বর্ষায় সর্দি-কাশি ছাড়াও নানা রোগের প্রকোপ হতে সদ্যোজাতদের সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ার কারণে জামাকাপড় শুকাতেই চায় না। পোশাক ভিজিয়ে ফেলার ভয়ে শিশুকে সারাক্ষণ গরমে হিটর‌্যাশের থেকে মুক্তি পেলেও বর্ষায় নানা রকম রোগের প্রকোপ বাড়ে।

বর্ষায় সর্দি-কাশি ছাড়াও নানা রোগের প্রকোপ হতে সদ্যোজাতদের সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে? 1বর্ষায় সর্দি-কাশি ছাড়াও নানা রোগের প্রকোপ হতে সদ্যোজাতদের সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে? 1

বড়দের তো সমস্যা হয়ই, এই সময় সদ্যোজাতদেরও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন রয়েছে। পানিবাহিত ও মশাবাহিত রোগের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পায় এই বর্ষাকালেই। তাছাড়াও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা লেগে সর্দি-কাশি তো রয়েছেই। এই বিষয়ে চিকিৎসকেরা বলছেন, সংক্রমণ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে হলে সবচেয়ে আগে পরিচ্ছন্নতার দিকেই আপনাকে বেশি করে নজর দিতে হবে। বাড়িতে সদ্যোজাত শিশু থাকলে সব সময় ঘরের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্যানিটাইজ় করতে পারলে আরও ভালো। শুধু তাই নয়, শিশুর বিছানা-বালিশ, পোশাক, নিত্য ব্যবহারের জিনিসের সঙ্গে খেলনাগুলোও পরিষ্কার করতে পারলে বড়সড় রকমের রোগ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখাটা জরুরি।

সঠিক ডায়াপার ব্যবহার

Related Post

বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার কারণে বর্ষাকালে বার বার বিছানা ভিজিয়ে ফেলে শিশুরা। ভেজা কাপড় কিংবা ডায়াপার থেকে ঠাণ্ডায় লাগা স্বাভাবিক। তাছাড়াও ভিজা ডায়াপার পর সংক্রমণের সমস্যাও দেখা দেয় অনেক সময়। এই বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, বর্ষায় বিছানা ভিজিয়ে ফেলার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সারাক্ষণ শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে রাখা কোনো কাজের কথা নয়। তাই চেষ্টা করতে হবে ডায়াপারের ব্যবহার কমানোর জন্য। ভেজা কাপড় যাতে বেশিক্ষণ ত্বকের সংস্পর্শে না থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে আপনাকেই।

মশা যেনো না কামড়ায়

বর্ষার জমা পানিতে মশা বংশবিস্তার করে ডেঙ্গু রোগের। এই সময় মশাবাহিত রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়। শিশুকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত রাখতে গা ঢাকা পোশাক পরানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। দিনের বেশির ভাগ সময়ই শিশুকে মশারির ভিতর রাখার পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া

শিশুদের জ্বর, সর্দি, পেটের রোগ ছাড়াও নানা রকম সংক্রমণও হতে পারে এই সময়। ঘন ঘন শরীর খারাপ হলে আতঙ্কিত না হয়ে কোন রোগের কী লক্ষণ, সেই বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুলাই ১৬, ২০২৩ 3:19 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

চুটিয়ে গল্প নাকি চুপ করে থাকলেই মজবুত হবে সম্পর্কের ভিত?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মনের মধ্যে কথা চেপে না রেখে, তা খোলাখুলি বলে দিলেও…

% দিন আগে

কিউআর কোড দিয়ে ঘটছে যে অভিনব প্রতারণা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কিউআর কোডের মাধ্যমে প্রতারণা দিন দিন যেনো বেড়েই চলেছে। এমনি…

% দিন আগে

অনেকক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করে কাঁধে ব্যথা হলে মাত্র কয়েকটি ব্যায়ামে সমাধান আসবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাজের মধ্যেই কাঁধে ব্যথা। বা ঘুম থেকে উঠেই ঘাড়ে যন্ত্রণা।…

% দিন আগে

আলোচিত অভিনেত্রী পারসা যুক্তরাষ্ট্রে অভিনয় শিখতে যাচ্ছেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ের ছোট পর্দায় আলোচিত এক অভিনেত্রী পারসা ইভানা। মার্কিন…

% দিন আগে

গাজায় মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় ৯৭০ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়ে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে…

% দিন আগে

গভীর রাতে দেওর-বৌদির রিল রিল ‘খেলা’ করতে গিয়ে অসাবধানতায় ফেটে গেলো সিলিন্ডার!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ভারতের মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রের ভিন্দ রোডের ‘দ্য লিগ্যাসি প্লাজা’ নামে…

% দিন আগে