দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতী ডেথ ক্যাপ মাশরুমের (অ্যামানিটা ফ্যালোয়েডস) সম্ভাব্য প্রতিষেধক খুঁজে পেলেন বিজ্ঞানীরা। প্রতি বছর বিশ্বে বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে প্রাণ হারান শত শত মানুষ। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশের মৃত্যুর জন্যই দায়ী এই ডেথ ক্যাপ মাশরুম।
মাত্র ৬ ইঞ্চি বড় হওয়া এমন মাশরুমের উপরের অংশটি হলদে-সবুজ হয়ে থাকে। যদিও এটি খেতে বেশ সুস্বাদু লাগে। এমনটি জানিয়েছেন, অসাবধানতায় বিষাক্ত ডেথ ক্যাপ মাশরুমের কিছু অংশ খেয়ে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা। এটি খাওয়ার পর বমি, খিঁচুনি, লিভারের ভয়াবহ ক্ষতি ও এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস ৫৪ খ্রিস্টাব্দে এই মাশরুম খাওয়ার কারণে মারা যান বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ১৭৪০ সালে রোমান সম্রাট ষষ্ঠ চার্লসও মারা যান এই মাশরুম খেয়েই। প্রচলিত রয়েছে যে বহু শতাব্দী যাবত ‘রাজাদের হত্যাকারী’ হিসেবে পরিচিত পায় এই বিষাক্ত মাশরুশ। এবার এটি তার সেই খেতাব হারাতে চলেছে।
চীনা গবেষকরা সম্প্রতি একটি সম্ভাব্য প্রতিষেধক আবিষ্কার করেন। প্রতিষেধক এই রাসায়নিকটির বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়েছে ইন্ডোসায়ানাইন গ্রিন। আর ডেথ ক্যাপের বিষের নাম হলো আলফা-অ্যামানিটিন। মাশরুশটি খাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই আলফা-অ্যামানিটিন মানুষের শরীরের কোষের ভেতর ঢুকে যায়। তবে সময়মতো প্রতিষেধকটি খেতে পারলে তা কোষে অনুপ্রবেশকে রুখে দেবে ও চূড়ান্ত বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা পাবে মানুষ। গবেষক দলটি ১৬ মে প্রকৃতি এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক জার্নাল নেচার কমিউনিকেশনকে এই ফলাফলগুলো উপস্থাপন করেছেন।
এই বিষয়ে জার্মানির মারবার্গে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজির প্রাকৃতিক বস্তুকণাবিষয়ক রসায়নবিদ হেলজ বোড জানিয়েছেন, প্রতিষেধকটি আসলেও দুর্দান্ত। আলফা-অ্যামানিটিন সত্যিই আমাদের প্রকৃতিতে থাকা সবচেয়ে বিপজ্জনক যৌগগুলোর মধ্যেও অন্যতম। মানুষের ওপর বিষক্রিয়ার দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও ডেথ ক্যাপের বিষক্রিয়াতে আক্রান্ত মানুষকে খুঁজে পাওয়া এবং তার ওপর আবিষ্কৃত রাসায়নিকটি সময়মতো প্রয়োগ করাও খুবই অসাধ্য কাজ। চীনের গুয়াংজুতে সান ইয়াত-সেন ইউনিভার্সিটি ওষুধ উন্নয়নবিষয়ক গবেষক কিয়াওপিং ওয়াং ও গুওহুই ওয়ান এই বিষয়ে গবেষণা শেষে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বিজ্ঞানীরা জেলিফিশের বিষের প্রতিষেধক খুঁজে বের করার জন্য বেশ কয়েক বছর আগেই ওয়াং ও ওয়ান যে পদ্ধতিটি তৈরি করেছিলেন সেটি ব্যবহারও করেছিলেন। প্রথমে তারা মানব কোষের একটি অংশ তৈরি করেন। পরে মিউটেশনের মাধ্যমে এদের কোষগত পরিবর্তন-পরিমার্জন আনার পরই পরীক্ষা করে দেখেন কোন কোন কোষগুলো বিষাক্ত আলফা-আমানিটিনকে রুখে দিতে পারছে।
জানানো হয় যে, ইন্ডোসায়ানাইন গ্রিন দিয়ে চিকিৎসা করা ইঁদুরের মাত্র ৫০ শতাংশই আলফা-অ্যামানিটিনের বিষক্রিয়ায় মারা যায়। সেই সব ইঁদুরের চিকিৎসা দেওয়া যায়নি তাদের ৯০ শতাংশই মারা গেছেন। চেক প্রজাতন্ত্রের চেস্কে বুদেজোভিসে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন বোহেমিয়ার টক্সিকোলজিস্ট জিরি প্যাটোকা বলেছেন, প্রতিষেধক খুঁজে বের করার জন্য গবেষকরা এই পদ্ধতি নিয়ে অনেক আশাবাদী এবং আনন্দিত, এটি মূলত অত্যন্ত আধুনিক পদ্ধতি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধবিষয়ক ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি ইতিমধ্যেই আবিষ্কৃত ইন্ডোসায়ানাইন গ্রিন নামে এই অ্যান্টিডটটি ব্যবহারে অনুমোদনও দিয়েছে। তারা জানিয়েছেন যে, রাসায়নিকটির নির্দিষ্ট ডোজগুলো মানবদেহের জন্যও নিরাপদ। পর্তুগালের পোর্তো ইউনিভার্সিটির টক্সিকোলজিস্ট ফেলিক্স কারভালহো বলেছেন যে, এই গবেষণায় আক্রান্তের সময় খুব মুখ্য হবে। গবেষকরা প্রাণীদের আলফা-অ্যামানিটিনের সংস্পর্শে আসার ৪ ঘণ্টা পর থেকে কয়েকটি ইঁদুরকে ইন্ডোসায়ানাইন গ্রিন দিয়ে চিকিৎসাও করেছিলেন।
তবে দেখা যায় যে, বেশিরভাগ মানুষ যারা ডেথ ক্যাপ খেয়ে ফেলেছেন তারা ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেও হাসপাতালে যাননি। তারপর যখন ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হন ঠিক তখনই তারা চিকিৎসা পেতে ছোটেন। এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঠিক সময় গবেষণার আওতায় আনাই যাচ্ছে না।
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।
This post was last modified on জুন ১৪, ২০২৩ 11:23 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…