দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের কতো রকম স্বাদ-আহ্লাদ থাকে। হাতি কিংবা হেলিকপ্টার অনেক কিছুতেই বিয়ে করার ইচ্ছা থাকে। তবে এবার এক ব্যক্তি তার বাবার ইচ্ছে পূরণ করতে গরু ও মহিষের ১০ গাড়িতে বরযাত্রা করলেন!
বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া গরু এবং মহিষের ১০ গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে গেলেন নিরব নামে ওই যুবক। এই বিয়ে দেখতে ভিড় জমান এলাকার শত শত নারী-পুরুষ। সম্প্রতি এমনই এক ব্যতিক্রম বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিলো ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে উপজেলায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খামার নারায়নপুর গ্রামের কুদ্দুস আলীর ছেলে নিবর হোসেন সাব্বিরের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় পাশের দুর্গাপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামে মেয়ে ইসরাত জাহান এশার। নিরবের বাবার ইচ্ছা ছিল, ছেলে বরবেশে গরুর গাড়িতে করেই বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে যাবেন। ছেলের বউও আসবে গরু গাড়িতে করেই।
বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করতে গরু এবং মহিষের ১০ গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে বরবেশে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে হাজির হন নিরব। গ্রাম-বাংলার হরিয়ে যাওয়া টাপুরযুক্ত গরু-মহিষের গাড়ি দেখতে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় জমান বর এবং কনের বাড়িতে। রাস্তায় অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে গরু-মহিষের গাড়িতে বরযাত্রার দৃশ্য দেখেন। ছবি এবং ভিডিও ধারণ করেন অনেকেই। এমন আয়োজনে খুশি বর-কনের পরিবারসহ এলাকাবাসীও। গ্রাম-বাংলার এই পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে আগ্রহও প্রকাশ করেন এবং সাধুবাদ জানান অনেকেই।
বরের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল, ছেলের বিয়েতে বরযাত্রী যাবে গরুর গাড়িতে করে। এই সময় গরুর গাড়ি পাওয় সত্যিই দুস্কর। তাই মহিষের ৯টি ও গরুর একটি গাড়ির আয়োজন করেছিলাম ছেলের বিয়েতে। ছেলেও মেনে নিয়ে গরু গাড়িতে করে বিয়ে করতে গেছে।
কনের চাচা জয়নাল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, এটা গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া একটা ঐতিহ্য। এই রকম আয়োজনে আমরাও খুশি।
মহিষের গাড়ির পেছনে পা ঝুলিয়ে বসা এক বৃদ্ধ জানিয়েছেন, ৪০ বছর পূর্বে ঠিক এভাবেই এক প্রতিবেশির বিয়েতে বরযাত্রী হিসেবে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে তিনিও খুব খুশি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org