দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বড়লোক হওয়ার বাসনা নেই এমন মানুষ মনে হয় খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। বড়লোক হওয়ার জন্য সুদূর আমেরিকায় পাড়ি জমাতে যে কেও উদগ্রীব। আজ সেই বড়লোক হওয়ার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন!
এক বিদেশি গিয়েছিলেন এক গভীর জঙ্গলে। তার উদ্দেশ্য- সেখানকার স্থানীয় মানুষদের মাঝে কিছুদিন থাকবেন। যেহেতু তিনি শেতাঙ্গ, তাই তার প্রতি স্থানীয়দের উৎসাহের যেনো অন্ত নাই। তার সকল কাজকর্মে তারা ভীষণ আনন্দিত হন। একদিন সাহেব বললেন, তিনি বানর কিনতে চান, প্রতিটি ৫ ডলার করে। গ্রামবাসীরা যারপরনাই আশ্চর্য হলেন! বানর আবার কেনে নাকি কেও? যাই হোক ৫ ডলারের আশায় সবাই যতোগুলো সম্ভব বানর এনে দিলেন। সাহেবও প্রত্যেককেই তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিলেন।
পরের মাসে সাহেব বানরের দাম আরও বাড়িয়ে দিলেন। প্রতিটি বানরের মূল্য ধরলেন ১০ ডলার। এবার তো গ্রামবাসীরা সব কাজ ফেলে শুধু বানরের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। ছেলে-বুড়ো-মেয়ে সবাই মিলে শ’য়ে শ’য়ে বানর এনে দিলেন সাহেবকে। এরমধ্যে সাহেবের উদ্ভট খেয়ালের কথা বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে; অনেক দূর-দূরান্ত হতে মানুষ কষ্ট করে বানর নিয়ে আসেন।
এখন যেহেতু সবাই ধরে ফেলছে বলে জঙ্গলে বানরের সংকট দেখা দিলো। বানর খুঁজতে মানুষকে অনেক গভীরে যেতে হয়। অবস্থা বুঝে সাহেব তাই বানরের দাম আরও বাড়িয়ে দিলেন। একেকটা বানরের জন্য এখন থেকে ২৫ ডলার দেওয়া হবে। এদিকে সাহেবের বাসার সামনে খাঁচায় রাখা বানরের সংখ্যা এখন ছাড়িয়েছে হাজারে। এতোগুলো বানর সামলানোর জন্য সাহেব শহর হতে একজন অ্যাসিসটেন্ট আনালেন।
তবে অচিরেই দেখা গেলো যে বানর আর পাওয়া যাচ্ছে না। ২৫ ডলার থেকে দাম বাড়াতে বাড়াতে সাহেব ৭০ ডলার পর্যন্ত দাম হাঁকাতে থাকলেন। টাকার লোভে গ্রামবাসীর এখন রাতের ঘুম হারাম করে দিলেন। সবাই সর্বস্ব ছেড়েছুড়ে এখন জঙ্গলে শুধু বানর খোঁজে নেমে পড়লেন। তবে কারও ভাগ্য ভালো থাকলে দিনশেষে মাত্র এক/দুইটা বানর জুটতো। তো একদিন সাহেব বললেন যে, তিনি কিছুদিনের জন্য শহরে যাবেন। এসে তিনি প্রতিটি বানরের জন্যই ২০০ ডলার করে দাম দেবেন। অতএব সবাই যেনো বানর জোগাড় করে রাখে। সাহেবের কথায় লোকজনের তো মুখে লালা ঝরতে শুরু করলো! এক বানরের জন্য ২০০ ডলার! এ তো যেনো সারা বছরের ইনকাম! তবে প্রস্তাব যতোই লোভনীয় হোক না কেনো বানর তো পাওয়া চাই।
বানর না পেয়ে সবাই যখন দিশেহারা মতো অবস্থা দাঁড়ালো ঠিক তখনই সাহেবের অ্যাসিসটেন্ট নিয়ে এলো চমৎকার একটা প্রস্তাব। গ্রামবাসীকে সে বললো, সাহেবের খাঁচা থেকে সবাইকে সে একটা করে বানর দেবে, তবে তাকে বিনিময়ে ১৫০ ডলার করে দিতে হবে। এতে করে পরে ২০০ ডলারে বিক্রি করলে তাদের ৫০ ডলার করে লাভ থাকবে। সবাই তো তক্ষুণি রাজি। লোকজন যে যেমন পারলো টাকা জোগাড় করলো, কেও জমি বিক্রি করলো, কেওবা গরু কিংবা গয়না, কেওবা পাশের গ্রাম থেকে ঋণ নিলো। এভাবে গ্রামের প্রত্যেকেই অ্যাসিসটেন্টের কাছ থেকে বানর কিনে নিলো। সাহেবের রেখে যাওয়া বানরের খাঁচা অবস্থা তখন শূন্য।
তাহলে এই গল্পর শেষটাও কী বলতে হবে? পরদিন সকালে ওই অ্যাসিসটেন্টকে আর পাওয়ায় যায়নি। আর সাহেব কোথায়? উনি তো কবেই চলে গেছেন। শেষ পর্যন্ত সাহেব ও তার এসিসটেন্ট হলেন কোটিপতি, গ্রামের লোকজন হলেন কপর্দকশূন্য। এই গল্পটা শুনলে হাসি পাওয়ার কথা তাই না? মনে হয় না- ‘আহারে, লোকগুলো কতোই না বোকা’? এই সহজ ফাঁকটুকু ধরতে পারলো না তারা? কী নির্বোধ, কী আহাম্মক এরা!
এবার আসছি পেছনের ঘটনায়। এই গল্পটা স্যার বলেছিলেন আমাদের দেশের কিছু ব্যবসার ধরণ বোঝানোর জন্যই। এই আহাম্মকী আমরা করি, কারণ আমরা খুব সহজেই বড়লোক হতে চাই। বছরের পর বছর ধরে জমানো টাকা উচ্চ মুনাফার লোভে এসব কোম্পানীতে বিনিয়োগ করে থাকি। বিচার-বিশ্লেষণ করে বের করা হয় কোনও কোম্পানিতে? না; অমুক ভাবী অমুক কোম্পানিতে টাকা খাটিয়ে বছর শেষে ৪০,০০০ টাকা লাভ করেন– অতএব তারাও ওখানেই বিনিয়োগ করবেন। কেও বাবার পেনশনের টাকা, কেও জমি কিংবা মায়ের গয়না বিক্রির টাকা বিনিয়োগ করেন। কেনো? সবার লোভ হলো কীভাবে টাকা দ্বিগুণ-তিনগুণ করা যাবে। অনেক মাঝবয়েসী লোক একটা নিরাপদ চাকরি ছেড়ে দিনরাত এইসব ঝুঁকিপূর্ণ খাতে লেগে থাকেন। ছেলে-মেয়ে বা স্ত্রীর ভবিষ্যতের কথা বেমালুম তারা ভুলে সমস্ত সঞ্চয় ঢেলে দেন। বিনিয়োগের ব্যাপারেও কেও কী কোনো চিন্তাভাবনা করেন? সবাই চলে হুজুগে। অমুকের এক পরিচিত ভাই আছেন এক জায়গায়, উনি বললেন বিনিয়োগ করতে অতএব সবাই মিলে হুমড়ি খেয়ে পড়ি তখন।
সারা দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি বেতনের চাকরিগুলোর একটিই হলো স্টক-মার্কেট এনালিস্টদের চাকরি। দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান থেকে সেরা রেজাল্ট করা ছেলে-মেয়েরা এই পেশায় ঢুকে পড়েন। বাংলাদেশেও ফিন্যান্স/ ইকোনমিক্সের সবচেয়ে মেধাবী তরুণরা এই পেশা বেছে নিয়ে থাকেন। কারণ হলো অন্য পেশায় যে বেতন আমার হয়তো তা হবে ১০ বছর পর, তারা ওই বেতন নিয়ে চাকরিতে জয়েন করেন। এটা বলার কারণই হলো, এতো টাকা দিয়ে ক্ষুরধার বুদ্ধির ছেলেদের কখন একটা চাকরি দেওয়া হবে? যখন সেটার দায়িত্ব ততোটা ভারি হবে– ঠিক তখন। কাজেই যে কাজটা এতোটা কঠিন, যেটা বুঝতে এতোটা যোগ্যতা লাগে, সেটা আমরা কীভাবে অবলীলায় করে ফেলি? কীভাবে ভাবি যে, “অমুক ভাই” বলছে দেখে অমুক শেয়ারের দাম বাড়বে? এটা বুঝি না বলেই তো আমরা সর্বস্ব হারাই, অনশন করে রাস্তায় বসে থাকি, রাগের বশে গাড়ি ভাঙচুর করে বসি–তবে আমাদের যা চলে গেছে তা কি ফেরত আসে?
উল্টো ঘটনাও কী ঘটে না? অবশ্যই ঘটে। এক কলোনিতে এক সরকারি অফিসার ছিলেন। তাকে খুব কমই আমরা দেখেছি নতুন শার্ট গায়ে দিতে। তার সংসারও ছিল খুব সাধারণ; তার বড়ছেলের জামা মেজোটা গায়ে দিতো, মেজোটার পরা হলে ছোটটা। এমন যার অবস্থা তাকে মাত্র ২ বছর পর দেখে আমি সত্যিই চিনতে পারিনি। বাসায় তার ফার্নিচার আসে মালয়েশিয়া হতে, গ্যারেজে শুধু গাড়িই রয়েছে ৪/৫ কোটি টাকা দামের। তাহলে রহস্য কী? উচ্চ মুনাফা তার ভাগ্য খুলে দিয়েছে। এখন সবাই যদি ভাবি যে তার মতো আমারও ভাগ্য খুলে যাবে ও সবকিছু তুলে ঢেলে দেই, তাহলে সেটি কী কখনও বুদ্ধিমানের কাজ হবে? কখনও নয়। -একুশে টেলিভিশন অবলম্বনে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।