দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ক্রমাগত ইন্টারনেট আসক্তির পর শিশুদের মোবাইল আসক্তি কমাতে উদ্যোগ নিলো চীন। যার অংশ হিসেবে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের দিনে দুই ঘণ্টার বেশি ফোন হাতে রাখা উচিত নয় বলে মনে করছে চীনের সাইবারস্পেস নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এরইমধ্যে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে এই সংক্রান্ত বার্তাও পাঠানো শুরু করেছেন তারা। সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না (সিএসি) বলেছে যে, তারা স্মার্ট ডিভাইসের প্রদানকারীদের দিয়ে মাইনর মোড চালু করতে চান, যার মাধ্যমে ১৮ বছরের কম বয়সি মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারকারীরা রাত ১০টা হতে সকাল ৬ পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয়, প্রস্তাবিত সংস্কারের অধীনে ডিভাইস সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকেও সময়সীমা নিয়ে কাজ করতে হবে। ১৬ হতে ১৮ বছর বয়সি ব্যবহারকারীরা দিনে ২ ঘণ্টা, ৮ থেকে ১৭ বছরের শিশু/কিশোররা দিনে মাত্র ১ ঘণ্টা ও ৮ বছরের কম বয়সি শিশুরা মাত্র ৮ মিনিট ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে।
সিএসি এও বলেছে যে, তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এই সময়ের বাইরেও স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারবেন। ইতিপূর্বে ২০২১ সালে চীন সরকার ১৮ বছরের কম বয়সীদের ভিডিও গেম খেলা নিয়ে অনলাইন কারফিউ জারি করে। তাছাড়াও বাইটডেন্স এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো চীনা সরকারের নির্দেশনা মেনে কিশোর-কিশোরীদের ৪০ মিনিটের বেশি ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। সাম্প্রতিক সময় চীনা কর্তৃপক্ষ দেশটির তরুণদের মধ্যে ইন্টারনেট আসক্তির হার নিয়ে উদ্বিগ্ন।
গবেষকরা বলে থাকেন যে, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে অনিন্দ্রার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব বিদ্যমান। এটি স্মৃতিশক্তিকেও প্রভাবিত করতে পারে, পরিষ্কার করে চিন্তা করার ক্ষমতাও লোপ করতে পারে। এমনকি নতুন কিছু শেখার দক্ষতাও হ্রাস করতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org