দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১০ মহররম আজ। মুসলিম ইতিহাসে একটি বিয়োগান্ত ঘটনার দিন। ১০ মহররম কারবালায় যে বিয়োগান্ত ঘটনা ঘটেছিল সেটি মুসলিম ইতিহাসে এক শোকাবহ হিসেবেই পরিগণিত হয়ে থাকে।
আরবী হিজরী বর্ষের প্রথম মাস হলো এই মহররম। ইসলামের ইতিহাসে এই মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মাসের ১০ম দিবসে অর্থাৎ আজকের এই দিনটি বহু ঐতিহাসিক ঘটনা ইতিহাসে প্রসিদ্ধ। আশুরার দিনটি শুধু হযরত হোসাঈন (রাঃ) অথবা অন্যান্য যারা সেইদিন কারবালার ময়দানে শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্বরণে পালন করা হয় সেটিই নয়, এর আরও কারণ হলো, এই মহররম মাসের ১০ তারিখ অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে।
আশুরা হলো আশিরুন-এর বহুবচন। এর অর্থ হলো দশম তারিখের সমন্বয় অর্থাৎ মহররম মাসের ১০ তারিখে সংঘটিত ঘটনাবলী। পৃথিবীর আদি-অন্তের এক ঘটনা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। বিশ্বের সব মুসলমানরা তাইতো তাজিয়া বানিয়ে এই দিনটিকে স্মরণ করে থাকনে। কারবালার ওই শোকাবহ ঘটনা তাড়িত করে প্রতিটি মুসলিম সম্প্রদায়কে।
মহররমের ১০ম দিবসে সংঘটিত ঘটনাবলি:
১. আশুরার এই দিনে সৃষ্টি করা হয় হযরত আদম (আ:) কে। আবার এই দিনেই আবার তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। এই তারিখেই জান্নাত হতে পৃথিবীতে প্রেরিত হন ও বহু বছর পর এই তারিখেই আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমতে তিনি ও বিবি হাওয়া (আ:)-এর পুনরায় সাক্ষাৎ লাভ হয় এবং তাঁদেরকে মার্জনাও করা হয় এই দিনে।
২. হযরত ইদ্রিস (আ.) কে আকাশে উত্তোলন করা হয় এই ১০ মহররম তারিখে।
৩. হযরত নূহ (আ:) কে তুফান ও প্লাবনের পানি হতে পরিত্রাণ দেওয়া হয় এই মহররমের ১০ তারিখে।
৪. হযরত আইয়ুব (আ:) কে ১৮ বছর রোগ ভোগের পর রোগ মুক্তি দেওয়া হয় এই ১০ মহররমের তারিখেই।
৫. হযরত ইব্রাহিম খালীলুল্লাহ (আ:) কে অগ্নিকুণ্ড হতে নিষ্কৃতি দেওয়া হয় আজকের এই ১০ মহররমের তারিখে।
৬. হযরত দাউদ (আ:) কে বিশেষ ক্ষমা করা হয় এবং হযরত সুলাইমান (আ:) কে স্বীয় হারানো বাদশাহী পুনরায় ফেরত দেওয়া হয় এই ১০ মহররম দিবসেই।
৭. এই ১০ মহররম দিবসে ৪০ দিন পর মাছের উদরে থাকার পর হযরত ইউনুছ (আ:) কে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়।
৮. আশুরার আজকের এই দিনে হযরত ইয়াকূব (আ:) স্বীয় হারানো পুত্র হযরত ইউসুফ (আ:) এর সাক্ষাৎ লাভ করেন।
৯. এই ১০ মহররম তারিখে হযরত মূসা (আ:) ফিরাউনের কবল হতে নিষ্কৃতি লাভ করেন।
১০. আশুরার এই ১০ তারিখে হযরত ঈসা (আ:) কে আকাশে উত্তোলন করা হয়।
১১. আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ (স:)-মক্কা শরীফ হতে হিজরত করে মদীনা শরীফে তাশরীফ নেন আশুরার এই ১০ তারিখেই।
১২. এই ১০ মহররম দিবসে নবী করীম (স:)-এর কলিজার টুকরা ফাতেমা (রা:)-এর নয়নমণি হযরত ইমাম হুসাইন (রা:) ও তাঁর ৭৭ জন পরিজন ও ঘনিষ্ঠজন জালিম ইয়াজিদের সৈন্য দ্বারা কারবালা প্রান্তরে, ফোরাত নদীর তীরে নির্মমভাবে শহীদ হন।
তাই এই মাসের এবং এই তারিখের পবিত্রতা ও আশুরার বিশেষত্ব অনেক। মুসলিম ইতিহাসে এই ১০ মহররমের গুরুত্ব তাই
এক অপরিসীম। এমনিভাবে ১০ মহররমের ফজিলত এই মাসের তাৎপর্য রয়েছে অফুরন্ত।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।