দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রস্টেট ক্যান্সার থেকে শুরু করে কিডনি পর্যন্ত প্রায় ৯ ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পুরুষদের ভরসা রাখতে হবে মাত্র কয়েকটি শরীরচর্চার উপর। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
নিয়মিতভাবে জগিং করা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটার অভ্যাস থাকলে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে এটি কেবলমাত্র পুরুষদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
গবেষণা জানাচ্ছে যে, ‘কার্ডিয়োরেসপিরেটরি ফিটনেস’-এর সঙ্গে যুক্ত পুরুষদের পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, লিভার, অন্ত্র, মলদ্বার, কিডনি ও ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে খুবই কম। ‘কার্ডিয়োরেসপিরেটরি ফিটনেস’ বলতে কোনও ব্যক্তির শরীরচর্চা করার ক্ষমতাকেই বোঝায়। দীর্ঘ সময় ধরে দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা কিংবা সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো শারীরিক কসরত করতে সক্ষম হলে তবেই এই ধরনের ফিটনেসের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিন’-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি। প্রায় ৩ দশক ধরে গবেষণাটি চালানো হয়। এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন ৮৪ হাজার পুরুষ। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকেই নিয়মিতভাবে এই ধরনের শরীরচর্চা করতেন। গবেষণা শেষে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পর জানা গেছে যে, এতোজনের কারও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কোনও আশঙ্কাই নেই। গবেষণায় উঠে এসেছে যে, আরও বেশ কিছু তথ্য। মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা কমেছে ১৯ শতাংশ, খাদ্যনালির ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা কমেছে ২১ শতাংশ, অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমেছে ১৮ শতাংশ, মলদ্বারের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা কমেছে ৫ শতাংশ, কিডনিতে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কমে ৪২ শতাংশ হয়েছে, অপরদিকে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও কমে ৪২ শতাংশ। আবার অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায় ১২ শতাংশ।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ওই ৩ ধরনের শরীরচর্চা নিয়ম করে করলে কমে যায় প্রস্টেট ক্যান্সারের আশঙ্কা। পুরুষদের মধ্যে এই ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। সেই ঝুঁকি কমানোর অন্যতম একটি পথই হলো এইসব শরীরচর্চা। ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের শরীরচর্চা করলে অনেকটাই কমে ক্যান্সারের ঝুঁকি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org