দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাতের সঙ্গে লবণ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকের। তবে এই অভ্যাস আদৌ স্বাস্থ্যকর নয় বলে সতর্ক করে দিয়েছেন চিকিৎসক। ভাতের পাতে নিয়মিত লবণ খেলে বিভিন্ন অসুখ দেখা দিতে পারে।
বাঙালিদের ভাতের সঙ্গে আমাদের অন্তরের সম্পর্ক। ভাত ছাড়া একদিন থাকলে প্রাণ আনছান করে। তাই তো সব জায়গাতেই বাঙালিরা ভাতের খোঁজ করে। তবে শুধু ভাত তো খাওয়া যায় না, সঙ্গে রাখতে হয় তরকারি। এছাড়াও অনেকেই ভাতের পাতে লবণ খেতে পছন্দ করেন। তরকারিতে যতোই লবণ থাকুক না কেনো, পৃথক করে ভাতে একটু লবণ না মেশালে যেনো তাদের খাদ্য গলাধঃকরণ হতে চাই না।
খাবারে পৃথকভাবে লবণ মেশানোর অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। এরা ভাত ছাড়াও অন্যান্য খাবারেও আলাদাভাবে লবণ ছড়িয়ে খেতে পছন্দ করেন। এদের জন্যই রেস্তোরাঁ কিংবা অনুষ্ঠান বাড়ির টেবিলে আগেভাগে লবণের ব্যবস্থা করে রাখা হয়।
আপনারও এই অভ্যাস রয়েছে নাকি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে, তাহলে আজ থেকেই সাবধান হন। কোলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: আশিস মিত্রের ভাষায়, কাঁচা লবণ খাওয়া একদমই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। এর থেকে নানা ধরনের সমস্যাও তৈরি হতে পারে। তাই যে কোনও বয়সের ব্যক্তিকে পাতে লবণ খাওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে।
লবণ খেলেই বাড়বে ব্লাড প্রেশার
এ সম্পর্কে ডা: মিত্র জানিয়েছেন, আসলে লবণে রয়েছে সোডিয়াম। এই খনিজ শরীরে বেশি পরিমাণে থাকা মোটেও ভালো নয়। শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়লে রক্তনালী শক্ত হয়ে যেতে পারে। যে কারণে রক্তপ্রবাহের সময় তা স্বাভাবিক নিয়মে সংকুচিত কিংবা প্রসারিতও হতে পারে না। এই কারণে মূলত ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি পায়। হাই ব্লাড প্রেশার হলো এক নীরব ঘাতক। এই অসুখ স্লো পয়জনিং-এর মতোই দেহে জটিলতা তৈরি করে। বিভিন্ন অসুখ তখন পিছু তাড়া করে।
বিট লবণ খেয়েও লাভ নেই
অনেকেই মনে করেন যে বিট লবণ বা সৈন্ধব লবণে অতোটা ক্ষতি হয় না। তবে এই ধারণা ১০০ শতাংশ ভুল বলে জানিয়েছেন ডা: মিত্র। তাঁর ভাষায়, এই ধরনের লবণেও রয়েছে সোডিয়ামের ভাণ্ডার। তাই বিট লবণ বা সৈন্ধব লবণ খেলেও সমস্যা হতে পারে। উপরের সব অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়। তাই কোনও ধরনের লবণই বেশি মাত্রায় খাওয়া যাবে না। যতোটা না খেলেই নয়, ঠিক ততোটাই খেতে হবে। বাড়াবাড়ি করলেই ঘটবে বিপদ।
দিনে কী পরিমাণ লবণ খাওয়া যেতে পারে?
এই প্রশ্নের উত্তরে ডা: মিত্র জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে দিনে ৪ থেকে ৭ গ্রাম লবণ একজন মানুষ খেতে পারেন। তবে এভাবে লবণ মেপে খেতে গেলে আপনাকে সোনার দোকানে যেতে হবে। তাই এমন গ্রাম মেপে লবণ খাওয়া যায় না। তবে একটা সহজ উপায় রয়েছে মাপে মাপে লবণ খাওয়ার। সেটি হলো আইসক্রিম খাওয়ার যে ছোট চামচ পাওয়া যায়, তা জোগাড় করতে হবে। এই চামচে মোটামুটি ৪ থেকে ৭ গ্রাম লবণই ওঠে। আর এটাই আপনার গোটা দিনের রসদ। সারাদিনের খাবারে ঠিক এতোটাই লবণ মেশাতে পারবেন।
লো সল্ট চলতে পারে
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন সংস্থার লো সল্ট লবণ পাওয়া যায়। এই ধরনের লবণে সোডিয়ামের পরিমাণ অনেকটা কম থাকে। যে কারণে সমস্যার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে যেতে পারে। তাই মাঝে-মধ্যে কাঁচা লবণ খাওয়ার ইচ্ছে হলে এই লবণ খেতে পারেন। তবে নিয়মিত এই লবণ খাওয়াও কিন্তু ভালো না। এতে শরীরের ক্ষতিও হয় বলে জানিয়েছেন ডা: মিত্র। তাই এই লো সল্ট ব্যবহারের সময় আপনাকে অবশ্যই সমঝে চলতে হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।