দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বয়সে এসে বিয়ের সিদ্ধান্তে অনেকেই নানা কুমন্তব্যও করেছেন। তবুও তার সিদ্ধান্ত বদলাননি। নিঃসঙ্গতা কাটাতে ৭২ বছর বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন ভারতের শ্রীরামপুরের বড়বাগানের বাসিন্দা কলেজশিক্ষক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ।
কোলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক মাস পূর্বে সংবাদপত্রে বিয়ের জন্য পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ। বিজ্ঞাপনের সূত্রে রিষড়ার বাসিন্দা ইরা রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। গত ২৭ জুলাই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেন তারা। গত সোমবার সমরেন্দ্রবাবুর ফ্ল্যাটে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। পুরুষ পুরোহিত নন, সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করে বিয়ে দেন কবি মীনা রায়।
সমরেন্দ্র ২২ বছর রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজে বাংলার শিক্ষক ছিলেন। ২০০৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তার পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তও ছিলেন। তিনি বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানের কালনায় বেসরকারি বিএড কলেজের অধ্যক্ষ। স্ত্রী মারা গেছেন আরও আগেই। মেয়েও বিদেশে থাকেন। যে কারণে তাকে একাই থাকতে হতো।
সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সঙ্গীর অভাবও বোধ করছেন। ছাত্রছাত্রী, পরিচিতরা তাকে রান্না করে দিতেন। তবে লকডাউনের শুরুতে বেশ সমস্যায় পড়েন। দুই দিন কার্যত না খেয়েও কাটাতে হয় তাকে। পরে হোম-সার্ভিসের মাধ্যমে খাবার আনাতে হয় তাকে। তার কথায়, ‘আমি সুস্থ ও সবল। তবে ভবিষ্যতে অসুস্থ হলে বা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলে পাশে কেও থাকলে সুবিধা হবে। আমি এতোদিন চাকরি করেছি, আমার অবর্তমানে স্ত্রী আমার পেনশনও পাবেন। যে কারণে তার দিন ভালোভাবেই চলে যাবে।’
বর্তমানে কনে ইরা রায়ের বয়স ৩৬ বছর। তার বাবা মারা গেছেন। তাই মা-মেয়ের অনটনের সংসার। কোলকাতায় একটি সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। বছর খানেক আগে সংস্থাটি বন্ধ হয়ে গেছে। ইরা বলেন, ‘ভেবেছিলাম, আর বিয়ে করবো না। এক আত্মীয় কাগজে বিজ্ঞাপনের কথা জানিয়েছেন। সব দেখে মনে হলো সুযোগ যখন এসেছে, তখন দেখি। এমন শিক্ষিত, রুচিশীল মানুষই আমি চেয়েছিলাম। তাই আমি খুশি।’
সমরেন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘কিছু কিছু মানুষ যেমন কুমন্তব্য করেছেন, আমার পরিস্থিতি বুঝে অনেকেই আবার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগতও জানিয়েছেন।’
এদিকে বয়স্কদের মন, তাদের নিঃসঙ্গতা কাটানো নিয়ে কাজ করছেন অমিতাভ দে সরকার। সমরেন্দ্রনাথের বিয়ের খবর শুনে তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত। তার কথায়, ‘বয়স্কদের সমস্যা, একাকীত্ব বোঝার মানসিকতা আমাদের কারও নেই। অনেকেই এর ভুল ব্যাখ্যা করে থাকেন। তবে এই মানসিকতা এখন বদলাচ্ছে। একাকীত্ব কাটাতে বয়স্ক মানুষজন নিজেদের মনের মতো সঙ্গী খুঁজে নিতেই পারেন। এভাবে কেও যদি ভালো থাকতে পারেন, জীবনে বাঁচার রসদ পেয়ে যান, তাহলে অন্যদের আপত্তি কোথায়! এতে তো আরও খুশি হওয়ারই কথা।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।