দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি জাতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে রায়ের বাজার বদ্ধভূমির স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এই শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সকালে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালেহ উদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী সকাল ৭টা ৫ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর স্পীকার এবং ডেপুটি স্পীকারের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারাও।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে গত বছরের মতো এবারেও সীমিত পরিসরে এই দিনটি পালিত হচ্ছে।
তারপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও মিরপুর ও রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে জাতীয় নানা কর্মসূচি। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
দেশের সব জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও জাতীয় দৈনিক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে ছিলো শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ও সকাল ৯টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
একাত্তরে ৩০ লাখ শহীদের মধ্যে বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যার ঘটনা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। তারা শহীদ হন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর এক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে। হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী তাদের পরাজয় আসন্ন জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যেই বুদ্ধিজীবী নিধনের এই পরিকল্পনা নিয়েছিলো।
১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর চোখ বেঁধে নিজ নিজ বাড়ি হতে অপহরণ করা হয় অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী এবং লেখকসহ এদেশের দুই শতাধিক কৃতী সন্তানকে। প্রথমে তাদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে টর্চার সেলে নিয়ে যায়।
পরবর্তীকালে নতুন উদীয়মান বাংলাদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করার জন্য তাদের বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিয়ে, বিশেষ করে রায়েরবাজার ও মিরপুরে হত্যা করা হয়।
এইসব শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা.আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন,অধ্যাপক আনোয়ার পাশা,অধ্যাপক রশীদুল হাসান, ড.আবুল খায়ের, ড.মুর্তজা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সাংবাদিক সেলিনা পারভিনসহ আরও অনেকেই।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।