দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘাম হলে কিন্তু শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে। সে কারণে ঘাম হওয়া ভালো। শরীরের চাপা অংশে ঘাম জমে থাকলে ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। গরমে কীভাবে ত্বকের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাবেন?
যতো দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদও বাড়ছে। ভ্যাপসা গরমের হাত থেকে কবে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে, কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয়। তীব্র রোদে ঘামেভেজা জামাকাপড় থেকে ত্বকের নানা সমস্যার ঝুঁকি আরও বাড়ে।
ঘামের সঙ্গে ত্বকের যে সমস্যা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে তা হলো ঘামাচি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ঘামাচিকে বলা হয় মিলিয়ারিয়া। ভ্যাপসা গরমে ঘাম এবং ঘামাচির ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
অনেকেই ঘাম প্রতিরোধ করতে পুরু করে পাউডার লাগান। এর থেকে ঘামাচিসহ ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। পাউডার লাগানোর কারণে যে গ্রন্থি থেকে ঘাম নিঃসরণ হয়, অতিরিক্ত ঘাম জমে কিংবা পাউডার-সহ ময়লা জমে সেই মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে ঘাম বাইরে বেরোতে পারে না। ঘর্ম গ্রন্থির মধ্যে ঘাম তখন জমতে শুরু করে। তারপর তা বাইরে বেরিয়ে আসে ঘামাচি কিংবা র্যাশ হিসাবে।
বাড়াবাড়ি রকমের ঘামাচি হলে ত্বক বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করানো দরকার। পাউডার লাগিয়ে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটি কিন্তু নয়। ঘামাচিগুলোতে নখের আঁচড় লেগে সেকেন্ডারি ইনফেকশনের ঝুঁকিও তখন বাড়ে। ত্বকের ঘামাচি কিংবা র্যাশের চুলকানি এবং প্রদাহ কমাতে ক্যালামিনল জাতীয় লোশন লাগাতে পারেন। এই সময় বেশি করে পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই গরমে কেবলমাত্র ঘামাচিই নয়, ছত্রাকসহ অন্যান্য জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। নিয়ম করে দিনে দু’বার গোসল করে এবং সুতির পোশাক পরলে ত্বক ভালো থাকে। ভ্যাপসা গরমে ঘাম জমে ত্বকের ওপর কালো, বাদামি কিংবা সাদাটে ছোপ দেখা যেতে পারে। এই সব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছুলিও হতে পারে। কমবয়সিদের মধ্যে ছুলির সংক্রমণের প্রবণতাও বেশি থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘামেভেজা শরীরে ছত্রাকের সংক্রমণ আরও বেশি হয়। তাই কখনও ঘাম জমতে দেবেন না। তবে অনেক সময় স্টেরয়েড নিলে, ডায়াবেটিস থাকলে, কোনও গুরুতর অসুখের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ও অপুষ্টিতে ভুগলেও ছুলির সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। মুখে-গলায়, ঘাড়ে-পিঠে ছুলি বেশি দেখা যেতে পারে। ছুলির সংক্রমণ হলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞর পরামর্শে চিকিৎসা করান । সাধারণত ছুলিতে কোনও ব্যথা বা জ্বালা-পোড়া থাকে না। তবে ছুলির সঙ্গে অন্য কোনও সংক্রমণ হলে চুলকানিও হতে পারে। এই গরমে বাইরে থেকে বাড়ি ফিরে হালকা সাবান মেখে গোসল করা উচিত। ছুলি-আক্রান্ত অংশে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে মাথাতে ঘাপটি মেরে বসে থাকা জীবাণু তাড়াতে অ্যান্টিফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন।
গামছা কিংবা তোয়ালে ও চিরুনি থেকেও ত্বকের জীবাণুঘটিত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তাই প্রত্যেকের উচিত পৃথক জিনিস ব্যবহার করা। ভ্যাপসা গরমে অ্যালার্জিসহ ত্বকের র্যাশ ও অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকিও বাড়ে। আঁটসাঁট অন্তর্বাস এবং পোশাক থেকেও ত্বকের সংক্রমণ হয় অনেক সময়। গরমে সুতির অন্তর্বাস পরাই ভালো।
আপনার ত্বকে সংক্রমণ হলে নিজে থেকে স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম কিনে লাগিয়ে বিপদ আরও বাড়াবেন না। ফরসা হওয়ার বাসনায় অনেকেই স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করেন। এতে সাময়িকভাবে চকচকে মনে হলেও ত্বক অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। মনে রাখবেন, ত্বক ভালো রাখার সেরা উপায়ই হলো পরিচ্ছন্নতা। গরমে সানস্ক্রিন ছাড়া বাইরে একেবারেই বেরোনো যাবে না। হালকা সুতির পোশাক এবং নিয়মিত মৃদু সাবান মেখে গোসল ত্বক ঝকঝকে রাখার প্রকৃত চাবিকাঠি। ত্বক ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার যেমন খেতে হবে- ঠিক তেমনি পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাও জরুরি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।