দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করতে মানসিক জোর দরকার। তাই মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালে চলবে না। মন আরও শক্ত করতে হবে। কীভাবে মন শক্ত করবেন? আজ জেনে নিন এই বিষয়গুলো।
পুরো বিশ্বজুড়ে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিশেষ করে তিরিশ পেরোনো মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হানা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে। ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিল’-এর এক সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রতি বছর কেবলমাত্র ভারতেই স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন কয়েক লক্ষ মহিলা। স্তন ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যেদিয়ে গেলে তাড়তাড়ি সেরে ওঠা সম্ভব। রোগ নির্ণয় থেকে চিকিৎসা, এই সময় শুধু শরীরই নয়, রোগীর মনের উপরেও বিপুল ঝড় বয়ে যায়। ওই সমীক্ষা আরও জানিয়েছে, ৫২ শতাংশ রোগী কেমোথেরাপি শেষ হয়ে যাওয়ার পরই মানসিক উদ্বেগে ভুগতে শুরু করেন। এ সম্পর্কে কোলকাতার ‘অ্যাডভান্সড মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-এর চিকিৎসক চঞ্চল গোস্বামী বলেছেন, ‘‘আমার এতো বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, স্তন ক্যান্সারে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রায় ৮০ শতাংশ বিষণ্ণতায় ভুগে থাকেন। আর এর অন্যতম কারণই হলো কেমোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। কেমোথেরাপির কারণে চুল পড়ে যাওয়া, খিদে কমে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে শুরু করে। নিজের বাহ্যিক বদল অনেক সময় রোগীর মানসিক যন্ত্রণার কারণও হয়ে ওঠে। তবে এই অবসাদ পুষে রাখা মোটেও ঠিক নয়। অবসাদ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে বিভিন্ন ধরনের থেরাপি ও কাউন্সেলিং।’’
স্তন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করতে হলে মানসিক জোর প্রয়োজন। মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালে মোটেও চলবে না। মন আরও শক্ত করতে হবে। সেটি কীভাবে সম্ভব? চিকিৎসা চলাকালীন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের অবসাদ থেকে দূরে থাকার উপায়ই বা কী?
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা
যে কোনও অসুখের ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনরাই সাধারণত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে থাকেন। তবে ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যন্ত্রণা শুধু শরীরের মধ্যেই আটকে থাকে না, মনেও ছড়িয়ে পড়ে। তাই এই ক্ষেত্রে রোগী নিজে যদি চিকিৎসার গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন, তাহলে অযথায় উদ্বেগে ভুগতে হবে না।
থেরাপির সাহায্য
ক্যান্সার ধরা পড়লে একটা চাপা উদ্বেগ সারাক্ষণই মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে ওই রোগির। কোনও রকম সান্ত্বনা কিংবা পরামর্শ কোনো কিছুই তখন সেই উদ্বেগের অবসান ঘটাতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে পেশাদার কোনও থেরাপিস্টের সাহায্যও নিতে পারেন। মন খুলে কথা বললে খানিকটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।
ধ্যান করা
উদ্বেগ কমাতে ধ্যানও করতে পারেন। সেটি বেশ কার্যকরী হতে পারে। ধ্যান করলে মন তখন শান্ত হয়। চিন্তা, অবসাদ থেকে মুক্তিও পাওয়া যায়। তবে এই ধ্যান নিয়ম করে করতে হবে। মাঝে-মধ্যে ধ্যান করলে অবসাদ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হবে।
নিজের যত্ন নিজে নেওয়া
সাধারণ দৈনন্দিন জীবনে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়াও অবসাদের একটি অন্যতম কারণ। রোগীরা যদি শরীরের যত্ন নিজেরাই নিয়ে থাকেন, তাহলে অবসাদও জন্ম নিতে পারে না। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, শরীরচর্চা করা, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া- রোগীরা যদি নিজেদের তাগিদেই এগুলো করেন, ব্যস্ত সময় পার করেন, তাহলে পৃথকভাবে অবসাদের শিকার হতে হয় না ক্যান্সার রোগিকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org