দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার কথা অনেকেরই হয়তো মনে আছে। তখন রাজধানীও ডুবে গিয়েছিলো সেই বন্যায়। আজ রয়েছে ৮৮ সালের বন্যাসহ বাংলাদেশের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির বিশেষ প্রতিবেদন।
সাধারণভাবে বাংলাদেশে মার্চ হতে সেপ্টেম্বর মাস বর্ষা ঋতু। এই সময় প্রধান প্রধান নদী ও উপনদীগুলো হিমালয়ের বরফগলা এবং বৃষ্টিতে পানির উচ্চ প্রবাহে প্রবাহিত হয়ে বন্যায় প্লাবিত হয়। তবে এ বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২১টি জেলায় ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বাড়ছে পানি। বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যেও বেশ উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে। আরও দুই সপ্তাহ অর্থাৎ আগস্টের আগে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহ বেশ কয়েকটি বন্যা হয়েছে। আজ জেনে নিন সেইসব বন্যা সম্পর্কে।
বাংলাদেশে ১৯৮৭ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বন্যায় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেছিলো। প্রায় ৫৭ হাজার ৩০০ বর্গ কিমি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় (সমগ্র দেশের ৪০% এরও অধিক এলাকা)। এই ধরনের বন্যা ৩০-৭০ বছরে একবার ঘটে থাকে। দেশের ভিতরে ও বাইরে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতই ওই বন্যার প্রধান কারণ ছিল। ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিমাঞ্চল, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র একীভূত হওয়ার কারণে নিন্মাঞ্চল, খুলনার উত্তরাংশ এবং মেঘালয় পাহাড়ের সংলগ্ন অঞ্চলসমূহ বন্যা কবলিত হয়।
১৯৮৮ সালের বন্যা ছিলো বাংলাদেশে সংঘটিত প্রলংকারী বন্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম বা ভয়াবহ বন্যা। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সংঘটিত ওই বন্যায় দেশের প্রায় ৬০% এলাকা ডুবে গিয়েছিলো। বেশ কয়েকটি স্থানে এই বন্যা ১৫ হতে ২০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এটি ছিলো বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক এবং ক্ষয়-ক্ষতিময় ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিশ্বব্যাপী গণ-মাধ্যমেও সেই সময় এই দুর্যোগটি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও সক্ষম হয়। বন্যার মূল কারণ ছিলো সারা দেশে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত। একই সময় দেশের ৩টি প্রধান নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হয়। এই বন্যায় বাংলাদেশের প্রায় ৮২ হাজার বর্গ কিমি (সমগ্র দেশের ৬০% এরও অধিক) এলাকা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো।
১৯৯৮ সালের বন্যাও হয় আগস্ট মাসে। এই বন্যায় ৬৮ শতাংশ এলাকার ১ লাখ ২৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিলো। বন্যার ব্যাপ্তি অনুযায়ী এটি ১৯৮৮ সালের বন্যার সঙ্গেই তুলনীয়। ব্যাপক বৃষ্টিপাত, একই সময় দেশের ৩টি প্রধান নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে এবং ব্যাক ওয়াটার এ্যাফেক্টের কারণে এই বন্যা ঘটেছিলো।
২০০৪ সালে বন্যা হয়েছিলো জুলাই মাসে। এই বন্যায় বাংলাদেশের ৩৮ শতাংশ এলাকার ৫৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছিলো, ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছিলো ব্যাপক।
২০০৭ সালের বন্যাকে বলা হয় মহাবন্যা। ২০০৭ সালের বন্যা হয়েছিলো সেপ্টেম্বর মাসে। এই বন্যায় দেশের ৪২ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছিলো। যার মোট আয়তন হলো ৬২ হাজার ৩০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।
এলাকাভেদে বাংলাদেশে ২০১৭ সালের বন্যাও ‘ভয়াবহ’ এবং ‘অতি ভয়াবহ’ পর্যায়েই ছিল। তবে ১৯৮৮ এবং ১৯৯৮ সালের বন্যার তুলনায় ২০১৭ সালের বন্যাকে সারা দেশের জন্য ভয়াবহ বলা যাবে না। তবে পানিপ্রবাহ এবং ক্ষয়ক্ষতি বিবেচনায় বন্যাকে এলাকাভিত্তিক হিসাবে ভয়াবহ হতে অতি ভয়াবহ বলা যায়। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অতি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিলো। এসব জেলায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে অনেক। বন্যার পানির তোড়ে সড়ক, মহাসড়ক, বেড়িবাঁধ এবং রেললাইন বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। একই মাত্রার বন্যা হয়েছে এবার ভারত, নেপাল এবং ভুটানে। বাংলাদেশের এবারের বন্যাও একেবারে কম ভয়াবহ নয়। ইতিমধ্যেই ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বন্যায়। আগামী দুই সপ্তাহ থাকবে এর তীব্রতা। লাখ লাখ মানুষ পানি বন্দি। খাবার পানির সংকট। পশু পাখি নিয়ে মানুষ বাঁধ বা উঁচু স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকলেও বহু মানুষ নিরন্ন জীবন যাপন করছেন। এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে এবারের বন্যাকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা যাবে এই কারণে আর তা হলো করোনার প্রকোপের মধ্যে বন্যা। মানুষ সাহায্য দেওয়ার জন্যও যেতে পারছেন না।
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on জুলাই ২৬, ২০২০ 11:41 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…