আপনি কী জনেন দিবানিদ্রার অভ্যাসে বাড়তে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনের বেলায় ঘুমানোকে আমরা ভাত ঘুম বলে থাকি। তবে দিনের বেলা বেশি ঘুমকে বদভ্যাসই বলছেন চিকিৎসকরা। শুধু তাই নয়, এই দিবানিদ্রার অভ্যাস ডিমেনশিয়া কিংবা স্মৃতিভ্রমের মতো মারাত্মক অসুখও ডেকে আনতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বিশেষ করে দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার পরই বিছানায় যেতে ইচ্ছে করে। বয়স্কদের মধ্যে দিবানিদ্রার অভ্যাস খানিকটা বেশিই থাকে। মূলত, অখণ্ড অবসর ও একঘেয়েমি থেকেই এই অভ্যাস গড়ে ওঠছে। তবে দিনের বেলা বেশি ঘুমকে বদভ্যাসই বলেছেন চিকিৎসকরা। এমনকি, দিবানিদ্রার অভ্যাস ‘ডিমেনশিয়া’ কিংবা স্মৃতিভ্রমের মতো মারাত্মক অসুখ ডেকে আনতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।

পূর্বের রাতে ‘পার্টি’ হয়েছে বা, অফিসের কাজের চাপের কারণে ঘুম হয়নি। ছুটির দিন সকালে ঘুমিয়ে সেই ঘুম পুষিয়ে নেবেন ভেবেছেন। তবে, রাতের ঘুমের সঙ্গে তার কোনও তুলনাই করা যায় না। চিকিৎসকদের দাবি, শরীরের সার্কাডিয়ান ক্লক গড়বড় হলেই মারাত্মক সব অসুখ চেপে বসতে পারে। এরমধ্যে একটি হলো ‘ডিমেনশিয়া’। দিনের বেলা বেশি ঘুমের অভ্যাস থাকলে তা কাটিয়ে উঠার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

Related Post

সম্প্রতি নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে হায়দরাবাদের জনৈক নিউরোলজিস্ট সুধীর কুমারের একটি পোস্ট। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যদি ভেবে থাকেন, রাতের না-হওয়া ঘুম দিনের বেলায় তা পুষিয়ে নেবেন, তবে সেটি ভুল করছেন। হায়দরাবাদের একটি নামকরা বেসরকারি হাসপাতালের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ সুধীরের মনে করেন, দিনের বেলা যতোই ঘুমোন না কেনো, সেটি রাতের ঘুমের সমতুল্য হতেই পারে না। বরং এই অভ্যাস ডিমেনশিয়াসহ অন্যান্য মানসিক রোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।

স্বপক্ষে তিনি এর একাধিক সমীক্ষার উদাহরণও দিয়েছেন। যেখানে মূলত নাইট শিফটে কাজ করা কর্মীদের নিয়ে সমীক্ষাটি হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, রাতে ঘুমের সুযোগ নেই বলে ওইসব কর্মীদের সিংহভাগই মানসিক চাপ, ওবেসিটি, ভুলে যাওয়া ইত্যাদি শরীরের নানা ধরনের অসুবিধায় ভুক্তভোগী।

এর মূল কারণ হলো, ঘুমের সময় মস্তিষ্ক হতে প্রোটিন বর্জ্য পরিষ্কার হয় অনেক বেশি। কারণ হলো, ওই সময় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে গ্লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম। এই সিস্টেমে গড়বড় হলে স্মৃতিভ্রমের মতো অসুখ গেড়ে বসতে পারে শরীরের মধ্যে। ভালো ঘুমের ঘাটতি ছাড়াও বয়স কিংবা দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বা অভ্যাস, ওবেসিটি, স্লিপ অ্যাপনিয়া কিংবা ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, ডিপ্রেশন ইত্যাদি গ্লিম্ফ্যাটিক সিস্টেমকে আরও প্রভাবিত করে। তাই রাতে ভালো ঘুমের কোনও বিকল্প নেই বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।

ডিমেনশিয়া প্রকৃতপক্ষে কী?

কারও সামগ্রিক কিংবা আংশিক স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া, কার্য-কারণ সম্পর্কযুক্ত ভাবনা চিন্তাতে অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতার মতো সমস্যাগুলোকে বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া কিংবা স্মৃতিভ্রম বলা হয়ে থাকে।

‘ল্যানসেট’ পত্রিকার এক তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে কেবলমাত্র ভারতে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ মানুষ। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on এপ্রিল ১৮, ২০২৪ 2:40 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শীঘ্রই আসছে জিমের ‘মেঘবালিকা’ নামে নতুন নাটক

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী মাফতুহা জান্নাত জিম। মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে…

% দিন আগে

স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বন্দুকধারীর গুলি: আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে গুলি করে অজ্ঞাত বন্দুকধারী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম…

% দিন আগে

পৃথিবীতে এমন ৫টি দেশ রয়েছে যেখানে ২৪ ঘণ্টাই দিনের আলো থাকে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি বিশ্বের প্রায় জায়গাতেই ১২ ঘণ্টার দিন, ১২ ঘণ্টার…

% দিন আগে

সত্যিই এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে

গবেষণা যা বলছে: বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরফপানিতে গোসল করা কী আদৌ ভালো? কেও কেও বলেন, শরীরে…

% দিন আগে

ওজন ঝরাতে লেবু পানিতে দ্রুত উপকার পেতে সঙ্গে মেশাতে হবে আরও কয়েকটি উপাদান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ লেবুতে থাকা ফাইবারের কারণেই পেটভার হয়ে থাকে। অন্য কিছু…

% দিন আগে