রেটিনার সমস্যার জন্য চোখে ঝাপসা দেখছেন: কী কারণে রেটিনার ক্ষতি হয়?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিকিৎসকরা সাধারণভাবে মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও ডায়াবেটিক ম্যাকুলার এডিমা- রেটিনার কার্যকারিতা কমে যাওয়ার পিছনে এই কারণগুলোকেই দায়ী করেন। তাহলে প্রতিকারের উপায় কী?

কারও মুখের দিকে তাকালেই মনে হবে, মুখটা যেনো কালো এবং ঝাপসা। টিউবলাইটের দিকে তাকালেই মনে হচ্ছে, লাইটের মাঝখানে যেনো বিশাল এক গর্ত রয়েছে! চোখে এই রকম সমস্যা কয়েক দিন ধরে হচ্ছে? এমনটি হলে বুঝতে হবে যে, সমস্যাটি চোখের রেটিনার। রেটিনার ম্যাকুলায় ছিদ্র হলে দৃষ্টিজনিত এমন সমস্যা দেখা দিতেই পারে। এই ক্ষেত্রে যতো দ্রুত সম্ভব, চিকিৎসা শুরু করাটা প্রয়োজন। দেরি হলেই দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা তখন বাড়তে থাকে। বিভিন্ন কারণেই রেটিনার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও ডায়াবেটিক ম্যাকুলার এডিমা- রেটিনার কার্যকারিতা কমে যাওয়ার পিছনে এই কারণগুলোকেই দায়ী করে থাকেন চিকিৎসকরা।

কর্মব্যস্ততা, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়, তার প্রভাব পড়ে মানুষের ঘুমের উপর। আর মানসিক চাপ বাড়লে রক্তে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণও তখন বাড়ে। এই হরমোনে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতার উপর প্রভাবও ফেলে, এই হরমোনের প্রভাবে চোখ তখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Related Post

আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের বিভিন্ন সমস্যা বাড়তে থাকে। যা এক সময় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় স্বচ্ছ দৃষ্টিতে। এমনই একটি সমস্যা হলো রেটিন্যাল ডিজেনারেশন। ডিজেনারেশন মানেই ক্ষয়। বর্তমানে মানুষের আয়ু বেড়েছে। তাই শরীরের ক্ষয়জনিত সমস্যাও অনেক বেশি। মানুষ যতো বেশিদিন বাঁচবেন, ততোই ক্ষয় হবে। রেটিন্যাল ডিজেনারেশন সেই রকমই একটা সমস্যা। যার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বার্ধক্যের সঙ্গে সঙ্গেই। তবে এই ক্ষয় হলেই যে অন্ধত্ব অবশ্যম্ভাবী- তা অবশ্য নয়। সময় মতো রোগটি ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে অনেকটা সারিয়ে তোলা সম্ভব। ডায়াবেটিক ম্যাকুলার এডিমা মূলত ডায়াবেটিক রোগীদেরই হয়। মানসিক চাপ থেকেও রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই এই রোগ ঠেকাতে হলে অবশ্যই মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।

রেটিনার সমস্যা কীভাবে এড়িয়ে চলবেন?

# প্রথমেই মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। সেজন্য নিয়মিত শ্বাসের ব্যায়াম, যোগাসন, ধ্যানও করতে পারেন। পড়াশোনা বা কলেজের কাজকর্ম ছাড়াও এমন কোনও কাজে মন দিতে হবে, যা করতে আপনার ভালো লাগে। মাঝে-মধ্যে ঘুরতে যান, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময়ও কাটান।

# রাতে বেশিক্ষণ জেগে থাকা যাবে না। প্রতিদিন একজন মানুষের জন্য ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন। ঘুমোনোর পূর্বে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকুন।

# প্রতি বছর অন্তত এক বার চক্ষু পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষা করালে একমাত্র রেটিনার অসুখই ধরা পড়ে। যতো দ্রুত রোগ ধরা পড়বে- সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাও ততোটাই বাড়বে।

# আপনার খাওয়া-দাওয়ারের উপরেও নজর রাখতে হবে। বেশি করে মৌসুমি ফল, শাকসব্জি, লিন প্রোটিন, শস্যজাতীয় খাবার অবশ্যই ডায়েটে রাখতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ৭, ২০২৩ 5:06 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’ দক্ষিণী তারকা সামান্থা রুথ প্রভু!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’ এবার ভারতীয় সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য…

% দিন আগে

ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু কেনো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু…

% দিন আগে

ট্রেনের দরজায় ঝুলে কেরামতি: রিল বানাতে গিয়ে লোহার স্তম্ভে বাড়ি খেলেন এক তরুণী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলন্ত ট্রেনের পাদানিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক তরুণী। পাদানিতে দাঁড়িয়ে ট্রেনের…

% দিন আগে

এই খাড়া পাহাড়গুলো দেখতে কেমন লাগছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

রোগা হওয়ার জন্য জগিং শুরু করেছেন: কয়েকটি ভুলে সব পরিশ্রমই বৃথা যেতে পারে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুণীজনরা বলে থাকেন, ছোট ছোট লক্ষ্য আপনাকে স্থির করতে। সেই…

% দিন আগে

জার্মানি এবার ইসরায়েলে যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ইসরায়েলে নতুন করে যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করলো জার্মানি। তথ্য…

% দিন আগে