দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যে পানি মানুষের জীবন রক্ষা করে! সেই পানিই এক নারীর জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। পানিতে অ্যালার্জি থাকায় দুঃখ পেলেও কাঁদতে পারেন না তিনি!
ওই নারীর গোসল তো অনেক দূরের কথা, গা মোছাও তার কাছে রীতিমতো মৃত্যু যন্ত্রণার শামিল। দূঃখে কান্না পেলেও তাকে থেমে থাকতে হয়। কারণ সেই অশ্রু চোখ থেকে গড়িয়ে গালে-গলায় নামলেই পুড়বে তার ত্বক। জ্বলবে তার শরীর!
প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙার পর পানির বোতলের দিকে হাত বাড়ান সবাই। সাত সকালে গলা শুকোলে তিনিও পানি খেতে বাধ্য হন। তবে সেই পানি জিভ ছুঁয়ে গলায় নামলে মনে হয় পানি নয়, যেনো বিষ পান করছেন। তিনি অন্য কোনও বিশ্বের মানুষ নয়, তবে তার দুনিয়াটা একেবারেই আলাদা। তার নাম হলো রেচেল উইক। রেচেলের পানিতে চরম অ্যালার্জি।
রেচেলের এই পানিতে অ্যালার্জির অসুখের একটি নাম রয়েছে- অ্যাকোয়াজেনিক আর্টিসারিয়া। এর উপসর্গ হলো সারা শরীরে একেবারে বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়ার মতো জ্বালা করে। তার সঙ্গে ঘুসঘুসে জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ সরসর করা, মাথার যন্ত্রণা, হাঁচি, বুকে সর্দি বসার মতো ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গও থাকে। এই সব কিছু রেচেলকে সহ্য করতে হয় প্রতি দিন। এই পরিস্থিতিতে মনে হতেই পারে পানি না খেয়ে, স্নান না করে এই সব উপসর্গ নিয়ে রেচেল বেঁচে আছেন কীভাবে! যেখানে মানবদেহের ৬০ শতাংশই পানি, এক জন প্রমাণ আকৃতির অর্থাৎ ৭০ কেজি ওজনের প্রাপ্তবয়স্কের শরীরে অন্তত ৪০ লিটার পানি থাকে, সেখানে রেচেলের পানিতে অ্যালার্জি হয় কীভাবে?
রেচেলের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শরীরে সঞ্চিত পানি এখানে খুব একটা সমস্যা নয়। তার সমস্যা হয় তখন, যখন সেই পানি ত্বকের সংস্পর্শে আসে কিংবা যখন বাইরে থেকে শরীরে পানি প্রবেশ করে। এই পানি যদি নিজের শরীর নিসৃত হয়, তাতেও সমস্যা হয়ে যায়। রেচেলের চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখেছেন যে, একাধিক বার পরিশোধন করা পানিতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। তাতেও একই প্রতিক্রিয়া হচ্ছে তার শরীরের মধ্যে।
এই রোগের সেভাবে কোনও ওষুধও নেই। ওমালিজুমাব নামে যে ড্রাগ দিয়েছেন চিকিৎসকরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে সুরাহা পেয়েছেন, তারও আকাশছোঁয়া দাম। বিশ্বের কোনও স্বাস্থ্যবিমাও সেই দামের দায় নিতে চাই না। রেচেল তাই সেই ওষুধ কিনতে চেয়েও কিনতে পারেননি।
এই রোগের রোগীও তো হাতে গোনা মাত্র কয়েক জন। প্রতি ২৩ কোটিতে এক জনের এমন অসুস্থতা থাকতে পারে। সেই হিসেবে গোটা পৃথিবীতে রেচেলের মতো রোগী থাকতে পারেন মাত্র ৩২ জন।
রোগ থেকে মুক্তি পাবেন না ভেবে হতাশই হয়ে পড়েছিলেন রেচেল। তাকে মানসিক জোর জুগিয়েছেন তারই স্বামী। যিনি দীর্ঘদিন ধরে রেচেলের দেখাশোনা করছেন। পানির বদলে এখন দুধ খান রেচেল। তাতে তার যন্ত্রণা কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। তবে সমাধান হয়নি। কোনও দিন যদি সত্যিই তার রোগের চিকিৎসা সম্ভব হয়, তখন কী করবেন রেচেল? এমন কথা জানতে চাওয়া হয়েছিল তার কাছে। রেচেল বলেছেন, ‘‘আমি প্রথমে সমূদ্রে যাবো। আবার বৃষ্টিতে ভিজবো প্রাণ ভরে।’’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।