দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খাওয়ার নানা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবনযাপনের কারণে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে মুঠো মুঠো ওষুধ না খেয়ে হাতের কাছে রাখতেই পারেন ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ মৌরি ও জোয়ান দিয়ে বানানো চা।
এমনিতেই প্রতিদিন বাড়ির সাধারণ খাবারই খান। তবে বাইরে বেরিয়ে আশপাশ থেকে এগরোল, বিরিয়ানি বা কবাবের গন্ধ ভেসে এলে নিজেকে আপনি যেনো সামলে রাখতে পারেন না। খাওয়ার পরই গলা-বুক জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুর শুরু হয়। পেটরোগা বাঙালির এই সর্বজনীন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে নিয়মিত শরীরচর্চা করাটা জরুরি। তবে বললেই কিন্তু শরীরচর্চা করার সময় পাওয়া যায় না। পানি তেষ্টা পেলেও খাওয়া হয় না অনেক সময়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে হজমশক্তির অবনতিও ঘটে। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এমন কিছু চা রয়েছে যে চা নিয়মিত খেলে হজম সংক্রান্ত অনেক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ক্যামোমাইল চা
অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স থেকে শুরু করে হজম সংক্রান্ত পেট ব্যথা- সব কিছুতেই আরাম দেয় ক্যামোমাইল চা। এই ক্যামোমাইল ফুলের নির্যাসে রয়েছে তারপেনয়েড, ফ্ল্যাভোনয়েডের মতোই অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। তা গলা-বুক জ্বালা কিংবা প্রদাহের সমস্যায় আরাম দেয়।
মৌরির চা
এই মৌরিতে রয়েছে আয়রণ, ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ। যা গ্যাস, গলা-বুক জ্বালা, পেটফাঁপার মতো সমস্যা নিরাময় করতে পারে। পেটের পেশির প্রদাহে আরামও দেয় এই মৌরির অ্যান্টিস্প্যাসমোডিক উপাদান।
আদা দেওয়া চা
গ্যাসের সমস্যায় আরাম পেতে অনেকেই মুখে আদার কুচি দেন। অন্ত্রে থাকা খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাব মুক্ত করতেও সাহায্য করে এই আদা। তাছাড়াও মহিলাদের ঋতুস্রাবজনিত সমস্যায় আরাম পাওয়া যায় এই আদা দেওয়া চা খেলে।
পুদিনা পাতার চা
হজমশক্তি উন্নত করতে হলে খাওয়া-দাওয়ার পর পুদিনার চা খেতে হবে। পাকস্থলীর পেশির সঙ্কোচন-প্রসারণে পেটে যে ধরনের অস্বস্তি হয়, তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেটফাঁপার সমস্যা থেকেও আরাম দিতে পারে পুদিনার চা।
জোয়ান চা
খাওয়া-দাওয়ার পর মুখশুদ্ধি হিসাবে জোয়ান খেয়ে থাকেন অনেকেই। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, হজমের সমস্যা হলে জোয়ান খাওয়ার চেয়ে পানিতে ফুটিয়ে যদি তার চা তৈরি করে খাওয়া যায়, তাহলে উপকার পাবেন বেশি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org