দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের জেসিকা কক্স জন্ম থেকেই তার নাই দুটি হাত। তবে হাত না থাকলেও তিনি তার দুই পা ব্যবহার করে অনায়াসেই প্লেন চালাতে পারেন!
বর্তমানে জেসিকা বিমানচালনার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের নারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণা। কক্সের কাছে তার ডান পা দিয়ে ইয়োক ও বাম পা দিয়ে থ্রটল নিয়ন্ত্রণ করা কোনো ব্যাপারই নয়।
সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে কক্স বলেছেন, অন্য পাইলটরা যা তাদের হাত দিয়ে করে থাকেন, আমি তা করি আমার দুই পা দিয়েই। আমার জন্মের পর যখন চিকিৎসক আমাকে নিয়ে এসে বাবা-মাকে বলেন যে, আপনাদের সন্তানের কোনো হাত নেই, তখন আমার বাবা-মা খুব কষ্ট পান।
আমার মা প্রচণ্ড কষ্ট পান কারণ তার গর্ভাবস্থা একেবারেই স্বাভাবিক ছিলো। জেসিকা জানান যে, তিনি কখনও কোনো রকম হীনমন্যতায় ভোগেননি। তিনি নিজের সাহস এবং শক্তির সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তার পরিবারকে। জেসিকা বলেন, তারা আমাকে সাহসী হতে এবং ঘরের বাইরে চলাফেরার স্বাধীনতা দিতে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন।
জেসিকা কক্স জানিয়েছেন যে, একসময় এয়ারপ্লেনে উড়তে ভয় পেতেন তিনি। তিনি বলেন, শিশু বয়সে ফান বাণিজ্যিক ফ্লাইটে উঠতাম আর প্রতিবারই সিটে বসে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতাম। মনে হতো কেও আগলে রাখলে আমি বোধহয় স্বস্তিবোধ করতাম।
কক্স আরও বলেন, একটি ছোট্ট প্লেন এক ফ্লাইট আমার সবকিছু পালটে দেয়। প্লেনটির পাইলট আমাকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে এসে সেটি চালাতে বলেছিলেন। আমার মনে হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে ভয় না পেয়ে তা মোকাবেলা করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জেসিকা কক্স ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনা হতে স্নাতক পাসের পর ২০১৫ পাইলট হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। তবে বিষয়টা তারকাছে মোটেও সহজ ছিল না। তাই একজন ডেডিকেটেড ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর খোঁজার প্রয়োজন পড়েছিলো তার।
জেসিকা কক্স বলেন, আমি অনেক ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর এবং কন্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। নানা ভুল-ভ্রান্তির মধ্যদিয়ে বিমানচালনায় সিদ্ধহস্ত হতে প্রায় তিন বছর লেগে গেছে আমার। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আমার সামর্থ্য অনুযায়ী একটি প্লেন খুঁজে বের করা।
২০০৮ সালে জেসিকা কক্সকে লাইট স্পোর্ট এয়ারক্র্যাফট এরকুপ চালানোর অনুমতি দেয় ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। জেসিকা কক্স বলেন, অনেক প্রশ্ন ছিলো, অনেক উদ্বেগে ছিলো। এটি সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও অনেক সন্দেহ ছিলো আমার।
হাত না থাকলেও খুব একটি স্বাভাবিক শৈশব পেয়েছেন জেসিকা কক্স। তিনি সরকারি স্কুলে যোগ দিয়ে নিয়মিত পাঠক্রম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডেই বেশি সম্পৃক্ত থাকতেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর আমি নাচ, সাঁতার এবং মার্শাল আর্ট টায়েকোনডো ও স্কাউটিংয়ে যোগ দিয়েছি।
দুই হাত না থাকায় তাকে বেশিরভাগ সময় ভিন্ন দৃষ্টিতেই দেখা হতো। জেসিকা কক্স বলেন, আমি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করতাম তবে আমাকে প্রায়ই বলা হতো যে আমি কোনো কিছুই পারবো না। কারণ আমার দুই হাতই নেই। তারপর জেসিকা কক্স কৃত্রিম হাত ব্যবহার করা শেখেন তবে তিনি কখনও এতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধই করেননি। জেসিকা কক্স বলেন, আমি শুরু থেকেই এই কৃত্রিম হাতের ওপর নির্ভরশীল হতে চাইনি। আমি ভাবতাম যে কৃত্রিম হাতের চেয়ে আমার পা অনেক বেশি ভালো।
বর্তমানে জেসিকা কক্স শুধু একজন পাইলটই নন, তিনি একজন স্বীকৃত স্কুবা ড্রাইভার এবং টায়েকোনডোতে একজন থার্ড-ডিগ্রি ব্যাক বেল্ট! জেসিকা কক্স একজন মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে ২০টির বেশি দেশে ভ্রমণ করেছেন!
This post was last modified on মে ১৯, ২০১৯ 2:24 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে লাইব্রেরিতে টেবিলের সামনে বই নিয়ে বসে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শরীরচর্চার সব উপায়ের মধ্যে হাঁটাকেই বেশি গুরুত্ব দেন অনেকেই। তবে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্কুল, শিক্ষার্থী ও কমিউনিটির মধ্যে ঐক্য এবং একাত্মতা উদযাপনে আইএসডি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আইফার্মার লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে গত ৮ মে আইফার্মার লিমিটেড ও…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের অন্যতম শীর্ষ ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ’তে শীঘ্রই আসছে জনপ্রিয় মার্কিন…