বোরকা পরেই বিখ্যাত সাংবাদিক সাবিহা ও লতিফা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশায় বিখ্যাত হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন দুই নারী সাংবাদিক। তাও আবার বোরখা (হিজাব) পরিহিত অবস্থায়।

অনলাইন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সাবিহা শেখ। খুব ছোটবেলা হতেই তার ইচ্ছা ছিল তিনি সাংবাদিক হবেন। তাই সব বাধা অতিক্রম করে সফল একজন সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যখন পাকিস্তানের ডেরা ইসমাইল খানের গোমাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। তবে ক্লাস করতে গিয়ে আচমকাই কতগুলো প্রশ্ন তার মনে উদয় হয়।

অধ্যাপকরা প্রথমেই তাকে বলেছিলেন, ‘বোরকা পরা মেয়েরা ভালো সাংবাদিক হতে পারে না, তুমি কিভাবে রোরকা পরে সাংবাদিকতা করবে? পশ্চিমারা রোরকাকে ঠিকভাবে মেনে নিতেও পারে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করতে তোমাকে মানুষের নানা কথা শুনতে হবে।’ তবে এমন প্রশ্নের মুখে সাবিহা কোনো দিনই পড়েননি। অবাক হলেও সেই সময় সাহসিকতার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, শুধু একজন ভালো সাংবাদিকই হবো না, বোরকা পরা মেয়েদের রোল মডেল হবো আমি।

Related Post

বোরকা পরা মেয়ে পেশাদার সাংবাদিক হওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবো আমি। যেমন কথা তেমন কাজ করে দেখিয়েছেন তিনি। আজ সত্যি সত্যিই সাবিহা বোরকা পরা মেয়েদের দিশারি হয়ে উঠেছেন। তিনি বন্ধু সামিরা লতিফাকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেছেন বোরকা জার্নালিস্ট সংগঠন। ২০১৮ সালে তারা এই সংগঠনটি তৈরি করেন। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশটি আফগানিস্তানের একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা। সেখানে বেশিরভাগ মুসলিম নারীদের মধ্যে বোরকা নিকাব পরার চল বিরাজমান।

এখানে নারী শিক্ষা নিয়ে কাজ করে চলেছেন সাবিহা এবং লতিফা। তারা সেখান সব সময় মেয়েদের কথা তুলে ধরছেন। জানা গেছে, ওই এলাকায় মেয়েদের তেমন কোনো স্কুল কলেজই নেই। পরিবার থেকে দূরে গিয়ে পড়াশোনা চালানো অনেক সময় মেয়েদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। যে কারণে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরাই সাবিহা ও লতিফার একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। এই কাজে করতে গিয়ে বর্তমানে যথেষ্ট পরিচিত হয়ে উঠেছেন সাবিহা। সাবিহা জানিয়েছেন যে, আমরা বোরকা পরিধান করে কাজ করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

আমাদের মতো অন্য মেয়েদের জন্যও সাংবাদিকতায় জায়গা তৈরি করতে চাই। যেখানে মুসলিম মহিলারা কোনো সমস্যা ছাড়াই কাজ করতে পারবেন। বোরকা কিংবা নিকাব কোনো দিন কোনো পেশায় আসার জন্য বাধা হতে পারে না- সেটি বোঝাতে চাই। গোমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ওয়াসিম আকবর শেখ বিশ্বাস করেন যে, সরকারের সহযোগিতা না পেলে তারা এই জাতীয় কাজ করে বেশি দূর এগোতে পারে না। তাই সহযোগিতারও প্রয়োজন রয়েছে।

লতিফা বলেছেন, আমাদের বোরকা জার্নালিস্ট নামের যে প্রকল্পটি মুসলিম মেয়েদের জন্য আমরা চালু করেছি, তা প্রসারিত করতে আরও বেশি মহিলাদের এগিয়ে আসার প্রয়োজন। পাশাপাশি সংগঠন চালাতে অর্থেরও প্রয়োজন আছে। সরকার সাহায্য করলে আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো ইনশাহআল্লাহ। সাবিহা বলেন, এই কাজে নামি আমার মা আমাকে সমর্থন করেছেন তাই। তবে আমাকে এখন মানুষ অনেক সম্মান করেন। আমি চাই জার্নালিজমেও ইসলামের আদর্শ মেনে চলুক অন্যান্য মুসলিম নারীরা।

This post was last modified on নভেম্বর ৩০, ২০১৯ 2:31 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে