দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে জমির হিসাব নিকাশ এর বিপাকে আমাদের সকলেরই পরতে হয়। আর তাই নানান ঝামেলাকে দূর করে জমির সঠিক তথ্য আমরা এখন খুব সহজেই ইন্টারনেটে পেতে পারি।
ভূমির পরিমাপ পদ্ধতি সঠিক এবং সহজ করার জন্য ফরাসী বিজ্ঞানী এডমন্ড গান্টা ইস্পাত দ্বারা এক ধরণের শিকল আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে তার নাম অনুসারেই এইশিকলের নামকরণ গান্টার শিকল করা হয়।আমাদের বাংলাদেশে গান্টার শিকল দ্বারা জমি জরিপ করা হয়। আর এই গান্টার শিকল জরিপ আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি।
এই জমির খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করতে আমাদের নানা রকমের ভোগান্তি পোহাতে হয়ে থাকে। তার অবসান ঘটিয়ে এখন মাত্র মাত্র পাঁচ মিনিটে অনলাইনে জমির খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সহায়তায় এবং বাস্তবায়নে ডিজিটাল পদ্ধতিতে land.gov.bd বা rsk.land.gov.bd বা www.minland.gov.bd বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে খুবি কম সময়ে আমরা নির্দিষ্ট জমির খতিয়ানের কপি সংগ্রহ করতে পারবো।
আমাদের দেশের যেকোনো নাগরিক যেকোন জায়গা থেকে ব্যক্তিগত কিংবা ক্রয় করতে ইচ্ছুক যে কোন জমির বিভিন্ন তথ্য এখন অতিব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবেন।
এছাড়া খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য অনলাইনে আবেদন, আবেদন নিষ্পত্তি বিষয়ে ট্র্যাকিং ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনিটরিং করার সুবিধা রয়েছে এই অনলাইন ব্যবস্থায়। যার দ্বারা আমাদের দেশের নাগরিকদের জমি সংক্রান্ত ভোগান্তি অনেক ক্ষেত্রেই কমে যাবে। আমাদের এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় যেকোনো ডিজিটাল সেন্টারে অথবা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজের জমি সংক্রান্ত তথ্য দেখার সুযোগ পাবেন যে কেউ।অনলাইনে খতিয়ান সংগ্রহের জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। খতিয়ান সংগ্রেহের জন্যনির্ধারিত বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা বাছাই করতে হবে। খতিয়ান নম্বর বা দাগ নম্বর বা মালিকানা নাম বা পিতা বা স্বামীর নাম দিয়ে খতিয়ান খোঁজা যাবে যা আপনার খতিয়ান খোঁজার জন্য একটি সহজ প্রক্রিয়া।অনলাইনে খতিয়ানের কপি পেতে আবেদনের সময় নাগরিকের নাম, পরিচয় পরিচয়পত্র নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও ফোন নম্বর ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। নির্ধারিত তথ্য দেওয়ার পর আপনাকে নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হবে যা মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। ফি পরিশোধের পর অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে পারবেন খুব সহজেই। সরাসরি অনলাইন কপি প্রিন্ট করে নিতে হবে কপি সংগ্রহের ক্ষেত্রে। পরবর্তীতে গ্রাহককে তার নির্ধারিত সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করতে হবে।সার্টিফাইড কপি পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের সময় নাগরিকের তথ্য প্রদানের পর মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খতিয়ানের জন্য ফি দিতে হবে। ফি দেয়ার পর সার্টিফাইড কপির জন্য নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র, ই-মেইল, মোবাইল নম্বর, ট্রানজেকশন আইডি ও ডাকযোগে যোগাযোগের ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট জেলা অফিস থেকে বা আবেদনকারীর প্রত্যাশিত ঠিকানায় ডাকযোগে নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে আরএস খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি সরবরাহ করা হবে।
আমাদের এই উন্নয়নশীল ও প্রগতিশীল বাংলাদেশে সকল ক্ষেত্রেই আধুনিকায়ন এর ছোঁয়া বিদ্যমান যা লক্ষণীয় আমাদের সকলের চোখে।
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোজ বুধবার সচিবালয়ে ‘হাতের মুঠোয় খতিয়ান’ স্লোগানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ আরএস খতিয়ান অনলাইনে অবমুক্তকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের পার্বত্য ৩টি জেলা ছাড়া দেশে প্রায় ৬১ হাজার ৫০০ মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে ৪১ হাজার মৌজার জরিপ সম্পন্ন হয়েছে, এর প্রায় ৩২ হাজার মৌজার জরিপে প্রকাশিত এক কোটি ৪৬ লাখ আরএস (১৯৬৫ সাল থেকে চলমান জরিপে প্রস্তুত করা খতিয়ান) খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে পাওয়ার সুযোগ করা হয়েছে এই অনলিনে ব্যবস্থায়। এই অনলাইন ব্যবস্থার আশীর্বাদে আমাদের জমির খতিয়ান ও তথ্য সংগ্রহে যত সুবিধা হবে তার থেকে বেশি কমে যাবে সাধারন নাগরিকের জমি সংক্রান্ত ভোগান্তি।