নিয়ম করে খেলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমানো যাবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ালে ডেঙ্গু আটকানো যাবে। সেজন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিশেষ সতর্কও থাকতে হবে। যাতে ডেঙ্গু হলেও দ্রুত সেরে ওঠা যায়। তাহলে কোন খাবারগুলো এই সময় বেশি করে খাবেন?

প্রতি বছরই এই সময়টা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডের বাড়বাড়ন্ত হয়। তবে এ বছর যেনো ডেঙ্গুর প্রকোপ তুলনামূলক বেশি। ছোট থেকে বড় সবাই- ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। যে কারণে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। জ্বর হলেই অবহেলা না করাই ভালো। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে জ্বর, মাথাব্যথাসহ শরীর জুড়ে ব্যথার প্রবণতাও থাকে। ডেঙ্গুও কিন্তু তার ব্যতিক্রম নয়। তবে ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে উপসর্গগুলো অনেক বেশি সক্রিয় হয়। মশাবাহিত রোগ হলেও ডেঙ্গু আটকাতে শরীরে চাই প্রতিরোধ ক্ষমতা। সেজন্য খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। যাতে ডেঙ্গু হলেও দ্রুত সেরে ওঠা যায়। তাহলে এই সময় কোন খাবারগুলো বেশি করে খাবেন? আজ জেনে নিন সেটি।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান

Related Post

প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে হলে ভিটামিস সি’র জুড়ি নেই। সারাবছরই সুস্থ থাকতে ভিটামিন সি খেতে হবে বেশি করে। টকজাতীয় বিভিন্ন ফলে ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। স্ট্রবেরি, কিউয়ি, বেল পেপার, লেবু, আঙুরে এই ভিটামিনটি রয়েছে। এই ভিটামিন রোগের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা জোগানো ও প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করতে পারে।

রসুন খেতে হবে

সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেতে পারেন। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরা এই আনাজের রয়েছে নানা গুণ। খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বাড়বে। ডেঙ্গুর সঙ্গে লড়াই করার পাশাপাশি কিছু ভাইরাস এবং সংক্রমণজনিত অসুখ যেমন- ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি প্রতিরোধেও রসুন খুবই উপকারী।

পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন

শরীর গড়তে হলে প্রোটিন ছাড়া চলবে না। তাই প্রতিদিন খাবার পাতে উদ্ভিজ্জ কিংবা প্রাণীজ যে কোনও রকমের প্রোটিন রাখুন। মাছ, মাংস, ডিম, সয়াবিন, মুসুর ডাল এই সব থেকে পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে।

তেতো জাতীয় খাবার

বর্ষার মৌসুমে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রতিদিন খাবারের পাতে রাখুন তেতো। নিমপাতা ও উচ্ছের মতো খাবারগুলো বেশি করে খান। এইসব অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান শরীরকে চাঙ্গা রাখে। প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে।

লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদে উপকার

রান্নায় লবঙ্গ এবং দারচিনি বেশি বেশি ব্যবহার করুন। এইসব মশলার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট গুণ শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ইচ্ছে করলে এই মশলা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন। আবার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ২৪, ২০২৩ 10:09 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

রাতের খাবার না খেয়ে চিকন থাকার চেষ্টা: শরীরের পক্ষে এটি কী আদৌ ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই চিকন হওয়ার জন্য রাতের খাবার না খেয়ে থাকেন। কিন্তু…

% দিন আগে

শেয়ারট্রিপের মেগা ক্যাম্পেইন, শেয়ারট্রিপ পে’র মাধ্যমে জিতুন আকর্ষণীয় সব পুরস্কার

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘গরমে চরম ব্যাপার’ নামে আকর্ষণীয় সব পুরস্কারে ভরপুর এক মেগা…

% দিন আগে

ইরানি পরিচালকের ৮ বছরের কারাদণ্ড এবং চাবুক মারার নির্দেশ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানের প্রশংসিত চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মদ রাসুলফকে ৮ বছরের কারাদণ্ড এবং…

% দিন আগে

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি বিচারপতির

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে ফৌজদারি ঘুষ মামলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট…

% দিন আগে

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি: উৎসবমুখর পরিবেশে বেসিস নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেসিস প্রদত্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আনন্দমুখর ও অংশগ্রহণমূলকভাবে…

% দিন আগে

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পূর্বেই ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন একটি ঘটেছে সৌদি আরবে। ছেলেকে হত্যার জন্য বিচারপ্রার্থী ছিলেন…

% দিন আগে