দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এর পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে রাজধানীর একটি হোটেলে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং গ্রামীণফোন যৌথভাবে ‘ফিউচারনেশনঃ গ্রাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট ইন প্রাইভেট সেক্টর” কর্মসূচি উন্মোচন করেছে।
বৈশ্বিক অতিমারি কাটিয়ে উঠতে তরণদের সাথে নিয়ে, তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনিতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন খাতের যৌথ উদ্যোগ, ফিউচারনেশন, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, উদ্যোগ ও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে।
‘ফিউচারনেশন: গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট ইন প্রাইভেট সেক্টর প্রোগ্রাম’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিশেষ অতিথি আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সভাপতিত্ব করেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, ইউএনডিপি’র স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বিডা’র ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশনের নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন, ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান।
স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, “বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজার প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। দ্রুতগতিতে অর্থনীতি ও প্রযুক্তির বদলে যাওয়ার ফলে নতুন বাস্তবতার সাথে তরুণেরা যেন খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পর সরকার এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে (ফোরআইআর) সফলভাবে অংশ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য সরকার আইসিটির বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, দেশের সমৃদ্ধি ধরে রাখর যা পূর্বশর্ত। গ্রামীণফোন, ইউএনডিপি এবং বিডা’র উদ্যোগে ফিউচারনেশনের এই আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই।”
আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার বক্তব্যে বলেন, “ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এই সুফল পেতে হলে টেকসই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি এবং তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতায় দক্ষ করে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে সার্বিকভাবে ডিজিটালি কানেক্টেড করার মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য কমাতে আমাদের অবশ্যই একযোগে কাজ করতে হবে। ফিউচারনেশন সেই লক্ষ্যে যৌথ প্রয়াসেরই ফলাফল।”
ইউএনডিপি’র স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি ভিডিও বার্তায় ফিউচারনেশন প্রসঙ্গে তার মতামত জানিয়ে বলেন, “উন্নত গ্রুমিং এবং বাস্তবসম্মত যাচাই বাছাই এঁর মাধ্যমে ফিউচারনেশন তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্য করে তুলতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর সহায়তায় দক্ষতা তৈরির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রটির পেছনে এমন যৌথ প্রচেষ্টা দেখতে পেরে আমি আনন্দিত। এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে এবং হাতে- কলমে কাজের জন্য প্রস্তুত করতে নিঃসন্দেহে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।”
টেলিনরের ইভিপি ও হেড অব এশিয়া ইয়র্গেন সি. আরেন্টজ রোস্ত্রুপ তার ভিডিও বার্তায় বলেন, “তরুণদের জন্য সুযোগ করে দেয়া যেকোনো জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশের জন্যও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত ২৫ বছর ধরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আসছে গ্রামীণফোন। টেলিনরে আমরা বিশ্বাস করি, যেকোনো শক্তিশালী পার্টনারশিপ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।”
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “আমি ভবিষ্যতের শিল্পখাতের জন্য বাংলাদেশের তরুণদের প্রস্তুত করে তোলার ক্ষেত্রে, তাদের সাথে কাজ করার প্রচুর সম্ভাবনা দেখছি। এটি করার এখনই সময়! ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়ার অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে তরুণরা। এক্ষেত্রে, বেসরকারি খাত থেকে নেতৃত্ব দিতে পেরে এবং ইউএনডিপি ও বিডা’র সাথে একসাথে ফিউচারনেশনের মাধ্যমে তরুণ জনশক্তির বিকাশে অবদান রাখতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত।”
প্ল্যাটফর্মটি উন্মোচনের পর ‘গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়েন্ট চ্যালেঞ্জসে ইন বাংলাদেশ’ নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে বক্তব্য রাখেন বিডা’র ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশনের নির্বাহী সদস্য-৩ মোহসিনা ইয়াসমিন; বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-০১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ; বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ; ইউনিলিভার বাংলাদেশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার; ইউএনডিপি’র পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী; টেলিনরের এসভিপি ও হেড অব এক্সটারনাল রিলেশনস এশিয়া হাকোন ব্রুয়াসেত জোল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিই সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রাশেদুর রহমান। ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যান নুয়েনের ভোট অব থ্যাংকস প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
ফিউচারনেশন ‘হোম-গ্রোন অ্যাপটিটিউড অ্যাসেসমেন্ট টুল’ তৈরি করেছে, যা করপোরেট ও বেসরকারি খাতকে তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকা উপযুক্ত কর্মী খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। এ প্রোগ্রামের জন্য ওয়ালটন, আকিজ, প্রাণ-আরএফএল, আবুল খায়ের গ্রুপ, নাসির গ্রুপ, নগদ এবং এসিআই সহ স্বনামধন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য নিয়োগদাতা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে; পাশাপাশি, ফিউচারনেশনের জন্য সম্ভাব্য অ্যাকাডেমিয়া হিসেবে কাজ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।