দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ রক্তঝরা ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। আজকের এই দিনে কিছু উচ্ছৃংখল সেনা কর্মকর্তারা নির্মমভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করে।
জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধাভরে এই দিনটি পালন করছে। সরকারি-আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত পরিসরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামীলীগ ও এর সঙ্গ সংগঠন মিলাদ মাহফিল, কোরআন খানি ও শোক সভার আয়োজন করেছে। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য দেশের মানুষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
কী ঘটেছিল ১৯৭৫ এর এই দিনে
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সেদিন যে বীভৎস ঘটনাটি ঘটে, তা স্মৃতিতে আনলে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট খুনিও আঁতকে উঠবেন। সেদিন কাপুরুষোচিত আক্রমণ চালিয়ে পৈশাচিক পন্থায় ঘাতকরা রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের এই বাসভবনটিতে। সেদিন ওই ভবনের প্রতিটি তলার দেওয়াল, জানালার কাচ, মেঝে, ছাদে রক্ত, মগজ এবং হাড়ের গুঁড়ো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। সেছিলো যেনো এক বিভৎস্য দৃশ্য। রক্তগঙ্গা বয়ে যায় পুরো বাড়িটিতে। গুলির আঘাতে দেওয়ালগুলোও ঝাঁঝরা হয়ে যায় সেদিন। চারপাশে রক্তের সাগরের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল ঘরের সব জিনিসপত্র। প্রথম তলার সিঁড়ির মাঝখানে নিথর পড়ে ছিলেন ঘাতকের বুলেটে ঝাঁঝরা হওয়া চেক লুঙ্গি ও সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর তলপেট এবং বুক ছিল বুলেটে ঝাঁঝরা। নিথর দেহের পাশেই পড়ে ছিল তাঁর ভাঙ্গা চশমাটি। অভ্যর্থনা কক্ষে শেখ কামাল, টেলিফোন অপারেটর, মূল বেডরুমের সামনে বেগম মুজিব, বেডরুমে ছিলেন সুলতানা কামাল, শেখ জামাল, রোজী জামাল, নিচতলার সিঁড়িসংলগ্ন বাথরুমে শেখ নাসের ও মূল বেডরুমে দুই ভাবীর ঠিক মাঝখানে বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলের মৃতদেহ। লুঙ্গিতে জড়ানো শিশু রাসেলের রক্তভেজা লাশ দেখে খুনিদের প্রতি চরম ঘৃণা-ধিক্কার জানানোর ভাষাও খুঁজে পাওয়া বড়ই দুষ্কর হয়ে পড়ে মানবতাবাদী বিশ্বের প্রতিটি মানুষের পক্ষে।
সেদিন দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা। সেই সময় স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানির কার্লসরুইয়ে সন্তানসহ অবস্থান করছিলেন শেখ হাসিনা। শেখ রেহানাও সেই সময় বড় বোনের সঙ্গেই ছিলেন।
জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে এই দিনটিকে স্মরণ করছে। করোনার কারণে সংক্ষিপ্ত ও দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।