দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আন্টার্কটিকায় বরফের পুরু চাঙড়ের তলাতেও কী তাহলে প্রাণের জন্ম হতে পারে? ঠিক তাই ঘটেছে। এবার প্রাণের হদিস মিললো এক কিলোমিটার পুরু বরফের নিচে!
আন্টার্কটিকায় বরফের পুরু চাঙড়ের তলাতেও কী তাহলে প্রাণের জন্ম হতে পারে? ঠিক তাই ঘটেছে। এবার প্রাণের হদিস মিললো এক কিলোমিটার পুরু বরফের নিচে! এখন প্রশ্ন উঠতে পারে আন্টার্কটিকায় বরফের পুরু চাঙড়ের তলাতেও কী তাহলে প্রাণের জন্ম হতে পারে? সেই প্রাণের আবার বিকাশও হতে পারে?
খুব অতি সাম্প্রতিককালের একটি অনুসন্ধানে জানা যায়, তাও নাকি সম্ভব। প্রাণ টিঁকে থাকতে পারে আন্টার্কটিকায় বরফের এক কিলোমিটার পুরু চাঙড়ের তলাতে যেখানে আলো, বাতাসহীন পরিবেশ বিরাজমান।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, দক্ষিণ মেরু হতে ৬শ’ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম আন্টার্কটিকায় রয়েছে বেশ কিছু সাব গ্লেসিয়াল লেক কিংবা হ্রদ। মারসার হলো সে রকমই একটি হ্রদ। যেখানে পাওয়া গেছে সেই বিরল প্রাণের হদিস!
এই অভিযাত্রী দলের নাম হলো ‘সাব গ্লেসিয়াল আন্টার্কটিক লেকস সায়েন্টিফিক অ্যাকসেস’ বা যাকে সংক্ষেপে বলা যায় ‘সালসা’। এই দলটি মারসার হ্রদের বরফের পুরু আস্তরণ ভেদ করে পৌঁছে যান অনেক অনেক নিচে। বিশেষ একটি যন্ত্র ও ক্যামেরার সাহায্যে। সেখানে তারা দেখতে পেয়েছেন বরফের মধ্যেই রয়েছে পোস্তর মতো ছোট ছোট প্রাণীর অসংখ্য মৃতদেহ।
সাধারণত মেরু অঞ্চলে বরফের পুরু আস্তরণের নিচে থাকে এই ধরনের লেক কিংবা হ্রদ। বরফের নিচে থাকা এই হ্রদের শীতল পানি তরল অবস্থায় থাকে। বড় হিমবাহ কিংবা গ্লেসিয়ারের নিচে এই ধরনের হ্রদ থাকে বলে একে সাব গ্লেসিয়াল বল হয়। আন্টার্কটিকা মহাদেশে মারসার হ্রদ, হুইলান্স হ্রদ, ভোস্তক হ্রদের মতো প্রচুর সাব গ্লেসিয়াল হ্রদ রয়েছে।
বরফের নিচে প্রাণের সন্ধান পাওয়ার পর ‘সালসা’ অভিযানের সদস্য, নেব্রাস্কা-লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো প্যালিয়েন্টোলজিস্ট ডেভিড হারউড বলেছেন যে, ‘এটা সত্যিই আশাতীত।’ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লেসিয়ার বিশেষজ্ঞ স্লায়েক তুলাজিক এই বিষয়ে বলেছেন, ‘অনুসন্ধানের এই ফলাফল সত্যিই খুব অবাক করে দিয়েছে আমাদের সকলকে।’
গবেষকরা বরফের পুরু চাঙড়ের গভীরে যে প্রাণীর মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছেন তা দেখতে অনেকটাই পোস্তর মতো। গবেষকরা জানিয়েছেন যে, সেগুলো মূলত ‘টার্ডিগ্রেড’ গোত্রের প্রাণী। মাইক্রোস্কোপের তলায় চোখ রাখলে দেখা যাবে ৮ পা-ওয়ালা এই প্রাণীর দেহের গঠন অনেকটা কেঁচোর মতোই।
গবেষকদের ধারণা, প্রাণীগুলো হয়তো সমুদ্রের বাসিন্দা। মারসার হ্রদ হতে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ট্রান্স-আন্টার্কটিক পাহাড়। প্রায় ১০ হাজার হতে ১ লাখ ২০ হাজার বছর পূর্বে ভয়ঙ্কর উষ্ণ হয়ে উঠেছিল পৃথিবী। সেই সময় বরফের নিচে এইসব হ্রদের পানি ছিল একেবারে তরল অবস্থায়। তখন ওইসব হ্রদে বসবাস করতো এই টার্ডিগ্রেড গোত্রের প্রাণীরা। সেই উষ্ণযুগের শেষের দিকে আস্তে আস্তে শীতল হতে শুরু করে পৃথিবী। তখনই লুপ্ত হয়ে যায় ওই এলাকার প্রাণীকূল।
তবে ঠিক কত বছর পূর্বে এইসব প্রাণীরা জীবিত ছিল সেটি জানার জন্য এবার তাদের দেহের কার্বন ডেটিং করবেন গবেষকরা। ওই প্রাণীর ডিএনএ সিকোয়েন্স সাজানোর চেষ্টাও করা হচ্ছে। এই দু’টি কাজ শেষ হলে ওই প্রাণীর জীবনচক্র সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য ও তাদের অস্তিত্বের সময়কাল জানতে পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
ইতিপূর্বে ২০১৩ সালে হুইলান্স হ্রদে এই রকম অভিযান চালিয়েছিল অপর একটি গবেষক দল। তবে সেইবার কিছু অণু জীব ছাড়া অন্য কিছুই খুঁজে পাননি তারা। সেদিক থেকে দেখলে ওই অঞ্চলে এই প্রথম উচ্চ গোত্রের প্রাণীর সন্ধান পাওয়া মিললো।
গবেষকরা মনে করছেন, এই অনুসন্ধানটি মূলত পৃথিবীর বাইরে প্রাণের খোঁজেও নতুন দিশা দেখাতে সক্ষম হবে। কারণ সাব গ্লেসিয়ারে প্রাণীর খোঁজ পাওয়া গেলো এবারই প্রথম। পৃথিবীর বাইরেও কিছু গ্রহ উপগ্রহে এই রকম সাব গ্লেসিয়ারের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন।
This post was last modified on জানুয়ারী ৩১, ২০১৯ 12:04 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বেলায় কিশোর পত্রিকার পাতায় আমরা অনেকেই এমন খেলা খেলেছি।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি করলা খেলে সুস্থ থাকে শরীর। তবে সঙ্গে বা…