দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় চড়া রোদ থেকে ফিরে ঠাণ্ডা পানি সাময়িক স্বস্তি দেয় হয়তো। তবে এই সাময়িক স্বস্তি পরে সমস্যার কারণও হয়ে উঠতে পারে। শরীরের জন্য আসলে কতোটা ক্ষতিকর এই অভ্যাস?
গরমের দাপটে পুড়ছে শহর থেকে শহরতলি। দৈনিক তাপমাত্রা দেখলে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা দাড়ায়। গ্রীষ্মের দহনজ্বালা সহ্য করতে হবে হয়তো আরও কিছু দিন। বাইরে বেরোলেই যেনো ঝলসে যাচ্ছে চোখমুখ। তবে তার পরেও কাজের প্রয়োজনে বাইরে বেরোতে হচ্ছে আমাদের। কাজ সেরে ঘেমেনেয়ে, গলদঘর্ম হয়ে বাড়ি ফিরেই হাত চলে যায় ফ্রিজ়ের দিকে। কয়েক ঢোঁক বরফ-ঠাণ্ডা পানি খেয়ে তবেই মিলছে শান্তি। বৈশাখের চড়া রোদ থেকে ফিরে ঠাণ্ডা পানি হয়তো সাময়িক স্বস্তি দিচ্ছে। তবে এই সাময়িক স্বস্তিই পরে সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
গলা সংক্রমণ
রোদ থেকে ফিরে ঢক ঢক করে ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাসে বাড়তে পারে গলায় সংক্রমণের নানা ঝুঁকি। ঘন ঘন ফ্রিজ়ের পানি খাওয়ার কারণে এমনিতেই গলাব্যথা, সর্দি-কাশির সমস্যা লেগে থাকে। তবে গ্রীষ্মে এই সমস্যা আরও বেশি বাড়তে পারে। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ার পর ফ্রিজ়ের পানি খেলে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ে, কারণ গলায় ও শ্বাসযন্ত্রে মিউকাসের পরিমাণ তখন বেড়ে যায়।
দুর্বল হৃৎস্পন্দন
বরফগলা ঠাণ্ডা পানি হৃৎস্পন্দনের হার আরও কমিয়ে দেয়। ‘ক্রেনিয়াল’ স্নায়ু হৃৎস্পন্দনের হারও নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ঠাণ্ডা পানি খাওয়ার কারণে এই স্নায়ু শিথিল হয়ে পড়ে, সঙ্কুচিত হয়ে যায়। যে কারণে হৃৎস্পন্দনের হারও তখন কমতে থাকে।
হজমে গোলমাল
অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি হজমজনিত সমস্যার কারণও হতে পাতে পারে। এতে করে রক্তনালির সঙ্কোচন ঘটে, যে কারণে হজমক্রিয়া ব্যাহত হয়। কারণ হলো ঠাণ্ডা পানি পাকস্থলী সঙ্কুচিত হয়ে যায়, যা খাওয়ার পর হজম প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। তা ছা়ড়াও ঠাণ্ডা পানি খেলে পরিপাকতন্ত্রও দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ওজন বেড়ে যাওয়া
অত্যাধিক ঠাণ্ডা পানি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। শরীরের বাড়তি মেদ সহজেই ঝরতে চায় না। বরং ফ্যাট আরও বেশি করে জমতে শুরু করে দেয়। ডায়েটের পর্বে তাই ঠাণ্ডা পানি রাখতে বারণ করেন চিকিৎসকরা।
দাঁত শিরশিরানি করা
ঠাণ্ডা পানি খেলে দাঁতের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দাঁতে যন্ত্রণা থেকে শুরু করে শিরশিরানি করা- সবই হতে পারে এ থেকে। তাছাড়াও মাড়ির নানা সংক্রমণও দেখা দিতে পারে সে কারণে। তাই গরম লাগলেও ঠাণ্ডা পানি এড়িয়ে চলায় হবে উত্তম। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।