দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ৩০ ডিসেম্বর কুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রদের আরবীয় পোশাক পরা ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর পোশাক সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কুয়েট প্রশাসন। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেনো এই চিঠি? কেনো তারা বিব্রত?
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি ব্যাচের সমাপনী ক্লাসে পুরুষ শিক্ষার্থীরা আরবীয় পোশাক পরার পর সেই পোশাক সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫ বর্ষের পুরুষ শিক্ষার্থীদের সকলে গত ৩০ ডিসেম্বর তাদের র্যাগডে’তে প্রথাগত আরব পুরুষদের পোশাক – থব, কেফিয়া কিংবা কুফিয়া এবং ইগাল পরে ক্যাম্পাসে র্যালি করেন।
এই ঘটনার দুই দিন পর, গত ১ জানুয়ারি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কিছু শিক্ষার্থীর ‘নির্দিষ্ট’ পোশাক ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতির পরিপন্থী’ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয়েছে।
২৪ ডিসেম্বর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পুরুষ শিক্ষার্থীরা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরে শেষ ক্লাস উদযাপন করে
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ দপ্তর, হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধানের কাছ থেকে পোশাক সংক্রান্ত ‘মতামত’ও গ্রহণ করার উপদেশ দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিটিতে।
২০১৫ ব্যাচের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ পিয়াল বিবিসিকে জানিয়েছেন, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে নয়, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষদিনটি স্মরণীয় করে রাখতেই অভিনব এই পোশাক পরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা।
ওই শিক্ষার্থী আরও জানিয়েছেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েকবছরে একটি ট্রেন্ড হয়েছে যে, র্যাগডে’তে সবাই একই রকম পোশাক পরে আসে। সেই ধারা থেকেই আমরা নতুন কিছু করার জন্য এরকম পোশাক পরে আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।”
তিনি আরও জানান, এ বছরেও অন্যান্য বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন এলাকার ঐতিহাসিক পোশাক পরে র্যাগডে’তে অংশ গ্রহণ করে।
তাই কেবল সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের পোশাককে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বিষয়ে দু:খপ্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
জনৈক শিক্ষার্থী এই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, যেমন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পুরুষ শিক্ষার্থীরা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরেছিলো। ধুতি তো সাধারণভাবে হিন্দুরা পরে থাকেন। তাই বলে কী হিন্দু কালচার হিসেবে এটিকে টিট করা হবে? পাঞ্জাবি বাঙালি ঐতিহ্যবাহী পোশাক কিন্তু তার সঙ্গে ধুতি পরলে কী কারও ক্ষতি হবে? র্যাগ ডে’ তে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন পার করে থাকেন। সেদিন তারা যে কোনো পোশাক পরে আনন্দ ফূর্তি করে দিনটিকে স্মরণীয় করবে এর উপরে আর কিছু হতে পারে না। কেও কোনো অশালীন কিছু করলে সেটি ধরার বিষয় হতে পারে। তাই বলে সব কিছু স্বাভাবিক বিশেষ করে আরবীয় পোশাক ইসলামেরই অংশ সেটিকে কটাক্ষ করার কোনো যুক্তিই নেই। আসলে এটি মূলত মন মানষিকতার উপর নির্ভর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি সম্পর্কে খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার দেবাশীষ মন্ডল সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, বিভিন্ন মহলের শিক্ষকদের আপত্তির কারণে তারা বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছেন।
“তাদের র্যাগডে’র ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেরই বিষয়টি নজরে আসে। অনেক শিক্ষকই এই বিষয়ে অভিযোগ এবং নেতিবাচক মন্তব্যও করেন, যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে।”
তবে তিনি এও স্বীকার করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে অন্যের ‘মতামত’ নিতে উপদেশ দেওয়াটা শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কিছুটা হলেও খর্ব করেছে।
“আসলে শিক্ষকসহ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ ও আপত্তির ভিত্তিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।” বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা।
This post was last modified on জানুয়ারী ৫, ২০২০ 12:16 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…