দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উত্তর ভারতে তিন দিনের তুমুল বৃষ্টিতে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে শিশুসহ অন্তত ২৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়।
প্রাণহানিদের মধ্যে বেশিরভাগই হিমাচল প্রদেশের বাসিন্দা। দেশটির আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) বলেছে যে, আগামী কয়েক দিন উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে আরও অনেক বেশি বৃষ্টি হতে পারে।
হিমাচল প্রদেশে ভূমিধস এবং বন্যায় অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু গতকাল (সোমবার) বাসিন্দাদের ২৪ ঘণ্টার জন্য ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শও দেন। উত্তরাখণ্ডেও একইরকম পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেখানে কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ভূমিধসের কারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি শহর প্লাবিত হওয়ায় সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে। শহরটির কিছু এলাকার পরিস্থিতি অনেক খারাপ। এইসব এলাকার নর্দমাগুলোর পানি উপচে পড়েছে। রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়ে বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানির কারণে সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার জরুরি বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে হরিয়ানা হাতিনিকুণ্ড ব্যারাজ থেকে অন্তত এক লাখ কিউসেক পানি যমুনা নদীতে ছেড়ে দিয়েছে। এতে করে বন্যার আশঙ্কায় দিল্লি সরকার বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোর ওপর নজর রাখার জন্য ১৬টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও স্থাপন করেছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org