দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, হরমোনের মাত্রা ওঠানামা এমনকি শরীরে পুষ্টির অভাবসহ নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের প্রভাবের কারণে এই রোগ যে কোনও বয়সেই হতে পারে।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, কোভিড চলে গেলেও পিছনে রেখে গেছে নানা রকম উপসর্গ। মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা কিংবা ‘ব্রেন ফগ’ সে রকম একটি সমস্যা। ‘ব্রেন ফগ’ কথাটি আদতে কোনও বৈজ্ঞানিক শব্দই নয়। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা নিজেদের শারীরিক অবস্থা ব্যাখ্যা করার জন্য এই শব্দটি ব্যবহার করেন। হঠাৎ করেই ভাবনাচিন্তা শ্লথ হয়ে যাওয়া, মনোযোগের চরম অভাব, স্মৃতিলোপের মতো নানা ধরনের সমস্যাকে উপসর্গের অন্তর্গত করা হয়। দেখা যায়, অনেকেই সমস্যায় পড়েন কথা বলার সময়। কথা বলতে গিয়ে বলতে না পারার সমস্যা দেখা দিতে পারে অনেক ক্ষেত্রেই। কেবল কোভিড থেকেই এই সমস্যা শুরু হয়েছে এমনটি কিন্তু নয়, হরমোনের মাত্রা ওঠানামা, মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, শরীরে পুষ্টির অভাবসহ নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের প্রভাবের কারণে এই রোগ যে কোনও বয়সেই হতে পারে।
প্রত্যাহ যদি এমন কিছু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার রাখতে পারেন, তাতে মস্তিষ্ক সচল থাকবে , তাহলে কিছুটা হলেও আপনার স্মৃতিশক্তি ভালো হতে পারে। নিয়মিত কী খাবেন সেটি জেনে নিন।
ব্লুবেরি
রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে হলে ব্লুবেরির মতো ফল খেতে পারেন। এটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। খিদে পেলে উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার পরিবর্তে যদি কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে চান, তাহলে অবশ্যই ব্লুবেরি রাখুন হাতের কাছেই। এতে মস্তিষ্কও সচল থাকবে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ক্ষমতাও বাড়বে।
কুমড়োর বীজ
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে কুমড়োর বীজে। চিন্তাভাবনা ও স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য এই ধরনের পুষ্টিগুণ অত্যন্ত জরুরি। খুব বেশি মানসিক চাপ থাকলেও কুমড়োর বীজ নিয়মিত খেলে চাপমুক্ত থাকতে পারবেন।
আখরোট
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে আখরোট ডায়েটে রাখতে পারেন। হেঁশেলে তাই এই ড্রাই ফ্রুট থাকলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। এটি নিয়মিত খেলে মস্তিষ্ক সচল থাকবে।
ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেট মানসিক চাপ কমানো, অবসাদ দূর করা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত এক টুকরো করে ডার্ক চকোলেট যদি রাতে আপনি খেতে পারেন, তাহলে বেশ উপকার পাবেন।
তুলসী
ব্রেন ফগের সমস্যা এড়াতে তুলসী বেশ কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কর্টিসলের মাত্রা কমিয়ে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। স্নায়ুকে সচল রাখতেও সাহায্য করে তুলসী। তাই নিয়ম করে সকালে কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খেতে হবে অথবা তুলসীর চা খেলেও উপকার পাবেন। তথসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org