দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হংকংয়ের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ করোনা ভাইরাসের এক রোগীর সংস্পর্শে আসার পর একটি পোষ্য কুকুর প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গতকাল (বুধবার) হংকংয়ের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাস মানুষের শরীর থেকে কোনও প্রাণীর শরীরেও সংক্রমিত হওয়ার এটিই সর্বপ্রথম ঘটনা।
একাধিকবার পরীক্ষার পর পোমারানিয়ান প্রজাতির এই পোষ্য কুকুরটির শরীরে গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসের হালকা উপস্থিতি পাওয়া গেছে। নাক এবং মুখের মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ওই কুকুরের শরীরে বিস্তার ঘটিয়েছে। আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এই পোষ্য কুকুরটিকে হংকংয়ের কৃষি, মৎস্য এবং সংরক্ষণ বিভাগে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
চীনের বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোফিয়া চ্যান সিউ-চি বলেছেন, কুকুরটির পরীক্ষার পর করোনা উপস্থিতি ধরা পড়ে। এখন এই কুকুরটিকে কৃষি বিভাগের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
তিনি আরও বলেন, পোষ্য এই কুকুরটিকে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে ও নেগেটিভ ফল না আসা পর্যন্ত কুকুরটি কোয়ারেন্টাইনেই থাকবে।
ইউনিভার্সিটি অব হংকং, সিটি ইউনিভার্সিটি ও ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফল অ্যানিমেল হেলথের বিশেষজ্ঞরা ওই কুকুরের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার এই ঘটনা নিয়ে পরামর্শ করেন। এই বিশেষজ্ঞরা প্রত্যেকেই ঐক্যমতে পৌঁছেছেন যে, কুকুরের করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুুঁকির মাত্রা খুব কম। তবে এটি মানুষের শরীর হতে কুকুরের শরীরে করোনা সংক্রমিত হওয়ার প্রথম ঘটনা।
তবে হংকংয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, পোষ্য প্রাণী করোনা সংক্রমিত হতে পারে এমন কোনও পরিষ্কার প্রমাণ এতোদিন ছিল না। একেবারে সর্বোচ্চ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যে পোষ্য প্রাণীকে রাখা এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
সিটি ইউনিভার্সিটির প্রাণী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বানেসা বারস বলেছেন, এই পরীক্ষার কারণে উঠে এসেছে যে, কুকুরের সংক্রমিত হওয়ার হালকা ঝুঁকি রয়েছে। ২০০৩ সালে সার্সের মহামারির সময় বেশ কিছু পোষ্য কুকুরের মাঝে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছিলো।
তিনি আরও বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, ভাইরাসে সংক্রমিত কুকুর বা বিড়াল কখনও অসুস্থ হয় না। এমনকি তারা মানুষের শরীরেও ভাইরাসের বিস্তার ঘটায় না। সার্সের মহামারির সময় খুব স্বল্পসংখ্যক কুকুরের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গেলেও তারা সুস্থ ছিল। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে, সংক্রমিত কুকুর বা বিড়ালের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ভাইরাসের বিস্তারের কোনও প্রমাণ এখনও নেই।
চীনের একদল বিজ্ঞানী সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, গত বছরের ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর হতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে দু’টি প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়েছে করোনা ভাইরাস। বেইজিংয়ের পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়, সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয় ও চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর গবেষকরা গবেষণাটি পরিচালনা করে বলেছেন যে, বর্তমানে একই করোনা ভাইরাসের দুটি ধরন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষই সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধরনটিতেই সংক্রমিত হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪ হাজার ৭৮ জন ও প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ২১৮ জন মানুষ। আক্রান্ত ও নিহতদের ঘটনা ঘটেছে অধিকাংশই চীনে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তখন থেকে সংক্রমিত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯২ জন মানুষ।
বেইজিং ও সাংহাইয়ের বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, আক্রান্তদের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই সংক্রমিত হয়েছেন এই ভাইরাসের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধরনটিতে। আক্রমণাত্মক প্রজাতিটি ছড়াতে শুরু করে জানুয়ারির ঠিক শুরুর দিকে। যে কারণে সংক্রমিত হওয়ার পরপরই মানুষ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন। তবে বর্তমানে একটি পুরোনো এবং শান্ত প্রজাতি করোনা বেশি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে।
এইভাবে ধরন বদলানোর কারণে ভাইরাসটির চিকিৎসা বা শনাক্তকরণ কঠিনও হতে পারে। একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার পর যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের পুনরায় এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা মাত্র ১০৩টি নমুনার ওপর গবেষণা চালিয়ে করোনা ভাইরাসের রূপান্তরের ধরন নিশ্চিত হন। তবে এই বিষয়ে আরও ব্যাপক গবেষণা দরকার বলে সতর্ক করে দিয়েছেন গবেষকরা।
This post was last modified on মার্চ ৫, ২০২০ 9:39 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বেলায় কিশোর পত্রিকার পাতায় আমরা অনেকেই এমন খেলা খেলেছি।…