গোয়েন্দা তথ্যে প্রমাণ ফাঁস: করোনার উৎস সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে চীন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ফাইভ আইস’ নামে গোয়েন্দা জোটের একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে যে, চীন ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে মিথ্যা বলে আসছে।

এদিকে এই ভাইরাসে সংক্রমণ সম্পর্কে যারা প্রথমে বলেছিল তারা অদৃশ্য হয়ে গেছে এবং পশ্চিমারা যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করতে না পারে সে জন্যই ভাইরাসের নমুনা হস্তান্তর করতে অস্বীকারও করেছিল।

১৫ পৃষ্ঠার বিস্ফোরক এই প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে, ভাইরাসটি উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি হতে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এই দাবিটি প্রাথমিকভাবে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে চীন। তারা জোর দিয়ে বলেছে যে, ভাইরাসটি স্থানীয় সামুদ্রিক মাছের বাজার থেকেই এসেছে।

একই সময়, একটি সিনিয়র গোয়েন্দা সূত্র ফক্স নিউজকে বলেছে, বেশিরভাগ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে কোভিড-১৯ উহান ল্যাবেই সৃষ্টি হয়েছিল, তবে এটি দুর্ঘটনাক্রমে বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।

ইংলিশভাষী শীর্ষস্থানীয় ২৫টি দেশ- আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড ও কানাডার গোয়েন্দাদের একটি সম্মিলিত জোট ‘ফাইভ আইস’। তারা সব সময় নিজেদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করে থাকে। জোটের প্রতিবেদনে ভাইরাসটি ছড়ানোর বিষয়ে চীনকে দায়ী করা হয় এবং এটাকে ‘আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতার উপর হামলা’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।

চীন কিভাবে সারা বিশ্বে এই মহামারিটি ছড়িয়ে দিয়েছিল সে সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, চীন শুরু থেকেই ভাইরাসটি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আসছে। ভাইরাসটি যে মানব সংক্রামক সেটাও লুকিয়েছে। যে কারনে এটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পেরেছে সবখানে। ভাইরাসটির অসম্পূর্ণ বাহকগুলোর বর্তমান প্রমাণকেও সেন্সর করেছে এবং অন্যান্য দেশগুলোর কাছে নমুনা হস্তান্তরের বিষয়ে অস্বীকারও করেছে।

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বেইজিং ভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে সার্চ ইঞ্জিনগুলো সেন্সর করা শুরু করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের দাবির সঙ্গে চলছিল এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্বেগ সত্ত্বেও ভাইরাসটি মানব থেকে মানবিক সংক্রমণকে অস্বীকার করেছে চীন।

গোয়েন্দাদের সম্মিলিত এই জোট আরও দেখেছে যে, চীনের কাছে ডিসেম্বরের প্রথম দিক থেকে ভাইরাসটির মানব সংক্রমণের প্রমাণও রয়েছে। তবুও বেইজিং ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তা অস্বীকার করে গেছে।

নথিতে আরও ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, চীন দেশজুড়ে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণকারীদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভ্রমণ অব্যাহত রাখতে বলে। এটা ভাইরাসটি ছড়িয়ে দেওয়ার সুস্পষ্ট ইচ্ছেরই প্রমাণ বহন করে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে উহানের ল্যাবেই কি তৈরি হয়েছিল বিশ্বজুড়ে প্রলয় সৃষ্টিকারী নভেল করোনা ভাইরাস? গোটা বিশ্বে এখন এটাই সবচেয়ে বড় একটি প্রশ্ন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি হলো, উহানের ভাইরোলজি ল্যাবরেটরি হতেই লিক হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস। চীনের কাছ থেকে এ জন্য বড় অংকের ক্ষতিপুরণও আদায় করে ছাড়বেন বলেও হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও মার্কিনীদের এমন দাবিকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বলে আগেই উড়িয়ে দিয়েছে চীন।

তথ্যসূত্র- deshebideshe.com

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।