দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাভাবিক জীবন কাটাতে কাটাতে হঠাৎ যদি সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায়, তাহলে কেমন লাগে বলুন? এ রকম অভিজ্ঞতা খুব বেশি মানুষের ছিলই না। চলচ্চিত্র বা নাটক দেখেই সেই অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করতো মানুষ। সেই সময়টি কাটান ৩টি শ্বাসরুদ্ধকর চলচ্চিত্র দেখে।
এখন এই করোনাকালে হঠাৎ পুরো পৃথিবী যেনো একাকিত্বের স্বাদ পাচ্ছে। একটা অদ্ভুত সময় মানুষদের জীবনযাত্রায়ও এনেছে নানা ধরনের পরিবর্তন। যে মানুষ প্রতিদিন বাইরে বের হতো, সে মানুষ দিনের পর দিন ঘরে বন্দী হয়ে বসে আছে। বাইরে বের হলে তার মনে হচ্ছে, ঘরে ফেরাই বোধহয় ভালো। কেও কেও আবার টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে সেখানে কাওকে কারও কাছাকাছি হতে দেখলেই আঁতকেও উঠছেন। মনে হচ্ছে যেনো, ওরা এতো কাছে আসছে কেনো? এ রকম একটা অবস্থায় অনেকেই দিনের একটা বড় সময় কাটাচ্ছেন মুভি দেখে। অনেক দিন ধরেই যারা মনে মনে ভাবছিলেন, অবসর পেলেই দেখে নেবেন কোনো একটি সিনেমা, তাঁদের ভাগ্য এবার খুলে গেছে। পুরোনো তিনটি ছবির কথা বলা যাক। অনেকেই দেখে নিয়েছেন আগেই, কেও কেও দেখার সুযোগও খুঁজছিলেন। এখন ছবিগুলো দেখলে নতুন কিছু উপলব্ধি হবে আপনার তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, নিজের কোনো না কোনো অনুভূতির সঙ্গে এখন প্রত্যক্ষ যোগাযোগ পাওয়া যেতেই পারে চলচ্চিত্রগুলোর।
‘ক্যাস্ট অ্যাওয়ে’
রবার্ট জেইমেকিস পরিচালিত ‘ক্যাস্ট অ্যাওয়ে’ ছবি। ২০০০ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি বারবার দেখা যায়। টম হ্যাংকস এ ছবিতে অভিনয় করেছেন চাক নোল্যান্ড চরিত্রে। ফেডএক্স-এর একজন ইন্সপেক্টরও তিনি। একটা ব্যস্ত জীবন কাটান তিনি। তবে হঠাৎ করেই একটা বিমান দুর্ঘটনা তাকে ছুড়ে ফেলে দেয় এক মনুষ্যহীন দ্বীপের মধ্যে। স্যুট-বুট পরে, দাড়ি কামিয়ে অফিস করা এই মানুষটি সেই দ্বীপে কয়েক বছর বাস করার পর হয়ে যান অন্য এক মানুষ। দাড়ি তখন তার কাছে কোনো দুর্ঘটনা নয়। হারপুন দিয়ে মাছ ধরায় অভিজ্ঞতাও হয় বাঁচার প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেওয়ার পর। ছবির কাহিনী শুরু হয় মস্কোয় ফেডএক্সের একটি অফিস খোলার মধ্যদিয়ে। এই ধরনের কাহিনীর মূল পথিকৃৎ রবিনসন ক্রুসো। তবে টম হ্যাংকস এই ছবিতে দারুণ অভিনয় করেছেন। অস্কারটা পাওনাও ছিল তাঁরই। তবে সে বছরই গ্ল্যাডিয়েটর ছবিতে অভিনয় করে রাসেল ক্রো জিতে নেন সেই পুরস্কারটি। এই ছবি অনুসরণ করলে দেখা যায়, একাকিত্ব মানুষের মনকে চূর্ণবিচূর্ণ করে, তবে নিয়মানুবর্তিতা, ধৈর্য, বিশ্বাস ইত্যাদির প্রতি আগ্রহীও করে তোলে একজন মানুষকে।
‘মিজারি’
স্টিভেন কিংয়ের উপন্যাস হতে তৈরি হয়েছে ‘মিজারি’ চলচ্চিত্রটি। এ যেনো এক শ্বাসরুদ্ধকর ছবি। কাহিনীটা একটু বলা যাক। পল শেলডন (জেমস কান) নামের একজন বিখ্যাত লেখক গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হন। তাকে উদ্ধার করেন অ্যানি বিলকস (ক্যাথি বেটস) নামের জনৈকা নারী। এই মেয়েটি পলের ভীষণ ভক্ত। তিনি একজন নার্স। তাই তিনি পলকে দ্রুতই সারিয়ে তুলতে থাকেন। পরম সেবা দিয়ে পলকে সারিয়ে তোলার পর এক ধরনের ভালো লাগা থেকেই পল তার এখনও ছাপা না হওয়া একটি উপন্যাস পড়তে দেন অ্যানিকে। উপন্যাসের নায়িকাকে পল মেরে ফেলেন। অ্যানি জোর করতে থাকেন, পল যেনো নায়িকাকে বাঁচিয়ে দেন। এবং এই দাবি নিয়ে তিনি পলকে বন্দীও করে রাখেন। ছবির কাহিনী এখানে বলে দেওয়া ঠিক হবে না। শুধু বলা যায়, এই শক্তিশালী চরিত্রটি স্টিভেন কিং কেটি বেইটসের জন্যই তৈরি করা এবং এই চরিত্রে অভিনয় করে কেটি পেয়েছিলেন অস্কার পুরস্কার। রব রাইনার পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯০ সালে।
‘গ্র্যাভিটি’
আরেকটি যে ছবির কথা আজ আপনাদের বলবো, দেখে থাকলেও সেটা আরেকবার দেখবেন স্রেফ এই কারণে যে সান্দ্রা বুলককে এই ছবিতে বারবার দেখলেও চোখ ও মনের আশ মিটবে না। সত্যিই একাকিত্ব কাকে বলে ও সেটা কীভাবে প্রকাশ করতে হয়, তা জানার জন্যই সান্দ্রার কাছে যেতেই হয়। আলফাঁসো কুয়ারন ‘গ্র্যাভিটি’ ছবির জন্য পরিচালক হিসেবে অস্কারও পেয়েছেন, এই কথা বললেই শুধু ছবিটি সম্পর্কে কিছুই বলা হবে না। হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরন ছবিটি সম্পর্কে বলেছেন যে, ভরহীন পরিবেশে কীভাবে একজন নারী টিকে থাকার চেষ্টা করতে পারে, আলফাঁসো ও সান্ড্রা একসঙ্গে খুব সুন্দরভাগে তা ফুটিয়ে তুলেছেন এই ছবিতে। ২০১৩ সালে অনেকগুলো পুরস্কার জেতা এই ছবিকে মহাকাশবিদ্যা-সম্পর্কিত ছবিগুলোর মধ্যে সেরা বললেও বেশি বলা হবে না। দেখে ফেলুন এই ছবি সহ ৩টি ছবিই।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।