এক মহামানবের জন্মদিন: আজ পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবী (সা:)

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্যদিয়ে আজ গোটা বিশ্ব জগতের মুসলমানদের আবেগ-অনুরাগ ও উচ্ছ্বাসে প্রাণ-মন আকুল করা ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হচ্ছে।

আজ সেই উৎসবের মহান দিন ১২ই রবিউল আউয়াল। আজকের এই দিনে মহা নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এই জগতে এসেছিলেন। যাঁর আলোতে এই জগত আলোকিত হয়েছিল। যাঁর আগমন না ঘটলে এই বিশ্ব ভ্রমাণ্ড সৃষ্টি হতো না। যাঁর জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছিলেন সেই মহান পুরুষের জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য মুসলমানদের সঙ্গে বাঙালি জাতিও যথাযথভাবে পালন করছে। দিনব্যাপী জিকির, কোরআন খানি ও ইসলামী আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। ফজরের সময় মসজিদে মসজিদে দোয়ার মধ্যদিয়ে দিনের শুরু হয়েছে।

আজ থেকে প্রায় সাড়ে ১৪শ’ বছর পূর্বে ৫৭০ খৃস্টাব্দে এই দিনে ১২ই রবিউল আউয়াল সুবহে সাদেকের সময় মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমেনার কোল আলো করে তিনি আসেন এই ধরায়। জন্মের পূর্বেই পিতৃহারা হন তিনি এবং জন্মের অল্পকাল পরই বঞ্চিত হন মাতৃস্নেহ থেকে। অনেক দুঃখ-কষ্ট আর অসীম প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হয়ে ওঠেন মহান এই ব্যক্তিত্ব। ৪০ বছর বয়সে উপনীত হওয়ার পর তিনি মহান রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে নবুওয়তের মহান দায়িত্ব লাভ করেন। অসভ্য বর্বর ও পথহারা মানব জাতিকে সত্যের সংবাদ দিতে তিনি তাদের কাছে তুলে ধরেন মহান রাব্বুল আলামীনের তাওহীদের মহান বাণী।

Related Post

তবে বড়ই পরিতাপের বিষয় হলো, অসভ্য-বর্বর আরব জাতি তাঁর দাওয়াত গ্রহণ না করে রাসুলের (সাঃ) উপর নির্যাতন শুরু করে। বিভিন্নমুখী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করতে থাকে একের পর এক। মহান আল্লাহর সাহায্যের ওপর অকৃত্রিম ভরসা করে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যান তিনি। এবং এক সময় ধীরে ধীরে সত্যান্বেষী মানুষ তাঁর সাথী হতে থাকে। অন্যদিকে কাফেরদের ষড়যন্ত্রও প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। এমনকি একপর্যায়ে তারা রাসুল (সাঃ) কে হত্যার পরিকল্পনাও গ্রহণ করে। এমন এক অবস্থায় রাসুল (সাঃ) আল্লাহর নির্দেশে জন্মভূমি ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করেন। মদীনায় তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করেন এবং মদীনা সনদ নামে একটি লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। এই মদীনা সনদ বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধান হিসাবে খ্যাত। এ সংবিধানে ইহুদী, খৃস্টান, মুসলমানসহ সকলের অধিকার স্বীকৃত হয় সমান্তরালে। এটি বিশ্ববাসীর জন্য একটি অনুকরণীয়ও বটে।

দীর্ঘ ২৩ বছর শ্রম সাধনায় অবশেষে রাসুলে পাক (সাঃ) দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিজয় অর্জন করেন। মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে তা পূর্ণতা লাভ করে। বিদায় হজ্বের ভাষণে তিনি আল্লাহর বাণী শুনিয়েছেন মানবজাতিকেঃ ‘আজ থেকে তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন তথা জীবন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণ করে দেয়া হলো। তোমাদের জন্য দ্বীন তথা জীবন ব্যবস্থা হিসাবে একমাত্র ইসলামকে মনোনীত করা হয়েছে।’

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। রাসুল (সাঃ)-এর সীরাতের উপর আলোচনা, সিম্পোজিয়াম, সেমিনার ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ বেসরকারি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

This post was last modified on নভেম্বর ২০, ২০১৮ 12:50 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শীতকালীন ঝড়ে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালীন ঝড় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে ফিলিস্তিনের গাজায় এক ভয়াবহ…

% দিন আগে

হঠাৎ ধরা পড়লো তাসমানিয়ার সৈকতে ওপারফিস!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার এক সৈকতে একজন কুকুরচালক হঠাৎ দেখতে পান একটি…

% দিন আগে

গাছিদের রস সংগ্রহের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ৩ পৌষ ১৪৩২…

% দিন আগে

আপনি কেনো খাবেন ছোট মাছ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট মাছ যেমন- মলা, কাচকি, পুঁটি, টেংরা, তিনকাটা, খরে ইত্যাদি…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি-এর ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি এর ৩০ তম বার্ষিক সাধারণ সভা…

% দিন আগে

গণিতের “শূন্য’ কেনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গণিতের বিশাল জগতে কোন সংখ্যাটি আসলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে?…

% দিন আগে