দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক বাঙালি তরুণী মাত্র ২১ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। অথচ মাত্র চার বছরে তার ব্যবসার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮০০ কোটিতে!
এতো কম সময়ের মধ্যে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছানো চাট্টিখানি কথা নয়। ২৭ বছর বয়সেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন বাঙালি তরুণী অঙ্কিতি বসু।
এক সময় তিনি মাত্র ২১ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। অথচ চার বছরে তার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৮০০ কোটিতে! কিভাবে এটি সম্ভব? এমন প্রশ্নের উত্তরও মিলেছে।
এই তরুণীর কর্ম উদ্যমের শুরুর গল্পটা ছিল একেবারেই অন্যরকম। বাঙালি পরিবারে জন্ম হয়েও, বাংলার বাইরেই বেড়ে ওঠেন অঙ্কিতি বসু। ২০১২ সালে মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ হতে অর্থনীতি ও গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেন অঙ্কিতি বসু।
অঙ্কিতি বসু মার্কিন কনসাল্টিং সংস্থা ম্যাকিনজি’র মুম্বাই শাখায় চাকরিও শুরু করেন এক সময়। সেখান থেকে তিনি যোগ দেন অন্য একটি মার্কিন সংস্থা সেকোয়া ক্যাপিটালসের বেঙ্গালুরু কার্যালয়ে।
অঙ্কিতি বসুর যখন বয়স ২৩ বছর বয়স তখন বেঙ্গালুরুতেই চব্বিশ বছর বয়সী ধ্রুব কাপুরের সঙ্গে তার আলাপ হয়। গুয়াহাটির আইআইটি হতে পড়াশোনা শেষ করে গেমিং স্টুডিও কিউয়ি আইএনসি’তে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তরুণ এই ইঞ্জিনিয়ার ধ্রুব কাপুর।
এরপর যা ঘটলো। চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের মতো কিছু করার স্বপ্ন ছিল এই দুজনের। প্রথমে তাদের মাথায় আসে ই-কমার্স সাইট খোলার কথা। তবে ভারতে সেই সময় ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজনের মতো সংস্থা জাঁকিয়ে বসে। বুঝেছিলেন তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পেরে ওঠা যাবে না। তাই অন্য চিন্তাভাবনা করতে থাকেন।
অঙ্কিতি বসু সে বছরই ব্যাঙ্কক বেড়াতে যান। সেখানে গিয়েই তার চোখ খুলে যায়। সেখানকার চতুচক বাজারে ঢুকার পর স্থানীয় ডিজাইনারদের তৈরি পোশাক, জুতা, ব্যাগ ও অ্যাকসেসরিজ ইত্যাদি তার নজর কাড়ে। ভাষাগত সমস্যা থাকার কারণে, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পক্ষে সেগুলো বাইরের লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছিল না, সেই বিষয়টি বুঝতে পারেন অঙ্কিতি বসু।
তার মাথায় তখনই আইডিয়া আসে। দেশে ফিরে ধ্রুবের সঙ্গে আলোচনা করেন অঙ্কিতি। চাকরি ছেড়ে ২১ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে কাজে লেগে যান তারা দুজন। তবে তাদের যাত্রা খুব একটি সহজ ছিল না। মার্কেট রিসার্চ সারতেই তাদের লেগে যায় প্রায় একবছর সময়। ব্যাংককের বাজারে ঘুরে ঘুরে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনলাইন ব্যবসায় আগ্রহ গড়ে তুলার কাজ শুরু করেন অঙ্কিতি বসু।
এই দুই তরুণ-তরুণী বেঙ্গালুরুতে বসে প্রযুক্তিগত নানা সামলাতে শুরু করেন। দক্ষিণ এশিয়ার বাজার দখল করতে বেশি আগ্রহী ছিলেন তারা। সেই মতোই কাজও শুরু করেন তারা। তারপর গত চার বছরে সিঙ্গাপুর, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, কোরিয়া, চীন ও কম্বোডিয়ার বাজার দখল করতে সফল হয় জিলিঙ্গো। ইতিমধ্যেই ভারত এবং অস্ট্রেলিয়াতেও লেনদেন শুরু হয় তাদের।
অঙ্কিতি বসু একসময় যে সেকোয়া সংস্থার কর্মী ছিলেন, আজ তারাও জিলিঙ্গোয় ২২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছেন! তাদের প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ রয়েছে সিঙ্গাপুরের তামসেক হোল্ডিং প্রাইভেট লিমিটেডের। এই মুহূর্তে জিলিঙ্গোর সিইও অঙ্কিতি বসু। সিঙ্গাপুরে সংস্থার সদর দফতর চালান তিনি। অপরদিকে বেঙ্গালুরুতে ১০০ জন কর্মীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ধ্রুব কাপুর। তিনি এই সংস্থার প্রযুক্তিগত প্রধান (সিটিও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এভাবেই অঙ্কিতি বসুর আজ পুজি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা! ইচ্ছা ও উদ্যোগ সঠিক হলে কেও থেমে থাকে না, এগিয়ে চলে দুর্বার গতিতে সেটিই প্রমাণ করেছেন এই বাঙালি তরুণী অঙ্কিতি বসু।
This post was last modified on জুলাই ৩১, ২০১৯ 12:44 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনের বেলায় ঘুমানোকে আমরা ভাত ঘুম বলে থাকি। তবে দিনের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিপিএস এসটিএস সিনিয়র স্কুল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয়েছে ডিপিএস এসটিএস স্কুল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক অ্যান্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৩- এর…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি দেশের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রীর ছোটবেলার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছবিতে লুকিয়ে রয়েছে একটি কাঁচি। তবে এই কাঁচির প্রতিকৃতিটি এই…