ভারত এবার ককটেল ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় নামলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতে বর্তমানে কোভিশিল্ড, কোভ্যাকসিন ও স্পুটনিক মূলত এই ৩টি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দেশটির নীতি আয়োগ ইতিমধ্যেই অনুমতি দিয়েছে।

সম্প্রতি দেশটির ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) কেন্দ্রের কাছে ককটেল ভ্যাকসিন পরীক্ষার অনুমতি চান। দেশটির নীতি আয়োগ সেই অনুমতি দিয়েছে। নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। দক্ষিণ ভারতের ভেলোরে ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে ককটেল টিকার পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়।

এনডিটিভির বরাতে ডয়চে ভেলে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইতিপূর্বে ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর মেডিক্যাল রিসার্চও (আইসিএমআর) এই পরীক্ষা করে। ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে সেই পরীক্ষা করার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক শেষ পর্যন্ত নিজেদের নাম সরিয়ে নেন। যে কারণে বড় আকারে পরীক্ষাটি করা সম্ভব হয়নি। আইসিএমআর অবশ্য তাদের রিপোর্টে ককটেল টিকার গুরুত্বের কথা প্রকাশও করেছে। ডিসিজিআই এই বিষয়ে জানিয়েছে, আরও বড় আকারে তারা এবার পরীক্ষাটি করবে।

এদিকে গত কয়েকমাসে ভারতে টিকাকরণ গতি পেয়েছে। বহু মানুষই দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন। তবে তাতেও করোনা রোধ করা যাচ্ছে না। দুই ডোজ টিকা পেয়েও ডেল্টা সংস্করণে আক্রান্ত হয়েছেন অনেক মানুষ। ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য হলো, এখন যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তাতে ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস ভেরিয়েন্টকে আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।

এমন এক পরিস্থিতিতেই তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে নতুন ঢেউকে প্রতিহত করতে নতুন নতুন পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তারই অন্যতম পরীক্ষা হলো এই ককটেল টিকা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যেই ককটেল টিকা দেওয়া শুরুও হয়েছে। তবে ভারতে এখনও করা হয়নি। ভারতে মূলত যে টিকাগুলি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলিকে নিয়েই তাই নতুন পরীক্ষার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আইসিএমআর-এর রিপোর্ট বলছে যে, প্রথমে কোভিশিল্ড ও পরে কোভ্যাকসিন টিকা দিলে কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি হতে পারে। ডেল্টা সংস্করণকে রোধ করাও হয়তো সম্ভব হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা শুরু হয়েছে। ডিসিজিআই-ও সেই একই পরীক্ষা শুরু করতে যাচ্ছে। এই মাসেই ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা মতে, ককটেল টিকার পরীক্ষা সাফল্য পেলে বহু মানুষকেই এর সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। কারণ কোভিশিল্ড নিয়ে অনেকেই এখনও দ্বিতীয় ডোজের জন্য অপেক্ষা করছেন। ৬ সপ্তাহ অপেক্ষার পর তারা দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। এর মধ্যে নতুন পরীক্ষা সাফল্য পেলে তাদের ককটেল টিকার সুবিধায় আনা সম্ভব হবে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর

অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।