শিশুদের হাতে কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর প্লাস্টিকের স্ট্র নাকি স্টিল বা কাগজ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাম্প্রতিক এক গবেষণা উঠে এসেছে, পরিবেশবান্ধব ভেবে আমরা যেসব কাগজের স্ট্রগুলি ব্যবহার করি, সেগুলো প্লাস্টিকের স্ট্রয়ের থেকেও শরীরের জন্য বেশি ক্ষতি করে। কিন্তু কেনো? তাহলে কোনটি স্বাস্থ্যকর?

আমাদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা যতো বৃদ্ধি পাবে, ততোই আমাদের জন্য মঙ্গল। তবে পরিবেশ রক্ষা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে বসলেন কি-না, সেই কথাও কিন্তু ভাবতে হবে।

‘ফুড অ্যাডিটিভস অ্যান্ড কন্টামিন্যান্টস’ জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে যে, পরিবেশবান্ধব ভেবে আমরা যে কাগজের স্ট্রগুলো ব্যবহার করে থাকি, সেগুলো কিন্তু প্লাস্টিকের স্ট্রয়ের থেকেও শরীরের বেশি ক্ষতি করে থাকে।

Related Post

আর কাগজ ও বাঁশের মতো উদ্ভিজ্জ উপকরণ দিয়ে তৈরি স্ট্রগুলো নিঃসন্দেহে প্লাস্টিক হতে তৈরি স্ট্রয়ের চেয়েও অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব বলে প্রচার করা হয়ে থাকে। তবে এইসব স্ট্রগুলোতে পিএফএ (পলি অ্যান্ড পারফ্লুরোঅ্যালকাইল-ভিত্তিক পদার্থ) থাকে, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। প্লাস্টিকের স্ট্রগুলোতে পলিপ্রোপিলিন ও পলিস্টাইরিন থাকে, যা লিভারের সমস্যার মতো আরও অনেক শারীরিক সমস্যার অন্যতম কারণ হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। তাই আমেরিকার বহু জায়গা এবং রেস্তোরাঁগুলোতে প্লাস্টিকের স্ট্র ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, বিকল্প হিসাবে যে কাগজ বা বাঁশের স্ট্রগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে, তা আরও বেশি ক্ষতি করতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য। প্লাস্টিকের স্ট্রগুলোর তুলনায় কাগজ বা বাঁশের স্ট্রয়ে পিএফএ-এর মাত্রা অনেক বেশি থাকে, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায়, ৯০ শতাংশ কাগজের স্ট্র’তে পিএফএ থাকে ৮০ শতাংশ, আর বাঁশের স্ট্র’তে থাকে ৭৫ শতাংশ, প্লাস্টিকের স্ট্র’তে ৪০ শতাংশ। আবার কাচের স্ট্রতেও পিএফএ থাকে। তবে কেবলমাত্র স্টিলের স্ট্র’তেই কোনও রকম পিএফএ থাকে না। পিএফএ তরলের সঙ্গে মিশে যেতে পারে খুব সহজেই। সুতরাং যে পানীয় আপনি বা আপনার শিশু খাচ্ছে, তারসঙ্গে স্ট্র’য়ের মাধ্যমে পিএফএ আপনার শরীরেও খুব সহজেই ঢুকে যাচ্ছে। আপাতভাবে স্ট্রগুলোতে যে মাত্রায় পিএফএ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তা শরীরের উপর যে সাংঘাতিক কোনও রকম প্রভাব ফেলবে, তেমনটি অবশ্য নয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই রাসায়নিকগুলো শরীরে জমে লিভারের ক্ষতিও করতে পারে, আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বাদের শারীরিক ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে এটি।

বর্তমানে অনেক ধরনের স্টিলের স্ট্র পাওয়া যায় বাজারে। প্লাস্টিক, বাঁশ বা কাগজের স্ট্রগুলোর তুলনায় স্টিলের স্ট্র অনেক বেশিই স্বাস্থ্যকর। তাই শিশুদের জন্য এমনকি নিজেদের জন্যও একটি করে স্টিলের স্ট্র কেনা যেতে পারে। একটি কিনলেই আপনি দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন। শুধু আর ৫টি প্রয়োজনীয় জিনিসের মতোই নিজেদের ব্যাগে স্টিলের স্ট্রটিও অবশ্যই মনে করে রাখতে হবে আপনাকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ২৯, ২০২৩ 11:47 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া উচিত?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া উচিত? সেটি হয়তো অনেকের…

% দিন আগে

ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল শেয়ার আরও সহজ হচ্ছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম। ফটো ও…

% দিন আগে

সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফট বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমেরিকান পপশিল্পী গায়িকা টেইলর সুইফটের খ্যাতি রয়েছে সর্বত্র। বহু আগে…

% দিন আগে

২০২৫ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাপদ্ধতি যা হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা হবে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি…

% দিন আগে

চালক বাস না থামানোয় দরজা ধরে এক কিমি ঝুললেন তরুণ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাসের ভিতর থাকা মহিলা কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা বলছেন ঝুলে থাকা…

% দিন আগে

সুইজারল্যান্ডের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৭ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে