দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাব্য সময়ের কথা ঘোষণা করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পাকিস্তানে নির্বাচন অক্টোবর মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
১৩ জুলাই জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এই কথা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, আগামী ১৪ আগস্টই হতে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের শেষ দিন। এরপর পরবর্তী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আমি আশা করি, নির্বাচনে জিতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক- তারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অক্টোবরে যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর তফশিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে ২০২২ সালে অনাস্থা প্রস্তাব আনে তৎকালীন পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলো। সেই প্রস্তাবের ওপর আয়োজিত ভোটে হেরে গত বছর ১০ এপ্রিল ক্ষমতাচ্যুত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পিটিআই ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ- নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতৃত্বে জাতীয় ক্ষমতায় আসীন হন। বর্তমান জোট সরকার ও পিএমএলএনের চেয়ারম্যান শাহবাজ শরিফ ক্ষমতা পান নতুন প্রধানমন্ত্রীর। জোটের অন্য দুই শরিকের নাম পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের মেয়াদের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান শাহবাজ শরিফ।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। সংবিধান অনুযায়ী প্রতি ৫ বছর পরপর অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন। নিম্নকক্ষ ৫ বছরের মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয়। নতুন নির্বাচনের আগে ম্যান্ডেটসহ একটি ‘অরাজনৈতিক’ (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়। তাদের তত্ত্বাবধানেই অনুষ্ঠিত হয় এই জাতীয় নির্বাচন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org