দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কতো রকম বিষয়ে পড়ালেখা করানো হচ্ছে তার যেনো শেষ নেই। এবার এমনই একটি উদ্যোগ হলো ‘আদর্শ বউ’ তৈরি করার বিশেষ কোর্স!
আমাদের অনেকেরই এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর তা হলো বিয়ের পর বউ নিয়ে নানা কেচ্ছা কাহিনী লেগেই থাকে। নতুন পরিবেশে বউয়ের যেমন মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়ে থাকে, ঠিক তেমনি শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মধ্যেে বউ নিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের বিড়ম্বনা। প্রায় সকল শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ বউ মানিয়ে নিতে পারছে না শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে। এবার সেই সমস্যা লাঘব করতে চলেছে ভারতের বারকাতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ কোর্স। ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই কোর্সটি চালু করেছে।
আমরা মাঝে-মধ্যেই সংবাদপত্রে পাত্র-পাত্রীর বহু চটকদার বিজ্ঞাপন দেখতে পায়। যেখানে পরিবারের পক্ষ হতে দাবি করা হয লক্ষ্মী, গুনবতী বউমা চান তারা। চাওয়ার যেনো শেষ নেই। বউকে হতে হবে গৃহকাজে নিপুণা, অন্যসব কাজে পারদর্শীও। পাত্রের পরিবারের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত ভালোপ বউমা তৈরির পাঠ দিতে চলেছে ভারতের ওই বিশ্ববিদ্যালয়।
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপালের বারকাতুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় আগামী শিক্ষাবর্ষ হতেই শুরু হতে চলেছে তিন মাসের এই কোর্স। ভালো বউমা হতে চাইলে ভর্তি হয়ে যেতে হবে খুব তাড়াতাড়ি।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডি সি গুপ্তা জানিয়েছেন যে, বিয়ের পর নতুন পরিবেশে মেয়েরা যাতে সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন সেই জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সমাজের প্রতি আমাদের একটি দায়িত্ব-কর্তব্যও রয়েছে। ইতিমধ্যেই কোর্সটি চালু হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে।
আমরা কেবলমাত্র পড়াশুনার গন্ডির মধ্যেই আটকে থাকতে পারি না। নববধূরা যাতে নতুন জীবনে খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারে, সেজন্যই তাদের তৈরি করাটাও আমাদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। কর্তৃপক্ষ মনে করছেন যে, নারীর স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে এই উদ্যোগটি। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে সাইকোলজি, স্যোশিওলজি ও ওমেনস স্টাডিজ বিভাগে শুরু হবে এই বিষয়ের উপর পড়াশুনা। পড়ার বিষয়ও থাকে এগুলিই।
ডি সি গুপ্তা আরও বলেছেন যে, আমাদের লক্ষ্য এই কোর্স শেষ হওয়ার পর মেয়েদের মধ্যে যেনো সংসার এবং সমাজে তাদের অবস্থান স্পষ্ট হয়। সমাজে একটা পরিবর্তন আনাই আমাদের মূল লক্ষ্য। প্রথমবার ৩০ জন মেয়েকে নিয়ে শুরু করা হবে। এই কোর্সে ভর্তির জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা কি হবে তা নিয়ে অবশ্য এখনও কেও কিছুই জানাননি।
সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কে এন ত্রিপাঠি এই উদ্যোগটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অবশ্য অনেক শিক্ষাবিদের কাছে এটি হাস্যকর উদ্যোগও মনে হয়েছে। ইতিপূর্বে বারানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরণের একটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা শোনা গেলেও পরে তা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগের শেষ পরিণতি কী হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়, সময়ই বলে দেবে আসলে কি ঘটবে।