করতে পারি।

ওই গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয় যে, ১৩ হতে ১৮ বছর বয়সীরা দিনে প্রায় দুই ঘণ্টা বা এর কম সময় ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করলে সবথেকে ভালো। এতে সামাজিক মাধ্যমের সব সুযোগ সুবিধা যেমন আমরা পাবো, ঠিক তেমনি এর ক্ষতি থেকেও আমরা রক্ষা পাবো। তাই গবেষণায় এই বিষেয়ে অভিভাবকদের সজাগ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২০ 2:31 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে