দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সীমান্ত উত্তেজনা কমিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় এসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন্সের (আসিয়ান) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ওয়াং ই।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এশিয়ার দুই প্রভাবশালী প্রতিবেশী চীন এবং ভারতের মধ্যে ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ওই সীমান্তের বেশির ভাগ অংশ চিহ্নিত নয়। যে কারণে সীমান্তের দাবি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা রয়েছে ও মাঝেমধ্যেই সীমান্তে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে তুমুল লড়াইও শুরু হয়ে যায়। যদিও ১৯৬২ সালের পর এই দুই দেশ আর কোনো রকম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়ায়নি।
১৯৯০ এর দশক থেকে চীন-ভারত সম্পর্কের উন্নতি শুরু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সীমান্ত চুক্তিও হয়। চীন হলো বর্তমানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার। সীমান্তে দুই দেশের সর্বশেষ প্রাণঘাতী লড়াই হয়েছিলো ২০২০ সালের শুরুর দিকে। সেবার দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। লড়াইয়ে ভারতের ২০ সেনা ও চীনের চার সেনা নিহত হন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত পরশু (শুক্রবার) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে বলেন, সীমান্ত সংকট নিয়ে উভয়পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান খুঁজে পাওয়ার জন্য চীন এবং ভারতকে একই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। ‘দুই পক্ষই একে অপরকে নিচু করা কিংবা সন্দেহ করা বাদ দিয়ে পরস্পরকে সমর্থন করা ও একসঙ্গে কাজ করা উচিত’।
সীমান্তের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনার জন্য উভয় দেশের সামরিক কমান্ডাররা যতো দ্রুত সম্ভব পরবর্তী দফা আলোচনায় বসতে একমত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০২০ সালের সংঘাতের পর দিল্লি থেকে চীনা বাণিজ্যের ওপর নজরদারি এবং কড়াকড়ি বাড়ানো হয়। ভারত টিকটকসহ তিনশর বেশি চীনা অ্যাপ নিজ দেশে নিষিদ্ধ করে। চীনা ফার্মের ভারতে বিনিয়োগের বিষয়টি নিয়েও আগে থেকেই কড়াকড়ি বেড়েছে। এই বিষয়ে ওয়াং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং বৈষম্যহীন ব্যবসার পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বানও জানান।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org