দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রমণের জন্য খুব ভালো সময় শীতের শেষে। এই সময় যেতে পারেন বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানসমূহে। যেমন ঘুরে আসতে পারেন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী হতে।
খাগড়াছড়ি জেলা শহর হতে ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে মানিকছড়ি উপজেলায় ঐতিহাসিক মং রাজার প্রাচীন আদি নিবাস মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাসরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে মং হলো অন্যতম। প্রাচীনকালে মং রাজবংশ হিসেবে পরিচিত এই নৃ-গোষ্ঠীর একটি পৃথক স্বায়ত্তশাসিত রাজশাসন ছিল।
১৭৯৬ সালের কথা। তখন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার মহামূনি স্থানে রাজা কংজয় ত্রিপুরা রাজবংশের রাজকন্যাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীকালে তিনি ৫০০ ত্রিপুরা পরিবার সঙ্গে নিয়ে সীতাকুণ্ড হতে মানিকছড়িতে আসেন এবং রাজপরিবারের সদস্যদের বসবাসের জন্য মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী স্থাপন করেন। আর এভাবেই মানিকছড়িতে কংজয়ের আমল থেকে মং রাজপরিবারের যাত্রা শুরু হয়েছিলো। ১৮২৬ সালে রাজা কংজয় ত্রিপুরা মারা যান। তখন তাঁর ছেলে কিওজাই সেন মাত্র ৭ বছর বয়সে চাচা লথ্যানয্যার অভিভাবকত্বে শূন্য রাজসিংহাসনে স্থলাভিষিক্ত হলেন। পরবর্তীকালে কিওজাই সেনকে ইংরেজ সরকার মং সার্কেলের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিওজাই সেনের পর রাজবংশের অন্যান্য বংশধররাও পর্যায়ক্রমে মং সার্কেলের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর রাজ্য পরিচালনা করতে থাকেন। মং রাজবংশের সপ্তম রাজা মং প্রু সাইনের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের কারণে তাকে “অনারারি কর্নেল র্যাঙ্ক” পদবীতে ভূষিত করা হয়।
মানিকছড়ি মং রাজবাড়ীর কাছে বিশ্ব শান্তি মহামূনি রাজ বৌদ্ধ চৈত্যের বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। বৌদ্ধ মূর্তি স্থাপনের পর হতে প্রতি বছর ১লা বৈশাখ এখানে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষ্যে মেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও মূহামনি টিলায় পুরাকীর্তি স্থাপত্য মং রাজ বংশের সদস্যদের স্মৃতি মঠ, নানুমা দেবী হল এবং রাজ জেত বন বৌদ্ধ বিহারসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনাও রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী মং রাজবাড়ীতে রয়েছে মং রাজার সিংহাসন এবং মূল্যবান অস্ত্রসহ বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ইতিহাসপ্রেমী অনেক পর্যটক দূর-দূরান্ত হতে মং রাজার প্রাচীন ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে মানিকছড়ি মং রাজবাড়ী ঘুরতে আসেন।
ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, উত্তরা এবং আরামবাগ হতে সেন্টমার্টিন হুন্দাই, হানিফ, শ্যামলী, ইকোনো, রিলেক্স এবং ঈগল পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি হতে বাস/সিএনজিতে ৪৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মানিকছড়ি উপজেলাতে আপনি যেতে পারবেন। এছাড়াও ঢাকা হতে শান্তি পরিবহণের বাসে সরাসরি মানিকছড়ির খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের আমতল বা মহামূনিতে নেমে রিকশা কিংবা পায়ে হেঁটে মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি যাওয়া যায়।
মানিকছড়ির কাছে ফটিকছড়ির বিবির হাটে ফোর স্টার জামান হোটেল এবং হোটেল গ্রিন রেসিডেন্সিয়াল হোটেল রয়েছে। এছাড়াও খাগড়াছড়িতে থাকার জন্য পর্যটন মোটেল, হোটেল ইকো ছড়ি ইন, হোটেল হিল টাচ, শৈল সুবর্ন, হোটেল মাউন্ট ইন, হোটেল নূর, গাংচিল আবাসিক এবং অরণ্য বিলাস প্রভৃতি আবাসিক হোটেল এখানে রয়েছে।
মানিকছড়িতে নিরালা রেস্টুরেন্ট, জেনারেল রেস্টুরেন্ট, ইত্যাদি ফাস্ট ফুড এবং কাঠ গোলাপ রেস্টুরেন্টে প্রয়োজনে খাবার খেতে পারবেন। খাগড়াছড়িতে অবস্থিত সিস্টেম রেস্তোরাঁ, গাং সাবারং, পেডা টিং টিং, পাজন এবং চিম্বাল রেস্টুরেন্টের খাবার বেশ জনপ্রিয়।
খাগড়াছড়ির অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আলুটিলা গুহা, রিসাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝর্ণা, পান ছড়ি শান্তি পূর্ণ অরণ্য কুঠির, হাতিমাথা এবং নিউজিল্যান্ড পাড়া উল্লেখযোগ্য বেড়ানোর জায়গা রয়েছে।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com
This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২০ 12:21 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৯ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক সময় অজান্তেই ঘটে যাওয়া কিছু ভুলে এমন সমস্যাও দেখা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বছরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২ জানুয়ারী ওটিটি প্লাটফর্ম বঙ্গ-তে মুক্তি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে থেকে ওষুধ কিনে খেলে লাভের চেয়ে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), দেশের আইটি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে যে, অবশেষে গাজায় চলমান সহিংসতা…