মানুষ এতো মাংস খাওয়ার নেপথ্যে কী?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাংস এবং দুগ্ধজাত শিল্পের কারণে পরিবেশের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে- এই কথা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এরপরও মাংস খাওয়া যেনো কমছে না।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী জানা যায়, বর্তমানে পুরো বিশ্বে বছরে ৩৫ কোটি টন মাংস উৎপাদিত হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে সেটি বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫ কোটি টন- এমনটি মনে করা হচ্ছে।

এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মটরের মতো উদ্ভিদজাত প্রোটিন উৎপাদনে যতো গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত হয়ে থাকে, গরুর মাংস উৎপাদনে তার চেয়েও নির্গত হয় প্রায় ৬ গুন বেশি! এছাড়াও উদ্ভিদজাত প্রোটিন উৎপাদনে যতো জমি প্রয়োজন পড়ে গরুর মাংস উৎপাদনে প্রয়োজন হয় তার প্রায় ৩৬ গুণেরও বেশি!

জার্মানির ট্রিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক মনোবিজ্ঞানী বেনইয়ামিন বুটলার বলেছেন, অভ্যাস, সংস্কৃতি কিংবা ঐতিহ্য ও অনুভূত চাহিদার কারণে মানুষ মাংস খায়। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মনে হয় অনেকেই মাংসের স্বাদটা পছন্দ করেন। তাছাড়াও ঐতিহ্যবাহী অনেক খাবার মেনুতেই মাংসের তরকারি রয়েছে।”

বুটলার আরও বলেন, ‘‘মাংস খাওয়ার প্রাকৃতিক অভ্যাসের কারণে আমরা অনেক সময় কোনো প্রশ্নই করি না। এছাড়াও এমন অভ্যাসের কারণে মাংস খাওয়া যে আসলে খারাপ, সেই চিন্তা আমাদের মাথাতেই কখনও আসে না।

তিনি বলেন, ‘‘এমনকি ভেজিটেরিয়ান কিংবা ভেগানরা যদি মাংস খাওয়ার কারণে প্রাণীদের যে কষ্ট হয়, সেটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেন, তখনও আমরা এই যুক্তি দেখায় যে, মানুষতো অনেক আগে থেকেই সবসময় মাংস খেয়ে এসেছে,”।

বিজ্ঞানীরা অনেকদিনই বিশ্বাস করতেন মাংস খাওয়ার কারণে আমাদের পূর্বপুরুষদের দেহগঠন হয়তো মানুষের মতো হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ বছর পূর্বে মাংস এবং হাড়ের অস্থি মজ্জার কারণে মস্তিষ্কের আকার বড় হয়েছে বলেও মনে করতেন বিজ্ঞানীরা।

তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা মানুষের বিবর্তনে মাংস খাওয়ার গুরুত্ব এক প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। ওই গবেষণার অন্যতম লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির জীবাশ্ববিদ ব্রায়ানা পোবিনার বলেছেন, ২০ লাখ বছর পূর্বে মাংস খাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের আকার বাড়ার তথ্যটি সঠিক। তবে সেটি ১০ লাখ বছর পূর্বে মানুষ রান্না করে খাবার খাওয়া শুরুর পর মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধির হারের চেয়েও কম। তিনি আরও বলেন, খাবার রান্না করার কারণে আরও বেশি পুষ্টিকর হয়েছে। এছাড়াও খাবার নরম হওয়ার কারণে খেতে ও হজমেও সুবিধা হয়েছে।

পোবিনার আরও বলেন, শুধু এক ধরনের খাবারই মানুষের বিবর্তনকে এগিয়ে নিয়ে যায়নি। বরং রান্নার কারণে মানুষ অনেক ধরনের খাবার খেতে পারায় বিবর্তনেও সফল হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, ২০৫০ সাল নাগাদ পুরো বিশ্বের জনসংখ্যা এক হাজার কোটি হতে পারে। তখন চাহিদামতো মাংস উৎপাদন সম্ভব নাও হতে পারে। তাই এখনই মাংস খাওয়া কমাতে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এক্ষেত্রে মাংসের দাম বাড়িয়ে তার বিকল্পগুলোর দাম কমানো যেতে পারে বলেও মনে করছেন জার্মানির ট্রিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বুটলার।

মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমার লক্ষণ ইতিমধ্যেই জার্মানিতেও দেখা যাচ্ছে। এক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে জার্মানিতে মাংসের বিকল্প হিসেবে পরিচিত উদ্ভিদজাত খাবারের উৎপাদন প্রায় ১৭ শতাংশ বেড়ে গেছে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।