দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুমাতে ভালোবাসেন পৃথিবীতে এমন মানুষের সংখ্যায় বেশি। কুম্ভকর্ণের মতো না হলেও ঘুমিয়ে রাত দিন পার করেন অনেকেই।
ঘুম যেমন শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন ঠিক তেমনি মানসিক স্বাস্থ্যের উপকারও করে। তাইতো চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত ৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি।
কিন্তু যদি কেও আপনার এই সাধের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে আসে তাহলে তার নামে কী আপনি মামলা করে দিতে পারবেন? নিশ্চয়ই না, আমাদের দেশে এই আইন না থাকলেও প্রতিবেশী দেশ ভারতে রয়েছে এমনই একটি আইন। সেখানে মানুষের ঘুমের অধিকারের কথাও বলা হয়েছে।
দেশটিতে ঘুম একটি মৌলিক অধিকার। ভারতের সংবিধানের ২১নং অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই শান্তিতে ঘুমানোর অধিকার দেওয়া হয়েছে। অনুচ্ছেদ ২১-এর ‘জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার’-এর অধীনে ঘুমের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত হয়। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২১ অনুসারে ‘আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে তার জীবন কিংবা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হতে বঞ্চিত করা হবে না’।
বিষয়টি উঠে আসে ২০১২ সালে। ওই সময় দিল্লিতে বাবা রামদেবের সমাবেশে ঘুমন্ত জনতার ভিড়ের উপর পুলিশি পদক্ষেপের একটি মামলার শুনানি করার সময় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, পুলিশদের এই পদক্ষেপ মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘনেরই সামিল।
ঘুমকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে উল্লেখ করার সময় সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে যে, একজন মানুষের জন্য তার অস্তিত্ব ও বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যের সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ঘুম কিন্তু অপরিহার্য। তাই ঘুম একটি মৌলিক। মৌলিক প্রয়োজন যা ছাড়া জীবনের অস্তিত্বই যেনো বিপদে পড়বে।
বিচারপতি চৌহান বলেছেন, একজন মানুষের জন্য ঘুম হলো একটি মৌলিক প্রয়োজন- বিলাসিতা নয়। যদি কখনও এই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, মন বিভ্রান্ত হয় ও এটি স্বাস্থ্য চক্রকে ব্যাহত করে। একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক ঘুমে ব্যাঘাত হলে তা থেকে নানা স্বাস্থ্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যেমন- মানসিক ভারসাম্যহীনতা, বদহজম ও কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে থাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org