দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই কখন কিভাবে কার ভাগ্য বদলে যায় তা বলা মুশকিল। যেমন এক ব্যক্তি এক সময় ছিলেন ভিক্ষুক এখন তিনি কোটি কোটি টাকার ব্যবসায়ী! তাহলে একবার ভাবুন!
এক সময় দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে তার পেট চলতো, বর্তমানে তিনি একজন বড় ব্যবসায়ী। তার ব্যবসায় বছরে টার্নওভার ৩৮ কোটি টাকা! বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও রেনুকা আরাধ্য নামে এক ভারতীয় এমন জিরো থেকে হিরো বনে যাওয়ার কীর্তি গড়লেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এক সময় ভিক্ষা করে দিন যাপন করতেন রেনুকা আরাধ্য। আজ ভারতের হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের সবচেয়ে বড় ট্যাক্সি পরিষেবা সংস্থাটিই রেনুকা আরাধ্যের।
অথচ এক সময় শুধু ভিক্ষাবৃত্তিই নয়, সংসার চালাতে গৃহপরিচারক, কারখানায় মেশিন চালানো এবং একটি ছাপাখানার ঝাড়ু দেওয়ার কাজও করেছেন রেনুকা আরাধ্য। সেই ছাপাখান থেকেই তার উন্নতির শুরু হয়েছিলো।
জানা যায়, ভারতের বেঙ্গালুরুর আনেকাল তালুক নামক এলাকার গোপাসান্দ্রা গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে রেনুকা আরাধ্যের জন্ম হয়েছিলো।
৫ জনের সংসারে খাবার খরচ যোগার করতে অক্ষম ছিলেন তারই বাবা। বাবাকে সাহায্য করতে ছেলেবেলায় গ্রামেই ভিক্ষা করতেন রেনুকা আরাধ্য।
এই ফাঁকে স্থানীয় একটি স্কুলে পড়তেন রেনুকা আরাধ্য। তবে বাবার কাজে হাত লাগাতে গিয়ে বেশির ভাগ দিনই স্কুলে যেতে পারতেন না রেনুকা আরাধ্য।
প্রায়ই ভিক্ষা করে ও দরিদ্রদের জন্য বিনা খরচে চাল, ডাল সরবরাহ করার লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো তাকে। সেই সব সামগ্রী বাজারে বিক্রি করে রেনুকা আরাধ্য খাবার কিনতেন পরিবারের জন্য।
তাতেও যখন হচ্ছিল না, তখন ১২ বছর বয়সে একটি বাড়িতে পরিচারকের কাজ নিয়েছিলেন রেনুকা আরাধ্য। সেখানে থালাবাসন ধোয়া, বাজার করা হতে শুরু করে গবাদিপশুর দেখাশোনাও করতে হতো আরাধ্যাকে।
এসবের মধ্যেই পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে থাকলেন রেনুকা আরাধ্য। বাবা মারা গেলে ১৫ বছর বয়সে সংসারের পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে তার কাঁধে।
এরপর সেই বাড়ির কাজ ছেড়ে দিয়ে একটি লেদ মেশিন কারখানায় কাজ নেন। তারপর যোগ দেন একটা প্লাস্টিক কারখানায়।
তবে সেই উপার্জন দিয়ে এতোবড় সংসার চালানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল তারজন্য। তাই একইসঙ্গে রাতে নিরাপক্ষারক্ষীর কাজও নেন তিনি।
তারপর একটি ছাপাখানায় ঝাড়ুদারের কাজ পান রেনুকা আরাধ্য। সেখানে তার সততা ও কাজে আগ্রহ দেখে ছাপাখানার মালিক তাকে কম্পিউটারে টাইপ, হিসেব করা এবং ডিজাইন করাও শেখান।
সেই শিক্ষা দিয়ে একটি সংস্থার সেলসম্যান হয়ে যান রেনুকা আরাধ্য। সেলসম্যান থাকা অবস্থায় সতীশ রেড্ডি নামে এক গাড়ি চালকের সঙ্গে পরিচয় ঘটে আরাধ্যের। বলতে গেলে এরপর থেকেই তার ভাগ্য বদলাতে থাকে।
সতীশ রেড্ডির কাছ থেকে গাড়ি চালানো শিখে সব কাজ ছেড়ে অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির চালক হিসাবে কাজ শুরু করেন রেনুকা আরাধ্য। চার বছর এভাবেই অধ্যাবসায়ের পর কিছু টাকা জমিয়ে ফেলেন তিনি। তারপর ২০০৬ সালে দেড় লক্ষ টাকার ঋণ নিয়ে নিজেই একটি গাড়ি কেনেন রেনুকা আরাধ্য।
কঠোর পরিশ্রমের পর একে একে আরও ৬টি গাড়ি কেনেন তিনি। দিনে দিনে তার ব্যবসা বড় হতে থাকে। এভাবেই আজ ৮০০ গাড়ির মালিক রেনুকা আরাধ্য।
ভারতের হায়দরাবাদ ও চেন্নাইয়ের যাত্রীদের ভরসা এখন রেনুকা আরাধ্যের গাড়ি। রেনুকা আরাধ্যের ট্রান্সপোর্ট সংস্থাটি প্রতি বছর ৩৮ কোটি টাকা লেনদেন করছে।
তবে আরাধ্যের স্বপ্ন থেমে নেই। তিনি জানিয়েছেন, সংসার চালাতে কি না করেছি আমি! ভিক্ষা করেছি, থালাবাসন ধুয়েছি, নাইটগার্ডও হয়েছি। কখনও কখনও মালির কাজ করে সংসার চালিয়েছি। অন্যের গাছের নারিকেল পেরে দিয়েও সংসার চালিয়েছি আমি। মাত্র ৬০০ টাকা বেতনে সেলসম্যানের চাকরি করেছি এক সময়। এখন আমার কোম্পানিতে এই বেতনের কোনো কর্মচারীই নেই।
ব্যবসাকে আরও বড় করতে চান রেনুকা আরাধ্য। তার একমাত্র লক্ষ্য টার্নওভার ১০০ কোটি টাকায় পৌঁছানো।
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯ 10:15 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে ছবিটি আপনারা দেখছেন সেটি একটি জঙ্গলের রাস্তার। সেই রাস্তায়…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি পাকা আম খেলে রক্ষে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গ্রীষ্মে শুধুমাত্র শরীরই নয়, গরম হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোনটিও। ফোন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় ছোট পর্দার ব্যস্ত মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মোজেজা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই জঙ্গলের মধ্যে নদী রয়েছে। রয়েছে সার দেওয়া গাছ। চারপাশে…