হাসানুজ্জামান ॥ বাস,ট্রেন,বিমান,স্টিমার চলছে। হাট,বাজার এমনকি শপিংমল পর্যন্ত খুলে দেয়া হয়েছে। মানুষ অবাধে রাস্তাঘাটে চলাচল শুরু করেছে। চাকুরিজীবীরা কর্মস্থলে ছুটে যাচ্ছেন। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া এখন সময়ের দাবি।
ব্যবসায়িকরা তাদের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবসা দেখভাল করছেন। টুরিষ্টরা বিনোদনের জন্য ছুটেযাচ্ছে। বিনোদনকেন্দ্র কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান, সুন্দরবন খুলে দেয়া হয়েছে। জীবনতো চলমান। জীবন থেমে থাকার নয়।
শুধুই বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনেকেই আশান্বিত ছিল সরকার সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিবে এ নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে দিন যত যাচ্ছে সরকারের উপর চাপ ততই বাড়ছে। সরকার এ বিষয় নিয়ে কেন এতো দ্বি-ধান্বিত সেটাও ভাববার বিষয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিন দেওয়া নিশ্চিত করা দরকার। পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত টিকা দেওয়ার টার্গেট ছিল। সরকার এখন আঠার’তে নেমে আসার কথাও বলছেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বয়স বিষয় নয়। তার অর্থ এমন দাঁড়ায় যে কলেজ থেকে পাশ করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তারাই এই সূযোগ গ্রহণ করতে পারবে। স্কুল থেকে কলেজে উঠতে সময় দরকার হয় চৌদ্দ থেকে পনের বছর। তার মানে সরকারের নিয়ম মেনে কলেজের ছেলে-মেয়েরা ভ্যাক্সিনের এই সুবিধা নিতে পারছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রধান শর্ত হিসাবে ভ্যাক্সিন নেয়া না নেয়াকে যদি গুরুত্ব দেয়া হয় তাহলে কলেজ খুলে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরে মাধ্যমিক,প্রাথমিকতো আছেই। এখনতো আবার শিশুরাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিন দেয়ার বিষয়টি আরো আগে ভাবা উচিত ছিল। ভ্যাক্সিন দেয়াটা নিশ্চিত করতে পারলে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া সহজ হতো। ইতোমধ্যে দেশে দুই থেকে আড়াইকোটি মানুষ ভ্যাক্সিন নিয়েছে। কিন্তু সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন খুলে দেয়া হবে না এনিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডায় নানা কথা শোনা যাচ্ছে। নিন্দুকেরা বলাবলি করছে, একবার ঢাকাতে বাস দূর্ঘটনায় দুজন ছাত্রের মৃত্যুতে ছাত্রদের মাঝে যে আন্দোলন তৈরি হয়েছিল সেই আন্দোলন দমাতে সরকারকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। সেই সময়ে পুরো ঢাকার রাস্তার দখল ছাত্রদের হাতে চলে যায়। দেশের একশ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা আইন মানতে চায় না। রাস্তায় চলাচল করে তাদের ইচ্ছামত। ছাত্ররা তাদেরকে ছাড় দেয়নি। তাদেরকে বিনয়ের সাথে দেখিয়ে দিয়েছে রাস্তায় চলতে হলে রাস্তার নিয়ম মেনেই চলতে হয়। আইন সকলের জন্য সমান এ কথা বুঝিয়ে দিয়েছে ছাত্ররা। এমন বাস্তব অভিজ্ঞতা সরকারের মন থেকে সহজে মুছে যাবার নয়।
দেশের স্কুল কলেজ খুলে দিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ছাত্রদের মৃত্যু যে ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়। সেই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ছাত্ররা যে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে না তা কি বলা যায়? বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও রাস্তায় নামার প্রহর গুণছে। ছাত্রদের আন্দোলনের মাঝে রাজনৈতিক দলের কর্মীরা ঢুকে পড়লে পরিস্তিতি কোন পথে যাবে? ফলে এমন ঘটনা সরকারের জন্য বড় ধরণের বুমেরাং হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এসব বিষয়গুলো সরকার ভাবতেই পারে।
দেড় বছর হতে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে যেতে পারছে না। পড়াশোনা থেকে তারা এখন অনেক দূরে। খেলাধূলা, আড্ডা সবকিছুই বন্ধ। এই জীবনতো স্বাভাবিক জীবন নয়। অনেকেই অসুস্থ হয়ে উঠেছে। তারপরেও প্রহর গুণছে সরকার কখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়। দেশের কোথাও কোথাও ছাত্ররা রাস্তায় নেমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবীতে মানববন্ধন, পথসভা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খোলামাঠে ক্লাশ নেয়ার দৃশ্যও দেশবাসী দেখেছে। সবার নজর এখন স্কুল-কলেজের দিকে। ছেলে-মেয়েদের একটিই দাবি তারা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে পড়াশোনা করতে চাই।
# লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক।
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on আগস্ট ২৯, ২০২১ 10:51 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রণ বিষয়ে চিকিৎসকরা মনে করেন, অ্যাডাল্ট অ্যাকনির নেপথ্যে মূল কারণ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সেরা প্রযুক্তি আও উদ্ভাবনের জোরে বিনোদনের সংজ্ঞাকে প্রতিনিয়ত পাল্টে দিচ্ছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভিটামিন বি১২ শরীরের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ পরিচালনা করে। তাই এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (সোমবার) আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গত ৩ দিনে…