দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধ্বস্ত পুরো ভারত। প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যু ঘটছে হাজার হাজার মানুষের। এমন অবস্থায় এক যুবক গাছের ডালে মাচা বানিয়ে আইসোলেশনে গেলেন!
মহামারি করোনার তাণ্ডবে দিশেহারা ভারত। এতো লাশ চিতায় পোড়ানোর ব্যবস্থা না করতে পেরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে করোনায় মৃতদের।
এদিকে দেশটিতে করোনা রোগীর জন্য জরুরি প্রয়োজনীয় অষুধের অপ্রতুলতাও দেখা দিয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার যেনো সোনার হরিণে পরিণত। করোনা রোগীর ভিড়ে ভারতজুড়ে হাসপাতালের বেডের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে, সেফহোম কিংবা আইসোলেশন সেন্টারেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে আইসোলেশন সেন্টার এবং চিকিৎসার অভাবে নিরুপায় হয়ে গাছের ডালে মাচা বানিয়ে আইসোলেশনে থাকছেন দেশটির জনৈক যুবক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সেই করুণ চিত্র।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, আইসোলেশন সেন্টার এবং চিকিৎসার অভাবে নিরুপায় হয়ে গাছের ডালে মাচা বানিয়ে আইসোলেশনে থাকছেন শিবা নামে জনৈক যুবক।
জানা যায়, ভারতের তেলেঙ্গানার নলগোন্ডা জেলার কোঠানন্দিকোন্ডা গ্রামে একটিও সরকারি কোভিড সেন্টার নেই। তাই সে গ্রামের সব মানুষের একই অবস্থা হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় শহুরে মানুষ যেসব পরিষেবা পান সেগুলো সবই যেনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে কোঠানন্দিকোন্ডা গ্রামের বাসিন্দাদের। শুধু করোনা পরিস্থিতিই নয়, যে কোনো প্রয়োজনে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হলে যেতে হবে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে।
শিবা বলেছেন, আমাদের গ্রামে মাত্র দুদিন হলো আইসোলেশন সেন্টার বানানো হয়েছে। তবে সেটা এখনও অনুপযুক্ত। আশপাশের গ্রামগুলোতে আইসোলেশন সেন্টার নেই। এমনকি কোনো হাসপাতালও নেই। করোনা সম্পর্কে আমার গ্রামের মানুষরা এখনও সচেতন নয়। এমনকি তাদের কোনো ধারণাও নেই যে, দেশের করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। আমি করোনায় আক্রান্ত হলে গ্রামের কেওই আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। এদিকে বাড়িতে আলাদা থাকার মতো ঘরও নেই। তাই করোনা যেনো আমার গ্রামে না ছড়ায় সেজন্যই গাছের মগডালে মাচা বানিয়ে থাকছি। নিজেকে সবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছি।
উল্লেখ্য যে, শিবার শরীরে গত ৪ মে করোনা শনাক্ত হয়। বিভিন্ন হাসপাতাল এবং আইসোলেশন সেন্টারে ঘুরেও জায়গা পাননি তিনি। বাড়িতে আলাদা ঘর না থাকায় বাধ্য হয়েই গাছের ডালে থাকছেন শিবা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।