দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২২ অক্টোবর, ২০০৮ সাল। ওইদিন ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-১ যাত্রা শুরু করে চাঁদের উদ্দেশে। গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট ২০২৩) ভারতের আরেক মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের রহস্য ঘেরা অজানা দক্ষিণ মেরুর মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস গড়লো।
পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে মহাকাশযান পাঠাতে নিজেদের প্রস্তুতির জানিয়ে দিতে এই অভিযান পরিচালনা করে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা-ইসরো।
চাঁদের অনেক অজানা তথ্য বিশ্বের বুকে পাঠিয়ে দেয় চন্দ্রযান-১। ভারতের এই মহাকাশযানই চাঁদে পানির অস্তিত্ব প্রথম খুঁজে পেয়ে ইতিহাস গড়ে। তারপর প্রায় কেটে গেছে ১৫টি বছর।
গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট ২০২৩) ভারতের আরেক মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের রহস্য ঘেরা অজানা দক্ষিণ মেরুর মাটি ছুঁয়ে ইতিহাস গড়লো। ভারতের মাইলফলক চন্দ্রযান-২ অবতরণের প্রচেষ্টার সময় বিধ্বস্ত হওয়ার প্রায় ৪ বছর পর এসেছে।
বুধবার চাঁদের পৃষ্ঠে অভিকর্ষ ও গতির কৌশলী নৃত্যের মাধ্যমে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রমকে অবতরণ করে ইসরোর বিজ্ঞানীরা। বিক্রম তার গন্তব্যস্থলের প্রায় ২৫ কিলোমিটার ওপর থেকেই ভারতের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫.৪৫ মিনিটের দিকে অবতরণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। তারপর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬.০৪ মিনিটে চাঁদের অস্পৃশ্য দক্ষিণ মেরুর মাটি স্পর্শ করার মাধ্যমে ইতিহাস গড়ে ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩।
৫ আগস্ট ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করার পর ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে চাঁদের চারপাশেই ঘুরছিল। পৃথিবী ও এর গন্তব্যের মাঝের প্রায় ৪ লাখ কিলোমিটার দীর্ঘপথ শেষ করে চূড়ান্ত অবতরণের পথেই ছিল বিক্রম।
গত ১৪ জুলাই ভারতের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপিত এই মহাকাশযান তার যাত্রায় দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়। কারণ পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে ব্যবহার করার মাধ্যমে অতিরিক্ত গতি অর্জন করে মহাকাশের শূন্য বুকের মধ্যদিয়ে ছুটছিল চন্দ্রযান-৩।
ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ এর এই অভিযান ছিল অজানা এক চ্যালেঞ্জে ঘেরা। ভারতীয় এই মহাকাশযান চাঁদের এমন এক অঞ্চলে অবতরণ করে, যা এতোদিন ছিল অস্পৃশ্য ও অনাবিষ্কৃত। ভারতই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করে ইতিহাস গড়লো।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে ছুঁয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম, যেখানে দিনের বেলাতে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর ও রাতে মাইনাস ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে। চাঁদের এই প্রান্ত এতোদিন অজানা ছিল। ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করা বিশ্বের প্রথম একটি দেশ। সামগ্রিক অভিযানের দিক থেকে এটি চতুর্থ। ভারতের পূর্বে চাঁদে মহাকাশযান পাঠিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন।
চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তে অসম উচ্চতা, হাজার হাজার গভীর গর্ত এবং মাটি থেকে উঠে আসা শত শত প্রতিবন্ধকতাতে ভূখণ্ডটি আন্তঃগ্রহীয় অবস্থানে চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ ছিল মূলত অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ প্রচেষ্টার মাত্র কয়েকদিন পূর্বে রাশিয়া তার পাঠানো মহাকাশযান লুনা-২৫ হারিয়েছে। ঠিক একই অঞ্চল থেকে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবতরণ করে বিক্রম।
চন্দ্রাভিযানে অর্থ খরচ প্রসঙ্গ
ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩ কে চাঁদে পাঠানোর এই মিশনে খরচ হলো ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রুপি (অর্থাৎ সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। বাংলাদেশি প্রায় ৮২০ কোটি ৮০ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা হবে। অপরদিকে গত রবিবার চাঁদের পৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হওয়া রাশিয়ার মহাকাশযান লুনা-২৫ এর পেছনে ব্যয় হওয়া (২০০ মিলিয়ন ডলার) অর্থের অর্ধেকেরও কম।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ভারতের পূর্ববর্তী চাঁদ এবং মঙ্গল মিশনগুলোও অল্প খরচে পরিচালিত হয়। অর্থ অপচয় রোধে দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রচেষ্টাকে কৃতিত্বও দিয়েছেন ভারতীয়রা।
কেনো ভারতের মঙ্গল মিশনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও কম খরচ হলো তা ব্যাখ্যা করে ব্রিটেনের মহাকাশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক অ্যান্ড্রু কোটস বিবিসিকে বলেছেন যে, ভারত মঙ্গল নভোযানের পেলোড ১৫ কেজিতেই সীমিত রেখেছিল, যা সফল মিশনটিকে তুলনামূলকভাবে অনেক ‘ছোট’ রেখেছে।
ইসরোর জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা বিবিসি তামিলকে বলেছেন যে, ভারতের উৎক্ষেপণ খরচ বর্তমানে আরও কম হতে পারে। কারণ হলো দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কুলাসেকারাপট্টিনামে একটি নতুন মহাকাশবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ধরনের অভিযানের আদর্শ উৎক্ষেপণ অবস্থানের ওই বন্দরটি পরিবহন খরচও কমাবে।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on আগস্ট ২৪, ২০২৩ 5:03 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কয়েক…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক ব্যতিক্রমি নিলাম! ১০০ টন জীবন্ত এক কুমির নিলামের দর…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে শুধু পানিই খেতে হবে? তা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি চীনের হেফেইতে অনুষ্ঠিত জ্যাক গ্লোবাল পার্টনারস কনফারেন্স ২০২৫-এ বাংলাদেশের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লাল গ্রহ মঙ্গল নিয়ে মানুষের মাতামাতির যেনো শেষ নেই। মঙ্গল…